বিশ্বের সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট, প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ গিগাবাইট

net speed

বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে কত গতিতে একটি মেসেজ পাঠাতে পারেন? তিন থেকে আট এমবিপিএস? অথবা এর বেশি হলে একটু বেশি গতির ইন্টারনেট পান। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এমন একটি ডাটা লিংক স্থাপন করেছেন, যেখানে এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে ডাটা স্থানান্তর করে প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ গিগাবাইট, যা সাধারণ ব্রডব্যান্ড গতির ১১ হাজার গুণেরও বেশি!

net speed

সুইজারল্যান্ডের ইউরোপীয় নিউক্লিয়ার রিসার্চ সংস্থার লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার এবং নেদারল্যান্ডের ডাটা স্টোরেজ সাইটগুলোর সঙ্গে বিজ্ঞানীরা একটি নতুন ডাটা লিংক স্থাপন করেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে নিউক্লিয়ার রিসার্চ সেন্টার বা সার্নে দুই নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী এই ডাটা লিংক পরীক্ষা করেন। তাঁদের শ্বাস ফেলার আগেই ডাটা সর্বোচ্চ গতিতে পৌঁছে যায়।

বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান ফাইবার ক্যাবলের মধ্যে এটিই হয়তো সর্বোচ্চ গতির ডাটা স্থানান্তর করতে পারে। সার্ন থেকে নেদারল্যান্ডসের ডাটা ডাটা লিংক স্থাপনসেন্টারে শুধু এক হাজার ৬৫০ কিলো‌মি‌টার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে ৮০০ জিবিপিএস গতিতে। বিশ্বজুড়ে ল্যাবগুলোতে নেটওয়ার্কিং বিশেষজ্ঞরা ফাইবার অপটিক সিস্টেম নিয়ে আসছেন, যা দ্রুতগতিতে ডাটা আদান-প্রদান করতে সক্ষম। প্রতি সেকেন্ডে অনেক পেটাবিট-এর গতিতে পৌঁছাচ্ছে, যা সাধারণ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চেয়ে ৩০০ মিলিয়ন গুণ বেশি।

ভবিষ্যতে হয়তো মানুষ এই ধরনের গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে। প্রকৌশলীরা এরই মধ্যে তা নিয়ে কাজ করছেন। একসময় সার্নের ৮০০ জিবিপিএসের ইন্টারনেটও ধীরগতির মনে হবে। কেননা গত নভেম্বরে জাপানের একটি গবেষকদল ডাটা প্রেরণে বিশ্বের সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড ভেঙেছে।

তারা ২২.৯ পিবিপিএসে ডাটা আদান-প্রদান করেছে। একটি ল্যাব সেটিংয়ে ১৩ কিমি কুণ্ডলীকৃত ফাইবার অপটিক ক্যাবলের ওপর সিউডোর‌্যান্ডম ডাটার একটি বিশাল স্ট্রিম বিম করা হয়েছিল। এখানে যে সিস্টেমটি ব্যবহার করা হয়েছিল তা একাধিক কোরের ওপর নির্ভর করে। একটি ফাইবার তারের ভেতরে ছিল মোট ১৯ কোর। কিন্তু যুক্তরাজ্যের অ্যাস্টন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা মাত্র একটি কোরসহ ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে প্রায় ৪০২ টেরাবিট প্রতি সেকেন্ড গতি অর্জন করেছেন।

রাজশাহীতে তিন নারী উদ্যোক্তা পেলেন ব্যবসার উপকরণ

ওয়ার্ল্ড ব্রডব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক মার্টিন ক্রিনার মতে, তথাকথিত মেটাভার্সের কার্যকলাপে একদিন অনেক বেশি ব্যান্ডউইথের প্রয়োজন হতে পারে। তিনি মনে করেন, ২০৩০ সালের মধ্যে হোম ব্রডব্যান্ড সংযোগগুলো ৫০ পর্যন্ত জিবিপিএস পর্যন্ত পৌঁছবে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের গতির চেয়ে নির্ভরযোগ্যতা বেশি প্রয়োজন। কেননা ৩০০০ মাইল দূর থেকে রোবটিক অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে গতির চেয়ে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগই বেশি দরকার। টেলিকম মার্কেট রিসার্চ ফার্ম টেলিজিওগ্রাফির গবেষণা বিশ্লেষক লেন বার্ডেট বলেছেন, ব্যান্ডউইথের চাহিদা অনেক দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া, ক্লাউড পরিষেবা, ভিডিও স্ট্রিমিং আগের চেয়ে অনেক বেশি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করছে। ২০১০ সালের প্রথম দিকে আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথের যা ১৫ শতাংশের মতো ছিল, এখন এটি ৭৫ শতাংশ। তবে পৃথিবীতে গতির চেয়ে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা বেশি প্রয়োজন।