বিনোদন ডেস্ক : আর কদিন পরেই ঈদুল আজহা। মুসলমানদের বৃহৎ এই উৎসব উপলক্ষে নির্মিত হচ্ছে কয়েক শ নাটক। ঈদের দিন থেকেই নাটকগুলো ইউটিউবে চলে যাবে। আর এখনকার দর্শকমাত্রই জানেন, নাটক অনেকটাই ইউটিউবনির্ভর হয়ে গেছে। তাই তো বড় উৎসবগুলোতে কোন তারকার নাটক কতটা ইউটিউব ভিউ পেল, কে কার থেকে এগিয়ে গেল, সেটি নিয়ে চলে নানা বিচার-বিশ্লেষণ। এখন নাটক হিট-ফ্লপের মানদন্ড অনেকটাই ইউটিউবনির্ভর।
বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন এ সময়ের চাহিদাসম্পন্ন তারকারা? জানতে চাইলে সময়ের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন টিভি অভিনেতা আফরান নিশো বলেন, ‘সময় মানুষকে অনেক কিছু শেখায়। আমাদের সময়ের চাহিদা মেনে চলতে হবে। এখন মানুষ অনলাইননির্ভর হয়ে পড়েছে। তাই টিভিতে নাটক দেখলেও ইউটিউবে নাটক দেখার অভ্যাস বেশি তৈরি হচ্ছে। বিষয়টিকে আমি পুরোপুরিভাবে ইতিবাচক মনে করি। টিভিতে অনেক সময় দর্শক ভাগ হয়ে যায়।
কারণ দেশে অনেক বেশি চ্যানেল। এ ছাড়া আমরা তো একটা সময় প্রচুর শুনেছি, টিভিতে বিজ্ঞাপন বিরতি কতটা বিরক্তির পর্যায়ে চলে যায়। তা ছাড়া সময়ও একটা বিষয়। একজন দর্শক হয়তো তার পছন্দের নির্মাতার বা তারকার নাটক দেখতে চান। কিন্তু যে সময়ে তা প্রচার হয়, তখন হয়তো তিনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত। ফলে নাটকটি তিনি মিস করে গেলেন। কিন্তু ইউটিউবে নাটক প্রকাশের পর থেকে এই সমস্যাগুলো চলে গেছে।’
কিন্তু অনেকে ইউটিউবের এ বিষয়টিকে সমালোচনাও করেন। এটা সত্যি যে এখন ইউটিউবে যারা নাটক দেখেন তার অধিকাংশই তরুণ প্রজন্ম। কিন্তু একটা সময় যখন টিভিতেই নাটক দেখার চল ছিল, তখন একটি বাড়ির দাদা-দাদি থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া বাচ্চারাও একসঙ্গে নাটক দেখত। এতে করে তখনকার তারকারা হয়ে উঠতেন সব প্রজন্মের দর্শকের প্রিয়। বিষয়টি তুলতেই এ সময়ের ছোটপর্দার শীর্ষ অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, ‘অবশ্যই অনলাইনে তরুণ প্রজন্ম বেশি অ্যাকটিভ।
সিনিয়ররাও কিন্তু এখন ইউটিউবে নাটক দেখেন। আমি তো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শ্যুটিং কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলে দেখি, সব প্রজন্মের মানুষই আমাকে চিনতে পারছে, ছবি তুলতে চাচ্ছে। মজার বিষয় হলো, তরুণীদের মতো তার মা কিংবা দাদিরাও আমাকে বলেন, “মা, তুমি খুব ভালো কাজ করছ। তোমার ওই নাটকটা আমার খুব পছন্দ।”’
এ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, ‘ইউটিউবে যদি তরুণরা বেশি নাটক দেখে, তাহলে টিভিতে যখন আমাদের নাটক প্রচার হয়, তখন নিশ্চয়ই বাড়ির পরিণত সদস্যরাই তা দেখেন। ফলে এটা বলা যায় না যে এখন কাজের পরিধি অনলাইনে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে বলে আমরা সব বয়সের দর্শক পাচ্ছি না। আমি তো বলব, এখন আরও বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। আগে গ্রামের কয়টা বাড়িতে টিভি ছিল। কিন্তু এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট সুবিধা।’
আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা অপূর্ব বলেন, ‘আসলে এখন অনেক চ্যানেল, অনেক প্ল্যাটফর্ম, অনেক নাটক। তাই শিল্পী-কলাকুশলীও অনেক, প্রতিযোগিতাটাও বেশি। আগে শুধু বিটিভি কিংবা হাতে গোনা কয়েকটি চ্যানেলে অল্প সংখ্যক নাটক হতো। সেখানে যারা অভিনয় করতেন, ঘুরেফিরে তাদেরই দেখা যেত। এ জন্য তারা সহজে মানুষের মনে জায়গা করে নিতেন। তবে এটাও সত্য যে তখন মেধাবী শিল্পীই বেশি ছিলেন। জেনে-বুঝে কাজ করা শিল্পী বেশি ছিলেন। আর এখন অনেক শিল্পীর ভিড়ে নিজেকে দর্শকের কাছে নিয়ে যাওয়াটাই বিরাট চ্যালেঞ্জ। এত বাধার মধ্যে যারা সেই কাজটা করতে পারছেন, তারা কিন্তু প্রকৃত অর্থেই সব শ্রেণি ও বয়সের ভক্ত তৈরি করতে পারছেন।’
কয়েক বছর ধরেই মূলত ইউটিউবে নাটকের বাজার তৈরি হয়েছে। সেই হিসাবে ইউটিউবে এখন সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন তারকা আফরান নিশো। তার নাটকই গড়ে সবার চেয়ে বেশি ইউটিউব ভিউ পায়। এরপর আছেন আরেক জনপ্রিয় নায়ক অপূর্ব। আর এই দুজনের সবচেয়ে হিট নাটকের নায়িকা মেহজাবীন চৌধুরী। যদিও তিনি এককভাবে ইউটিউব ভিউয়ে নিশো আর অপূর্বকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন না। তাদের পরেই আছেন দক্ষ অভিনেতা মোশাররফ করিম ও গায়ক-অভিনেতা তাহসান খান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।