জুমবাংলা ডেস্ক : জাকির হোসেন, পেশায় প্রকৌশলী। তার নেশা, পুরাতন কয়েন ও ডাকটিকিট সংগ্রহ করা। তার সংগ্রহে আছে ব্রিটিশদের ২০০ বছরের ভারত শাসন আমলের ব্যবহৃত ডাকটিকিট। প্রাচীন এসব টিকিট দেখতে তার বাড়িতে ভিড় করে মানুষ। শুধু ডাকটিকিট নয়, বিশ্বের ১৯৪ দেশের প্রায় পাঁচ হাজার দুর্লভ কয়েন রয়েছে।
জাকির হোসেনের প্রথম ডাকটিকিট পাওয়া তার মায়ের কাছ থেকে। তিনি মায়ের কাছ থেকে লিবিয়ার বেশ কিছু ডাকটিকিট পান। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে তার আগ্রহ। স্কুলের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে শুরু হয় কয়েন সংগ্রহের মিশন। স্কুলে পড়ার সময় তার সংগ্রহের কিছু ডাকটিকিট হারিয়ে যায়। কিন্তু দমে যাননি। আবারো নতুন করে শুরু করেন সংগ্রহ।
তার বাড়িতে দেখা যায়, ঘরের একটি কক্ষে এসব ডাকটিকিট সাজিয়ে রেখেছেন। কয়েকটি অ্যালবামে সংগ্রহ করেছেন তিনি। এ কক্ষে বসে এসব নিয়ে গবেষণাও করেন। অ্যালবামের পাশেই লেখা রয়েছে সাল ও ব্যবহারের সময়কাল।
জাকির হোসেন বলেন, আমি ছোট থেকেই মূলত বিভিন্ন দেশের প্রাচীন ধাতব মুদ্রা সংগ্রহ করি। কিন্তু আমার সংগ্রহ শুরু হয়েছিল ডাকটিকিট থেকে। এই টিকিট সংগ্রহও মায়ের কাছ থেকে পাওয়া লিবিয়ার ডাকটিকিট থেকে। তখন আমি শিরোইল স্কুলে পড়ি, তৃতীয় শ্রেণিতে।
এটা ১৯৯১ সালের ঘটনা। স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে সাহেব বাজারের হবি স্টোর আর নিউমার্কেটের এপলো থেকে স্কুল জীবনে অনেক ডাকটিকিট কিনেছিলাম। এর পাশাপাশি একই সময়ে মায়ের কাছ থেকে পাওয়া লিবিয়ার মুদ্রা সংগ্রহ করি। তবে ডাকটিকিটগুলো স্কুল জীবনের পর হারিয়ে যায়।
এরপর চলতে থাকে দেশি-বিদেশি এবং প্রাচীন মুদ্রা সংগ্রহ। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার মুদ্রা সংগ্রহ করতেন তিনি। জাকির হোসেন বলেন, এগুলো নিয়ে লেখতে আমার খুব ভালো লাগে। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার মুদ্রা নিয়ে আমার একটা ব্লগ আছে। ধাতব মুদ্রার পাশাপাশি, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার কাগজের নোট, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার মেডেল, এবং ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার ডাকটিকিট সংগ্রহ শুরু করি। বর্তমানে ডাকটিকিট সংগ্রহ বলতে শুধুমাত্র ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার ডাকটিকিট সংগ্রহ করছি। আর এটা শুরু করি করোনার মধ্যে।
তিনি আরও বলেন, আমার কাছে আছে ভিক্টোরিয়া কুইন, অ্যাডওয়ার্ড, জর্জ-৫, জর্জ-৬। ব্রিটিশ ইন্ডিয়া শাসন আমলের ২০০ বছরের সব ধরনের ডাকটিকিট। প্রায় ২৫০টা টিকিট আছে। এগুলোর মধ্যে স্টার ওয়াটার মার্ক বিখ্যাত। এছাড়া কিছু খামও আছে।
জাকির আরও বলেন, এসব সংগ্রহ করতে আমাকে ইন্ডিয়া পর্যন্ত যেতে হয়েছে। বিভিন্ন স্থানের নিলাম থেকেও কালেক্ট করেছি। পুরাতন নথি ঘেঁটে এগুলো সংগ্রহ করেছি। অনেকের বাড়ি থেকেও এগুলো পাওয়া গেছে। আমার ইচ্ছা এই সংগ্রহ আরও বড় করার। আমি মুদ্রা নিয়ে লেখালেখি করি। এখন ডাকটিকিটের ওপরে লেখালেখি করবো। ডাকটিকিট কীভাবে পরিবর্তন হয়েছে, ব্যবহৃত ছবির পেছনের কারণ ইত্যাদি সম্পর্কে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।