স্পোর্টস ডেস্ক : সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কের দর্শকরাই হয়ে উঠলেন ফিল্ডার। একের পর এক ছক্কা গ্যালারিতে আছড়ে পড়লে ফিল্ডার না হয়ে উপায়ই বা কি!
দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির এই ছক্কাবৃষ্টিতে হয়েছে রানবন্যা। যেখানে ক্যারিবীয়দের ২৫৮ রান ৭ বল বাকি থাকতেই টপকে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে এটি রান তাড়ায় বিশ্ব রেকর্ড।
শুধু রান তাড়ার দিক থেকেই নয়, দুই দল মিলিয়ে ম্যাচে ৫১৭ রান আর ৩৫ ছক্কাও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নতুন বিশ্ব রেকর্ড।
রেকর্ড গড়া জয়ের সুবাদে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সফল তাড়ায় সর্বোচ্চ রান ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ২০১৮ সালে অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের ২৪৩ টপকে ২৪৫ রান তুলেছিল ডেভিড ওয়ার্নারের দল। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ছিল রেকর্ড ভাঙার চ্যালেঞ্জ।
সেই লক্ষ্যে রান তাড়ার প্রথম বল থেকেই মেরে খেলার তালে ছিলেন কুইন্টন ডি কক ও রিজা হেনড্রিকস। আকিল হোসেন আর জেসন হোল্ডারের করা প্রথম ১৮ বলের ১২টিই পরিণত হয় বাউন্ডারিতে। ৫ ওভারেই দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোরবোর্ডে জমা হয়ে যায় ৯২ রান। মাত্র ১৫ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন টি কত। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তৃতীয় আর দক্ষিণ আফ্রিকার দ্রুততম ফিফটি।
পাওয়ার প্লের মধ্যে ১০২ রান তুলে ফেলা প্রোটিয়াদের রান ১০ ওভারে শেষে দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ১৪৯-এ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচের প্রথম দশ ওভারে এটিই সর্বোচ্চ রান।
ঝড়ের বেগে শুরুর পর ইনিংসের মাঝপথে কিছুটা গতি কমিয়ে ফেলেন ডি কক। যে কারণে দ্রুততম সেঞ্চুরির সম্ভাবনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৪৩তম বলে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি, দক্ষিণ আফ্রিকানদের মধ্যে দ্বিতীয় (৩৫ বলে সেঞ্চুরি নিয়ে শীর্ষে ডেভিড মিলার)।
ডি কক-হেনড্রিকসে দিশেহারা ক্যারিবীয় বোলাররা প্রথম উইকেটের দেখা পান ১১তম ওভারে। র্যামন রেইফারের বলে নিকোলাস পুরানের ক্যাচে থামে ডি ককের ৮ ছয় ৯ চারে গড়া ৪৪ বলে ১০০ রানের ইনিংস। পরের ওভারে রাইলি রুশোকে তুলে নেন ওডোইন স্মিথ। তার আগে তিন বল খেলে দুই ছয় ১ চারে ১৬ রান তুলে ফেলেন রুশো।
ওপেনিংয়ে ডি ককের সঙ্গী হেনড্রিকস থামেন দলকে ১৯৩ রানে রেখে। ২ ছয় আর ১১ চারে ২৮ বলে ৬৮ করে যান তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে শেষের পথটুকু পার করিয়ে নেন অধিনায়ক এইডেন মার্করাম (২১ বলে ৩৮*) ও হেনরিক ক্লাসেন (৭ বলে ১৬*)। ৭ বল বাকি থাকতেই চলে আসে জয়ের রান।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসেও ছিল ছক্কাবৃষ্টি আর রানবন্যা। যাতে মূল অবদান জনসন চার্লসের। ইনিংসের তৃতীয় বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম উইকেট হারানোর পর উইকেটে যান চার্লস। ১৪তম ওভারের শেষ বলে ফেরার আগে ৪৬ বলে খেলেন ১১৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস। ১০টি চার ও ১১টি ছক্কা মারা চার্লস তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ১৩তম ওভারে সিসান্দা মাগালাকে একস্ট্রা কাভার দিয়ে বিশাল এক ছক্কা মেরে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে ছয়ের ঝড় তোলেন কাইল মেয়ার্স (২৭ বলে ৫১) আর রোমারিও শেফার্ডও (১৮ বলে ৪১*)। দুজনই ৪টি করে ছয় হাঁকান। ৫ উইকেটে ২৫৮ রান তোলার পথে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে মোট ছক্কা হয়েছে ২২টি। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরাও সমান সংখ্যক ছয় মেরেছিলেন।
তবে ছক্কার রেকর্ড গড়লেও দিন শেষে হেরেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ক্যারিবীয়দের। রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা যে গড়েছে বিশ্ব রেকর্ড!
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি মঙ্গলবার, জোহানেসবার্গে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।