জুমবাংলা ডেস্ক : বরগুনা বামনায় জাল সনদে ১০ বছর ধরে পরিবার পরিকল্পনা অফিসে ‘পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা’ পদে চাকরি করছেন শিপ্রা সরকার নামে এক নারী। সম্প্রতি এ ঘটনায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ করেছেন সনদের প্রকৃত মালিক স্কুলশিক্ষিকা সমাপ্তি বিশ্বাস।
ভুক্তভোগী জানান, তার এসএসসি সনদের সব তথ্য সঠিক রেখে শুধুমাত্র নাম ও পিতার নাম পরিবর্তন করে জাল সনদ বানিয়ে ১০ বছর ধরে সরকারি চাকরি করছেন শিপ্রা সরকার নামে ঐ নারী।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার গৌরাঙ্গলাল বিশ্বাসের মেয়ে সমাপ্তি বিশ্বাস ২০১৯ সালে এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে বাশবুনিয়া রাশিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর রাতে ঐ শিক্ষিকাকে নাজিরপুর থানার ডিএসবি থেকে ফোন করে জানায় তার এসএসসি পরীক্ষা সনদের সব তথ্য সঠিক রেখে শুধু নাম এবং পিতার নাম পরিবর্তন করে বরগুনায় শিপ্রা সরকার নামে একজন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরে ‘পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা’ পদে চাকরি করছেন।
সমাপ্তি বিশ্বাস জানান, তার এসএসসি পরীক্ষার সনদে রোল নম্বর ১১৩৬৭৮ রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৪৮৯৬৩ শিক্ষাবর্ষ ১৯৯৯-২০০০, পাশের সন ২০০১ এবং শিক্ষা বোর্ড বরিশাল। জাল এসএসসি পরীক্ষার সনদে দেখা গেছে সমাপ্তি বিশ্বাসের নামের স্থানে হুবহু ফন্টে টাইপ করে লেখা রয়েছে শিপ্রা সরকার এবং পিতার নাম নকুল চন্দ্র সরকার। বাকি সব তথ্য রয়েছে প্রকৃত সনদ মালিক সমাপ্তি বিশ্বাসের।
তবে চাকরি প্রাপ্তির সময় ঐ জাল সনদে বরগুনা সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সমরজিৎ হাওলাদারের সত্যায়িত করা স্বাক্ষর রয়েছে, যেখানে তারিখ লেখা ২৫ অক্টোবর ২০১৪।
এ বিষয়ে অধ্যাপক সমরজিৎ হাওলাদার জানান, তিনি ২০০৯ সালে বরগুনা থেকে বদলি হয়েছেন। ২০১৪ সালে কীভাবে ঐ সনদে সত্যায়িত করবেন। এটা জাল করে তৈরি করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে রেজাল্ট দেখতে গিয়ে বেরিয়ে আসে শিপ্রা সরকারের জালিয়াতি বিষয়টি। সেখানে জাল করা শিপ্রা সরকারের সনদের রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে সার্চ করলে দেখা যায় সমাপ্তি বিশ্বাসের নাম।
বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব পান বরগুনা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাহমুদুল হক আজাদ। অভিযোগ আছে, তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া ঐ কর্মকর্তা দায়সারা তদন্ত শেষ করে গত ২ জুন প্রতিবেদন ডিজি বরাবর পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপ-পরিচালক মাহমুদুল হক আজাদ বলেন, তদন্তের দিন অভিযোগকারীকে বরগুনায় আসতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি উপস্থিত হয়নি। পরে ডিএসবি রিপোর্ট অনুযায়ী আমি তদন্ত প্রতিবেদন মহাপরিচালকের দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছি।
বরিশাল বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, এত বড় জালিয়াতির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।