জুমবাংলা ডেস্ক : মধ্য ইউরোপের স্থলবেষ্টিত দেশ হাঙ্গেরি। দেশটির সীমান্তবর্তী রাষ্ট্রগুলো হলো ইউক্রেন, রোমানিয়া, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভানিয়া, অস্ট্রিয়া ও স্লোভাকিয়া।
নবম শতকে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী ‘মজর’ জাতিগোষ্ঠী অঞ্চলটিতে আসে। মজর জাতিগোষ্ঠীর বংশধর হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয় হাঙ্গেরীয়রা।
কয়েক শতাব্দী ধরে ক্ষমতাধর রাজ্য হিসেবে বিরাজ করে হাঙ্গেরি। এরপর ষোড়শ শতাব্দীতে প্রথমে অটোমান ও পরে হাবসবার্গ সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায় দেশটি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আবার স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে হাঙ্গেরি।
কয়েক দশক সামাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় থাকার পর উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হাঙ্গেরি।
ইউরোপের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এই দেশটিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিংবা স্টুডেন্ট ভিসা অথবা ভিসিট ভিসায় দেশটিতে যেতে আগ্রহী লাখো মানুষ।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে কাজের উদ্দেশ্যে প্রচুর বাংলাদেশী অবস্থান করছেন। এর একটি বড় কারণ হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিচ্ছে। তাই বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দেশটিতে প্রচুর মানুষ যাচ্ছে।
এর আগে বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করতে হলে ইউরোপের অন্য রাষ্ট্রে প্রবেশ করে তারপর হাঙ্গেরিতে যেতে হতো। কিন্তু বর্তমানে সময় বদলেছে এখন হাঙ্গেরিতে প্রচুর পরিমাণ কাজ পাওয়া যাচ্ছে। একারণে আপনি বাংলাদেশ থেকেই কাজের ভিসা নিয়ে হাঙ্গেরিতে যেতে পারবেন।
হাঙ্গেরি যেতে কত টাকা লাগে
হাঙ্গেরিতে ওয়ার্কিং পারমিট ও রেসিডেন্স পারমিট, পরিবহন ও অন্যান্য খরচসহ সর্বমোট ২৩০০ ইউরো খরচ হতে পারে। তবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে ৪-৮ লক্ষ টাকা প্রয়োজন।
২-৩ লক্ষ টাকা দিয়ে হাঙ্গেরিতে ভিজিট ভিসায় যাওয়া যায়। এছাড়াও সরকারিভাবে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে তা বিভিন্ন এয়ারলাইন্স থেকে জানা যায়।
আপনি যদি হাঙ্গেরিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বাংলাদেশের সরকারি বা বেসরকারি এজেন্সিতে যোগাযোগ করতে হবে। তবে সব সময় চেষ্টা করা উচিত সরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করার।
হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
হাঙ্গেরিতে কাজ করার জন্য বাংলাদেশী নাগরিকদের সাধারণত ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশীদের জন্য বর্তমানে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়াটা একটু চ্যালেঞ্জিং হবে কারণ এর আগে বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করে ইউরোপের অন্য দেশে চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাই বাংলাদেশীদের জন্য হাঙ্গেরির ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া একটু চ্যালেঞ্জিং।
আপনি যদি হাঙ্গেরিতে দীর্ঘমেয়াদী বসবাস করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করতে হবে। হাঙ্গেরির ওয়ার্ক পারমিট পেতে হলে আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড পূরণ করতে হবে এবং উপযুক্ত ভিসার জন্য আবেদন।
হাঙ্গেরিতে বেতন কত
আগের তুলনায় হাঙ্গেরিতে কাজের বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে এখন বর্তমানে একজন শ্রমিকের মোটামুটি বেতন ৬৫ হাজার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। হাঙ্গেরিতে যাদের ফ্যাক্টরির ভিসা হয় তাদের বেতন আগের তুলনা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ৭০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত ফ্যাক্টরিতে ইনকাম করা যায়। যে সকল ব্যক্তি কাজে পারদর্শী তাদের বেতন এক লাখ টাকার উপর পর্যন্ত হয়ে থাকে।
হাঙ্গেরি কাজের ভিসা আবেদন এর কাগজপত্র
আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করবেন তাদের নিম্নলিখিত কিছু কাগজপত্র অনলাইনে এবং হাঙ্গেরি এম্বাসিতে জমা দিতে হবে। তাই কোন সকল কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে নিচের লিস্ট থেকে আপনারা দেখে নিতে পারেন।
অনলাইনে হাঙ্গেরির ভিসা আবেদনপত্রের ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে।
আপনার বৈধ অরজিনাল পাসপোর্ট এর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
দুই কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং ছবিগুলো অবশ্যই সত্যায়িত থাকতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল অরজিনাল সার্টিফিকেট।
হাঙ্গেরি অবস্থিত যে কোন একটি কোম্পানির সাথে চুক্তির ডকুমেন্টস।
অবশ্যই আপনাকে হাঙ্গেরিতে বৈধ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
বর্তমান সময়ে অনেকেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার নামে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন একারণে বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে হাঙ্গেরি যেতে চাইলে অবশ্যই সরকারি বা বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে হাঙ্গেরি যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও এজেন্সি ছাড়া কখনোই পাসপোর্ট অন্য কারো কাছে জমা না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।