স্পোর্টস ডেস্ক : এতদিন বিশ্বকাপ ছাড়া সব অর্জনই ছিল লিওনেল মেসির। আরাধ্য বিশ্বকাপের ছোঁয়াও এবার পেয়ে গেলেন। তবে এই অর্জন সহজে আসেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক কঠিন সেই যাত্রার কথাই তুলে ধরেছেন।
৩৬ বছরের আক্ষেপের অবসান ঘটিয়েছে লিওনেল মেসি। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট পড়ে আর্জেন্টিনা। এর আগে তারা সবশেষ শিরোপার দেখা পেয়েছিল ১৯৮৬ সালে।
বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনার স্থানীয় সময় সোমবার রাতে দেশে ফিরে মেসিরা। দেশের মানুষ তাদের রাজকীয় সংবর্ধনা দেয়। ট্রফি জয় থেকে দেশে ফেরার জন্য বিমানে চেপে বসা, কাপ নিয়েই ঘুমিয়ে যাওয়া- এমন সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছিলেন মেসি।
পরে একটি ভিডিও পোস্ট করে আবেগঘন বার্তাও দিয়েছেন। যেখানে নিজের শৈশব, বিশ্বকাপ নিয়ে স্বপ্ন, ২০১৪ আসরের দুঃখগাথা, ডিয়েগো ম্যারাডোনা, কোচিং স্টাফসহ অনেক বিষয় উঠে এসেছে।
মেসি লিখেছেন, ‘গ্র্যান্ডোলি থেকে কাতার। প্রায় ৩০ বছর। বিশ্বকাপ জিততে তিন দশকের কাছাকাছি সময় লাগল। ফুটবল আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে। কিছু দুঃখও দিয়েছে। আমি সব সময় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। কখনো চেষ্টা বন্ধ করিনি। বিশ্বাস ছিল কখনো হাল ছাড়ব না।’
যোগ্য দল হিসেবেই তারা বিশ্বকাপ জিতেছেন উল্লেখ করে মেসি লিখেন, ‘আমরা বিশ্বকাপ পেয়েছি, কারণ বাকি সবার থেকে আমরা ভালো খেলেছি। আগের বিশ্বকাপগুলোয় আমরা এভাবে খেলতে পারিনি। যেমন ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেও জিততে পারিনি আমরা। এবার সবাই অনেক পরিশ্রম করেছিল। সবাই আন্তরিকভাবে জিততে চেয়েছিল। এই বিশ্বকাপটা ছেলেদের প্রাপ্য। এ ভাবেই প্রতিযোগিতা শেষ করতে চেয়েছিলাম আমরা।’
এরপর তিনি প্রয়াত কিংবদন্তি ম্যারাডোনাকে স্মরণ করেন, ‘এই বিশ্বকাপটা ডিয়েগোর (ম্যারাডোনা) জন্যও। তিনি আমাদের স্বর্গ থেকে উৎসাহিত করেছিলেন।’
এই বিশ্বকাপ সবার উল্লেখ করে মেসি লিখেন, ‘এই বিশ্বকাপ তাদের সকলের জন্য যারা ফলাফলের দিকে না তাকিয়ে সবসময় জাতীয় দলকে উৎসাহিত করেছেন। তাদের জন্য যারা বেঞ্চে বসে থেকেছে খেলার সুযোগ না পেয়ে। ২০১৪ সালে যারা কাছে পৌঁছেও জিততে পারেনি, এই বিশ্বকাপ তাদেরও।’
‘সবার একটাই আকাঙ্খা ছিল, সবকিছু আমাদের ইচ্ছা মতো হয় না। আমাদের দলটা সত্যিই সুন্দর। কোচিং স্টাফ, টেকনিক্যাল স্টাফ- তাদের হয়তো সবাই চেনেন না। তারাও এই স্বপ্নটা সফল করার জন্য দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন।’
অনেক ব্যর্থতার মাঝেই যে আগামীর সাফল্য লুকিয়ে থাকে, মেসি সেটিও মনে করিয়ে দেন সবাইকে। লিখেন, ‘অনেক সময় ব্যর্থতা যাত্রা পথের সঙ্গী হয়। সেগুলো আমাদের শেখায়। হয়তো সেগুলো হতাশা নিয়ে আসে। তবু ব্যর্থতা ছাড়া সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়। আমার হৃদয় থেকে সকলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা।’
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে গেল রবিববার ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে সমতা থাকার পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটে। সেখানেও ১-১ গোলের সমতা তৈরি হওয়ায় পরবর্তীতে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে জিতে ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘোচান মেসি-মার্টিনেজরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।