বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : জনপ্রিয় প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘দ্য ভার্জ’-এর মধ্যেই ২০২৩ সালকে টুইটারের মৃত্যু সাল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইন্টারনেটে টুইটার ছিল খবর প্রচার ও তার বিশ্লেষণের মূল মাধ্যম, মানুষকে চূড়ান্ত হয়রানি করার চমৎকার উপায়, এক বাক্যের সব কৌতুকের আধার এবং আজীবন লোকসানে চলা আদর্শবাদী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ।
নাম গেল বদলে
গত বছর টেক দুনিয়াকে ওলট-পালট করে দিয়ে টুইটারকে কিনে নেন ইলন মাস্ক। নিজ থেকেই টুইটার কিনে নেওয়ার কথা ওঠানোর পর তিনি পরে চুক্তি থেকে সরে আসার চেষ্টাও করেন।
যদিও অবশেষে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়ে যায় টুইটার, গত বছরের অক্টোবর মাসে চুক্তি সম্পন্ন হয়। এর পর থেকেই টুইটারকে নিজের ইচ্ছামতো বারবার বদলে দিয়েছেন মাস্ক, শুরুতেই টুইটারের বেশির ভাগ পুরনো কর্মীকে করেছেন ছাঁটাই। এরপর বড়সড় রদবদল করেছেন টুইটার ভেরিফায়েড প্রফাইল বা ব্লু টিকযুক্ত প্রফাইলের সিস্টেমে। সেবাটির জন্য বার্ষিক চার্জ নেওয়া শুরু করেছেন।
অবশেষে এ বছরের মধ্যভাগে টুইটার নামটাকেই মুছে ফেলেন তিনি। এর মাধ্যমে জন্ম নেয় এক্স ডট কম, ১৫ বছর ইন্টারনেট দাঁপিয়ে বেড়ানো টুইটার নামটির অবসান ঘটে।
অবশেষে বাজল বিদায়ঘণ্টা
এত কিছু বদলে যাওয়ার পরও টুইটারের বিদায়ঘণ্টা তখনো বাজতে শুরু করেনি। এরপর গত নভেম্বরে মাস্কের এক পোস্টের পর থেকে টুইটারে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দেয় বড়সড় সব কম্পানি।
মূলত ইসরায়েল ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে করা একটি পোস্টকে প্রমোট করার পর থেকেই কম্পানিগুলো সরে যাওয়া শুরু করে। পরবর্তী সময়ে মাস্কের দেওয়া বেশ কিছু বিবৃতিতে ‘বিজ্ঞাপনদাতাদের চাওয়া-পাওয়ায় টুইটার ধার ধারে না’—এমন বক্তব্য এবং কিছু স্পন্সরের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের মামলা করার পর থেকে এখন পর্যন্ত টুইটারের প্রথম সারির ৫০টিরও বেশি স্পন্সর প্রতিষ্ঠান টুইটার থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। বলা যায়, উগ্রপন্থীরা ছাড়া এক্স, তথা টুইটারের পাশে আর কেউ নেই। তার পরও অনেক ব্র্যান্ড তাদের ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এক্স ব্যবহার করে আসছিল, সেটার ওপরও চার্জ বসানোর পর সেসব প্রতিষ্ঠানও কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। বলা যায়, টুইটার আর লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনাই নেই।
অথচ লোকসান থেকে বের করার লক্ষ্য নিয়েই টুইটারকে কিনেছিলেন মাস্ক।
আছে বিকল্পরাও
এর মধ্যেই টুইটারের আদলে, এটির বেশ কিছু পুরনো কর্মীকে নিয়ে মেটা তৈরি করেছে প্ল্যাটফরম থ্রেডস। ধীরে ধীরে সেটি হয়ে উঠছে জনপ্রিয়, তবে মেটা তথা ফেসবুকের অ্যালগরিদমের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বরাবরই টুইটারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছে ওপেন সোর্স সেবা ‘ম্যাস্টোডন’, মাস্ক টুইটারকে কেনার পর থেকেই সেটির জনপ্রিয়তা বাড়লেও প্ল্যাটফরমটির নিরপেক্ষতারই এই উন্নতির মূল ভিত্তি। টুইটারের রেখে যাওয়া বিশাল শূন্যতা দ্রুতই পূরণ না হলেও থ্রেডস আর ম্যাস্টোডন কিছুটা সামাল দিয়ে যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।