বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : দুধ সমুদ্র! ‘দুধের নদী’ বলে একটি জিনিসের উল্লেখ ভারতীয় পুরাণে পাওয়া যায়। যদিও অধিকাংশের মতে তা রূপকার্থেই ধরা হয়। কিন্তু এ তো একেবারে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট! চোখের সামনে উথাল-পাতাল দুধের সমুদ্র! তা-ও আবার হয় নাকি? এ কি স্বপ্ন? এ কি মায়া?
যা জানা যাচ্ছে, তাতে এ স্বপ্নও নয়, মায়াও নয়। এ খোদ বাস্তব। ‘গণেশ’ নামক এক ইয়াচের নাবিক পূর্ব ভারত মহাসাগর ধরে যাচ্ছিলেন একদা। হঠাৎই তাঁর চোখ আটকে গেল! সামনে ওটা কী? বিশ্বাস-অবিশ্বাসের আগেই তিনি চট করে ছবি তুলে ফেললেন সেই দৃশ্যের। কী দৃশ্য তাঁর সামনে?
ঘটনার ৩ বছর পরে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সেই নাবিকের তোলা ওই ছবি আসলে মিল্কি সি’র ছবি– দুধেল সমুদ্র! কী ছিল সেই ছবিতে? মহাসমুদ্রের উপরের স্তর চকচক করছে। চোখে যেন ধপধপে সাদা ঠেকছে। মহাসমুদ্রের উপরিস্তর কি এরকম চকচক করে? এ কি সত্য, না মিথ?
সত্য বা মিথ যাই হোক, ঘটনা কিন্তু নতুন নয়। মানে, ৩ বছরের আবিষ্কার নয়। স্বয়ং চার্লস ডারউইন ১৮৩০ সালে দুধসমুদ্রের দৃশ্য দেখেছিলেন। তাঁর সেই পাঁচ বছর-ব্যাপী সমুদ্রযাত্রার সময়কালেই এই দুধের মহাসাগর দেখেছিলেন তিনি। তিনি তাঁর লেখাপত্রের মধ্যে উল্লেখও করেছিলেন যে, গোটা যাত্রাপথে এটাই তাঁর দেখা সব চেয়ে সুন্দর দৃশ্য।
তখন থেকেই মানুষ কৌতূহলী। এটা কী জন্য ঘটে তা জানতে আগ্রহী। হালে এ নিয়ে প্রচুর গবেষণাও হয়েছে। ওই অঞ্চলের জল সংগ্রহ করা হয়েছে। বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এবং জানা গিয়েছে, এক ধরনের ‘বায়োলুমিনিসেন্ট ব্যাকটেরিয়া’র জন্য এটা ঘটে। সমুদ্রের উপরিস্তরে এক সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ওই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সমাবেশ ঘটলে তা দুধের মতো সাদা দেখতে লাগে। এখানে ‘অ্যালিভিব্রিয়ো হার্ভেই’ নামের ‘বায়োলুমিনিসেন্ট ব্যাকটেরিয়া’র উপস্তিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এই ব্যাকটেরিয়া সমুদ্রজলের উপরিস্তরে জমা হলে একটা নীল আভা বিচ্ছুরিত হয়। সেটাই আলোর কারণে অনেক সময়ে সাদা প্রতিভাত হয়। সমুদ্রে বিভিন্ন রকম মাছ এবং জেলিফিশের মতো ‘বায়োলুমিনিসেন্ট অর্গানিজম’ও আছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।