বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : সাধারণ ফিচার ফোন থেকে দামি স্মার্টফোন। খারাপ হয়ে গেলে অনেকেই ফেলে দিই। আবার অনেক সময়ে বাড়িতে পুরোনো জিনিসপত্র বেচাকেনা করতে আসে যে কাবাড়িওয়ালা, তার কাছে বিক্রি করে দিই। কিন্তু একটুও কি ভাবি, এই ফেলে দেওয়া মোবাইল ফোনটিই সাইবার প্রতারকদের বড় অস্ত্র হতে পারে? না, ভাবি না।
মাত্র সপ্তাহ খানেক আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফেলে দেওয়া মোবাইল সংগ্রহের একটি বড় চক্র তেলঙ্গানায় ধরা পড়ার পরে সাইবার প্রতারকদের কারবারটা নতুন করে সামনে এসেছে পুলিশের। সেখানকার পুলিশ ও সাইবার সিকিওরিটি ব্যুরো যৌথ অপারেশন চালিয়ে প্রায় চার হাজার ফেলনা মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে এ রকমই ক’জন কাবাড়িওয়ালার কাছ থেকে। এত মোবাইল কোন কাজে লাগবে?
কোথায়ই বা পাঠানো হয় সেগুলো? জেরা করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নতুন তথ্য। জানা যায়, করিমনগর, পেড্ডাপল্লি, মাঞ্চেরিয়ালের মতো বিভিন্ন জায়গা থেকে এই সব মোবাইল বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বল্পমূল্যে বা বদলে কোনও নতুন জিনিস দিয়ে কিনে নিত মহম্মদ শামিম, আবদুল সালাম ও মহম্মদ ইফতিকার নামে তিনজন। সেগুলো সাফসুতরো করে পাঠানো হতো জনৈক আখতার আলি নামে এক যুবকের কাছে। আদতে বিহারের বাসিন্দা হলেও থাকে তেলঙ্গানায়। তার কাজ কুইন্টাল হিসেবে এই সব পরিত্যক্ত মোবাইলগুলি কিনে নেওয়া। প্রতি কুইন্টালের দাম পড়ে হাজার পাঁচেক টাকার মতো। এবং প্রতি কুইন্টালে মোটামুটি শ’খানেক মোবাইল ধরে যায়।
এই সব মোবাইল কিনে আখতার অল্পবিস্তর মেরামতি করে চালু করার ব্যবস্থা করে। তারপরে সেগুলি পাঠানো হয় ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাবড় সাইবার প্রতারকদের কাছে। সেই মোবাইলগুলিতে ভুয়ো নামে তোলা প্রিপেড সিম ব্যবহার করে তামাম সাইবার প্রতারকরা অপারেশন চালাচ্ছে।
তেলঙ্গানা পুলিশ ইতিমধ্যে দেশের সংশ্লিষ্ট সব রাজ্যকে সতর্ক করে দিয়েছে এই চক্রের বিষয়ে। তাদের সন্দেহ, আখতারের মতো এই রকম এজেন্ট দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আরও ছড়িয়ে রয়েছে। সাইবার অপরাধীরা ফিশিং বা ফোন কল বা মেসেজ করে যে প্রতারণার জাল বিছোচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেখানে এই সব ফেলে দেওয়া মোবাইল ও ভুয়ো নামে তোলা সিমকার্ডই সবচেয়ে বড় অস্ত্র। তাতে মোবাইলের আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বরের সূত্র ধরে কোনও ভাবেই ধরা যাবে না প্রতারণার চক্রীদের।
যদি কোনও ভাবে আইএমইআই নম্বরের সূত্র খুঁজে বেরও করে পুলিশ, তা হলেও যিনি প্রথম মোবাইলটি কিনেছিলেন, সে পর্যন্তই পৌঁছতে পারবেন তদন্তকারীরা। কাবাড়িওয়ালা বা আখতারের মতো এজেন্ট হয়ে আসল অপরাধীদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছনো খুবই শক্ত। সেই কারণে সাইবার বিশেষজ্ঞরা বারবারই বলছেন, পুরোনো ফিচার ফোনই হোক বা স্মার্টফোন— এ ভাবে নির্বিচারে কাবাড়িওয়ালার হাতে দেবেন না। যদি আপনি ওই ফোনটি ব্যবহার করতে না-চান, তা হলে সংশ্লিষ্ট মোবাইল কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করুন। পুরোনো মোবাইল সেকেন্ড হ্যান্ড বিক্রি করলেও তার রসিদ অবশ্যই কাছে রাখুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।