কিছুদিন আগে একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী নেহা ধুপিয়া বলেছিলেন, “যদি কোনও অভিনেত্রী তাঁর সন্তানকে স্তন্যপান না করাতে চান বা পারছেন না, তাহলে তাঁকে খারাপ মা বলা উচিত নয়।” কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি এখনো তেমন সহজ নয়। আজও অনেকেই মনে করেন, সন্তানকে স্তন্যপান না করানো মানেই এক ধরনের ‘অপরাধ’। বিশেষ করে অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে এই নিয়ে কড়া সমালোচনা প্রায়শই শোনা যায়।
প্রতি বছর ১ থেকে ৭ আগস্ট পালিত হয় ‘বিশ্ব স্তন্যপান সপ্তাহ’। আর এই সময়ে টলিপাড়ার বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী নতুন করে মাতৃত্বের স্বাদ পেয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন অনিন্দিতা রায়চৌধুরী, রূপসা চট্টোপাধ্যায়, মানসী সেনগুপ্ত। জুলাইয়ের শেষের দিকে মা হয়েছেন অহনা দত্তও। প্রশ্ন উঠছে— এই নতুন মায়েরা কি সন্তানকে স্তন্যপান করানো নিয়ে চাপে আছেন?
অনিন্দিতা এবং রূপসা বিষয়টিকে একদমই চাপ হিসেবে দেখছেন না। অনিন্দিতা তাঁর মেয়ের জন্মের তিন মাস পর থেকেই আবার পুরোদমে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। অন্যদিকে, রূপসা চেষ্টা করছেন যতটা সম্ভব বাড়ি থেকেই কাজ করতে, তবে এরই মধ্যে তিনি শিশুকে নিয়ে স্টুডিয়োতেও শুটিং করেছেন।
রূপসা বলেন, “আমি ভেবেছিলাম, মা হওয়ার পর হয়তো ওজন বেড়ে যাবে। কিন্তু উল্টোটা হয়েছে— ওজন কমেছে। ক্যামেরায় নিজেকে আরও ভালো লাগছে। আর কখনও মনে হয়নি স্তন্যপান করাব না, শরীরের গড়ন বদলে যাবে। বরং পড়াশোনা করে জেনেছি, যত বেশি ব্রেস্টফিড করাব, শরীর তত সুস্থ থাকবে। তাই আমার ওজনও কমেছে।”
অনিন্দিতা তো এমনকি শুটিং সেট থেকেই বুকের দুধ পাম্প করে মেয়ের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, “সন্তানকে স্তন্যপান করানো এক অনন্য অভিজ্ঞতা। প্রথম তিন মাস শিশুরা মায়ের দুধ থেকেই প্রধান পুষ্টি পায়। আমি কখনও ভাবিইনি স্তন্যপান করাব না। আমি সৌন্দর্য নিয়ে অতটা ভাবি না— শুধু চাই সুস্থ থাকতে। সন্তান আসার পর মনে হয়েছে, যা যা করণীয়, সবই করব।”
অন্যদিকে, অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্ত মা হওয়ার পরই দ্রুত কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাই প্রথম এক মাস স্তন্যপান করানোর পরে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে বুকের দুধ পাম্প করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন এবং পরবর্তীতে ছেলেকে ‘ফর্মুলা মিল্ক’ খাওয়ানো শুরু করেন। তিনি বলেন, “স্তন্যপান শিশু ও মায়ের মধ্যে বন্ধন আরও দৃঢ় করে। অনেক সময় শিশুরা এই কারণেই মায়ের থেকে আলাদা হতে চায় না। কিন্তু আমার দ্রুত কাজে ফিরতে হয়েছিল। যদি ওকে স্তন্যপানের অভ্যাস করাতাম, তাহলে সে অন্য কারও সঙ্গে থাকতে চাইত না। তাই এক মাসের মাথায় এই অভ্যাস বন্ধ করি।”
তবে একটি ব্যাপারে সবাই একমত— কেবল শরীরের গড়ন বা সৌন্দর্য রক্ষার জন্য স্তন্যপান বন্ধ করে দেওয়া কোনো যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত নয়। ছোট পর্দার নতুন মায়েরা বরং মাতৃত্বকে উপভোগ করছেন তাদের নিজস্ব উপায়ে, যথাযথ যত্ন ও দায়িত্ববোধ নিয়ে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।