আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নারীদের স্থান ঘর, তাদের আগের মতোই আবারও ঘরে ফিরিয়ে নিতে হবে- এই নীতিতে হাঁটতে শুরু করেছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ জনসংখ্যার দেশের খেতাব হারানো চীন। দেশটিতে ১৯৬০-এর দশকের পর এই প্রথম জনসংখ্যা কমে গেছে। যে পরিমাণ জন্ম হচ্ছে, মৃত্যু হচ্ছে তার চেয়ে বেশি, বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। ফলে কাজকর্মে সক্ষম তরুণ জনসংখ্যার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ও ধীর হয়ে পড়া অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে একটিমাত্র পথ দেখছেন চীনের নেতারা। আর তা হলো- নারীদের প্রথাগতভাবে জীবনযাপন, বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া এবং সন্তান জন্মদান বাড়ানো। তবে এমন সিদ্ধান্তে চীনের নারীরা শঙ্কিত। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের
গত সোমবার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নারী সম্মেলনের সমাপনীতে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ অন্য নেতারা নারীদের এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। এই প্রথম ওই সম্মেলনে নারীদের কর্মস্থলে অর্থাৎ চাকরি-বাকরিসহ নানা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। উল্টো জোর দেওয়া হয়েছে, তরুণ প্রজন্মকে বিয়েতে উৎসাহিত করা, নারীদের বাড়িতে অবস্থান ও সন্তান জন্মদানে।
শীর্ষ ওই রাজনৈতিক সমাবেশ নারীদের জন্য হলেও সেখানে পুরুষের আধিক্য ছিল। বক্তব্যে জিনপিং বলেন, ‘আমাদের সক্রিয়ভাবে একটি নতুন ধরনের বিবাহ এবং সন্তান জন্মদানের সংস্কৃতি লালন করা উচিত। প্রেম এবং বিয়ে, সন্তান জন্মদানের উর্বরতা এবং পরিবার’ এসব বিষয় সম্পর্কে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নিতে দলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভূমিকা রাখতে হবে।
দেশটির শাসনে থাকা কমিউনিস্ট পার্টির দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো দলীয় কার্যনির্বাহী নীতিনির্ধারণী সংস্থায় একজনও নারী নেই। দলে চরমভাবে লিঙ্গ সমতাকে হ্রাস করা হয়েছে। নেতারা তাদের বক্তব্যে জোর দেন, বিয়ে এবং সন্তান ধারণ করুন।
আগে চীনের কর্মকর্তারা ঘরের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করতেন। কিন্তু এই বছরের ভাষণে জিনপিং কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের বিষয়ে একটি কথাও বলেননি। এতেই প্রমাণ হয়, নারীদের আরও সন্তানের প্রয়োজন। কারণ, দেশটিতে জনসংখ্যা কমে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, জনসংখ্যা বৃদ্ধি আগের ধারায় ফিরিয়ে আনতে সরকার চরম গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। একের পর এক উদ্যোগ নিচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে নগদ প্রণোদনা, বেশিসংখ্যক সন্তান জন্মকে উৎসাহিত করতে ট্যাক্স সুবিধা।
চীনের ক্ষমতাসীন দল নারীদের ঘরে ফিরিয়ে নেওয়ার পথ বেছে নিয়েছে। তাদের তরুণদের প্রতিপালন করা এবং বয়স্কদের যত্ন নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে। জিনপিংয়ের ভাষায়, এই কাজ চীনের আধুনিকীকরণের পথের জন্য অপরিহার্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।