সংকটময় পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি

World Economy Falldown

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের কারনে এমনিতেই অস্থিতিশীল অবস্থায় নানারকম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে বিশ্ব। এরইমধ্যে বৈশ্বিক অর্থনীতি নতুন করে সংকটময় পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

World Economy Falldown

রেকর্ড ঋণ গ্রহণ, উচ্চ সুদহার, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য ও পেনশন খাতে ব্যয় এবং ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। সরকারি পর্যায়েও ঋণ নেয়ার হার বেড়েছে। দীর্ঘমেয়াদে বন্ড রাখার জন্য বিনিয়োগকারীরা অধিক ক্ষতিপূরণ চাইছেন। অন্যদিকে অর্থায়নের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নীতিনির্ধারকরা। ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স বলছে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে ১০ ট্রিলিয়ন থেকে রেকর্ড ৩০৭ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ঋণ নেয়ার দিক থেকে শীর্ষে ছিল অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলো।

ব্রিংকম্যানশিপ পদ্ধতির মাধ্যমে ঋণ নেয়ার বিষয়টিকে ডিফল্টে নিয়ে আসা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ব্রিংকম্যানশিপ হচ্ছে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতিকে এর সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। অন্যদিকে ডিফল্ট হচ্ছে, কোনো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করতে না পারা। এছাড়া ঋণ গ্রহণের বিষয়ে সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে ইতালি ও যুক্তরাজ্য। ২০ জনের বেশি সাবেক নীতিনির্ধারক ও অর্থনীতিবিদ এ তথ্য উপস্থাপন করেছেন।

উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো ঋণ পরিশোধে সমস্যার সম্মুখীন হবে না বলে মনে করেছেন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু কার্যকর রাজস্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, করহার ও প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে পরিচালনাযোগ্য রাখতে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। যুক্তরাজ্যের ২০২২ সালের মিনি বাজেট দেখিয়েছে, উচ্চ সুদহার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা না থাকলে ভুল পদক্ষেপের ঝুঁকি বাড়ে। আর ভুল পদক্ষেপ সামগ্রিক বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তোলে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলছে, যেসব দেশ বড় অংকের ঋণ নিয়েছে তাদের সংকটে পড়ার আশঙ্কা বেশি। ইতালির ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ইউরো ঋণের বিষয়টি ইউরোপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কোপ রেটিং বলছে, ইতালি হয়তো গুরুত্বপূর্ণ ইসিবি বন্ড ক্রয় প্রকল্পে যুক্ত হতে পারবে না। প্রবৃদ্ধির হার নিম্নমুখী থাকায় ইতালির ঋণ গ্রহণ ঊর্ধ্বমুখী। এটি ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে বড় ঝুঁকি। ঋণের প্রভাব কমাতে সরকারিভাবে গৃহীত কঠোর পদক্ষেপে দেশটিতে সাধারণ পর্যায়ের বিনিয়োগও কমবে।

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ পিটার প্রায়েট বলেন, ‌ঋণ গ্রহণের হার এখন পর্যন্ত টেকসই পর্যায়ে থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে ব্যয়ের ক্ষেত্রে এটি উদ্বেগ তৈরি করছে। আপনি চাইলে উদাহরণ হিসেবে বিভিন্ন দেশকে নিতে পারেন। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে সামনে আমাদেরও অর্থায়নের সংকটে পড়তে হবে।

পিজিআইএমের অর্থনীতিবিদ দালিপ সিং বলেন, ইউরোপের প্রবৃদ্ধি অর্জনে যদি এখনই পদক্ষেপ নেয়া না হয় তাহলে ঋণ গ্রহণের চিত্র আরো খারাপ হবে।

ইতিহাস গড়লেন আল্লু অর্জুন

পয়েন্ট৭২ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের অর্থনীতিবিদ ও কৌশলবিদ সোফিয়া ড্রসোস জানান, বর্তমানে বড় ধরনের অর্থায়ন প্রয়োজন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা দামের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। বন্ড জায়ান্ট পিআইএমসিওর প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা ড্যানিয়েল ইভাসিন বলেন, ঘাটতি ও ঋণ গ্রহণের হার আমাদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে নিয়ে যায়। কোনো ব্যয় পরিকল্পনা যদি বিশ্বাসযোগ্যতা হারায় তখন সেটি বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে। সূত্র: রয়টার্স