কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের দাম নিয়ে বড় দু:সংবাদ

বিনোদন ডেস্ক: মাসখানেক ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন খাতে। জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন পরিষদ (আঙ্কটাড) বলছে, এর কারণে কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের দাম ১১ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়তে পারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিভিন্ন দেশের শুল্কহার বৃদ্ধিতে এসব পণ্যের দাম বাড়বে। খবর ডিজিটাইমস।

‘বাণিজ্য ও উন্নয়নে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব’ শিরোনামে আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন সপ্তাহ ছাড়িয়ে গেছে যুদ্ধ। বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে এটা কেমন প্রভাব রাখবে তা স্পষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন পণ্য ও শিল্প উপকরণের দাম যে বাড়বে তা স্পষ্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধের কারণে বাণিজ্য রুটে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এতে বৈশ্বিক পণ্য পরিবহনে নেতিবাচক প্রভাব রাখছে। দীর্ঘ রুট গ্রহণ ও জ্বালানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এয়ার কার্গোয় পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়ে গিয়েছে। ৩৬টি দেশের সঙ্গে রাশিয়ার আকাশসীমা বন্ধ হওয়ায় এশিয়া ও ইউরোপের বিকল্প রুটে পণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে।

আঙ্কটাড বলছে, স্বাভাবিক সময়ে সমুদ্রপথে চীন থেকে ইউরোপে ১৫ লাখ কনটেইনার কার্গো পরিবহন হয়। কিন্তু চলমান যুদ্ধে বাণিজ্য রুটটিতে কার্গো পরিবহন কঠিন হয়ে পড়েছে। এশিয়া-ইউরোপের বিকল্প জলপথ ব্যবহার করলে ব্যয় ৫-৮ শতাংশ বেড়ে যাবে। সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন আগে থেকেই বেশ ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। সরবরাহ চেইনে সংকটের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনে নতুন ব্যয় বৃদ্ধিতে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাবে। স্থলপথে কিংবা আকাশপথে হঠাৎ করেই পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা বেশ কঠিন ব্যাপার।

পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে যে ১০টি পণ্যের দাম বাড়তে পারে, তার মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার, ইলেকট্রনিক ও অপটিক্যাল পণ্য (১১.৪%), আসবাব ও অন্যান্য ম্যানুফ্যাকচারিং পণ্য (১০.২%), বস্ত্র, পোশাক ও চামড়াজাত পণ্য (১০.২%), রাবার ও প্লাস্টিক পণ্য (৯.৪%) ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি (৭.৫%)।

পিসিম্যাগের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতে সেমিকন্ডাক্টর খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। স্মার্টফোন, কম্পিউটার, গাড়ি থেকে শুরু করে খেলনা ও ইলেকট্রনিকসের জন্য জরুরি উপকরণ সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ। চিপ তৈরিতে ব্যবহূত লেজারে নিয়ন গ্যাসের শীর্ষ সরবরাহকারী দেশ হচ্ছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। এছাড়া কম্পিউটার উপকরণ, সেন্সর ও ফুয়েল সেল তৈরিতে ব্যবহূত বিরল ধাতু প্যালাডিয়ামের শীর্ষ উৎপাদক দেশ হচ্ছে রাশিয়া।

বিশ্লেষক শন দ্রব্রাভাক জানান, চিপ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের বিরল গ্যাস আমদানির ৪৫ শতাংশ সম্পন্ন হয় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। বাকি আমদানি হয় চীন, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো দেশ থেকে। প্রলম্বিত যুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টর খাতসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাতে নেতিবাচক প্রভাব রাখবে।

করোনা মহামারীর কারণে এমনিতেই চিপ শিল্প ভয়ানক সংকটের মধ্যে ছিল। ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতে পিসি গ্রাফিকস কার্ড বাজার সবচেয়ে ক্ষতির মধ্যে পড়বে বলে মনে করেন দুব্রাভাক। সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত হওয়ার ফলে কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ধকল পোহাতে হবে ভোক্তাকেই।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের গবেষক রোনার জোর্হোবদে মনে করেন, ইউক্রেন সংঘাতের ফলে ইলেকট্রনিকস পণ্যের দাম বাড়বে।

আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে যারা নজর রাখছে? জানা যাবে এই সহজ উপায়ে