আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে অধিকার দুর্বল হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের মতে জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক ভাবে পিছিয়ে পড়ার কারণে গোটা বিশ্বজুড়ে নারী অধিকার গত বছর এক চতুর্থাংশ হ্রাস পেয়েছে ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে,“গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি দূর্বল হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে, লিঙ্গ সমতার উপর এর প্রতিকুল প্রভাব পড়েছে” এতে আরও বলা হয়, “অধিকার বিরোধীরা নারী অধিকার বিষয়ে দীর্ঘদিনের ঐকমত্যকে সক্রিয়ভাবে খর্ব করছেন”।
প্রতিবেদনে ১৯৯৫ সালের নারী বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আরও বলা হয়,“প্রায় এক-চতুর্থাংশ দেশ জানিয়েছে যে লিঙ্গ সমতা বিরোধীতা বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশান’এর বাস্তবায়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
জাতিসংঘ বলছে এই সম্মেলনের পর গত ৩০ বছরে মিশ্র অগ্রগতি হয়েছে।
১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব দ্বিগুণ হয়েছে কিন্তু পুরুষরা এখনও সংসদ সদস্যপদের তিন-চতুর্থাংশ অধিকার করে রেখেছে।
২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধা সম্বলিত নারীদের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়েছে যদিও এখনও ২০০ কোটি নারী ও মেয়েরা এ জাতীয় সুরক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছেন।
লিঙ্গ ভিত্তিক বৈষম্য “কয়েক দশক ধরে থমকে আছে”। ২৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী নারীদের ৬৩ শতাংশ বেতনভিত্তিক চাকরিতে রয়েছেন । সেই তূলনায় একই বয়সের ৯২% পুরুষ এ ধরণের চাকরিতে রয়েছেন।
এই প্রতিবেদনে লিঙ্গ সমতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে কভিড-১৯ মহামারি, বৈশ্বিক সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ.আই)’এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউএন উইমেন প্রতিবেদনে দেওয়া উপাত্তে দেখা যাচ্ছে যে সংঘর্ষ সম্পর্কিত যৌন সহিংসতা গত ১০ বছরে ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর ৯৫% শিকার হচ্ছে শিশু কিংবা তরুণীরা।
২০২৩ সালে ৬১ কোটি ২০ লক্ষ নারী সশস্ত্র সংঘাতের ৫০ কিলোমিটার ভেতরে বাস করতেন যা ২০১০ সালের তূলনায় ৫৪% বেশি।
আর ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার ১২ টি দেশে, অন্তত ৫৩% নারী অনলাইনে এক বা একাধিক বার লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়,“ বিশ্বব্যাপী নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ভয়াবহ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের জীবনে তিনজন নারীর মধ্যে প্রায় একজন ঘনিষ্ঠ পার্টনারের দ্বারা শারিরীক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন অথবা ঘনিষ্ঠজন নয় বা পার্টনারও নয় এমন লোকদের দ্বারা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
লিঙ্গ বৈষম্যের মোকাবিলা করার জন্য এই প্রতিবেদনে একাধিক উপায়ের কথা বলা হয়েছে, যেমন এ.আই’র মত নতুন প্রযুক্তিতে নারীদের সমান প্রবেশাধিকার, জলবায়ু বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ, দারিদ্র মোকাবিলা করতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, জন কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা এবং লিঙ্গ সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।