জুমবাংলা ডেস্ক: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়ন একটি কৃষি সমৃদ্ধ এলাকা। এখানে প্রচুর শিমের আবাদ হয় প্রতি বছর। আগাম সবজি হিসেবে ঈশ্বরদীতে ‘অটো শিম’ চাষ করে এই এলাকার কৃষকরা প্রতিবারই লাভবান হয়।
এবারো সেই স্বপ্ন পূরণে দিনরাত কাজ করছেন কৃষকরা। ‘অটো শিমে’র পরিচর্যায় চাষিরা মহাব্যস্ত। কৃষাণিরাও বসে নেই। কৃষক-কৃষাণি উভয়ে এখন মাঠে ব্যস্ত। তারা শিমের ক্ষেতে ফুল ও ফলের পরিচর্যায় সময় পার করছেন।
মুলাডুলি এলাকার যে দিকে দুচোখ যায় মাঠের পর মাঠ জুড়ে চোখে পড়বে শিমের ক্ষেত। শিমের লতা-পাতার সবুজ সমারোহের সঙ্গে গোলাপি ও সাদা ফুল পথচারীদের নজর কাড়ছে। এরই মধ্যেই কিছু কিছু গাছে শিম ধরতে শুরু করেছে। আগাম অটো শিমে লাভবান হওয়ার আশায় স্বপ্নে বিভোর ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের কৃষকরা।
মুলাডুলি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, দেশের অন্যতম শিম উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে খ্যাত ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে জোরেশোরেই চলছে আগাম শিম চাষ। জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝিতে আগাম শিম চাষের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়। বৃষ্টির পানি থেকে শিম গাছকে রক্ষা করতে জমিতে ১২ থেকে ১৬ ইঞ্চি উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে ঢিবি বা বিট। উঁচু বিটে অটো শিম চাষ করা হয়েছে। ‘অটো’ জাতের শিম গাছ ইতোমধ্যেই মাচায় উঠে ফুলে ফুলে ভরে গেছে। আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই পুরোদমে এসব শিম বাজারে উঠবে।
আগাম অটো শিম চাষে প্রতিবছরই সফলতা পায় এখানকার চাষিরা। যে কারণে প্রতিবছরই শিমের আবাদ বাড়ছে। শিম চাষকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে গড়ে উঠেছে বিশাল সবজির বাজার। মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক শিম ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের জেলা শহরগুলোতে চালান হয়।
মুলাডুলির বাঘহাচলা গ্রামের চাষি হোসেন আলি জানান, আড়াই বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘাতে খরচ হয় ৪০-৪৫ হাজার টাকা। ভালো আবাদ হলে বিক্রি হবে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
তিনি জানান, গত বছর আগাম জাতের অটো শিম বাজারে প্রথম বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
বেতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আরস খাঁ জানান, ফলন ভালো হলে আর কৃষক ন্যায্য দাম পেলে লাভবান হবে। আগাম জাতের শিম চাষে ব্যাপক লাভবান হয়েছে এখানকার কৃষকরা। শিম চাষে উৎসাহ বাড়ছে কৃষকদের।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার মিতা সরকার জানান, দেশের সবচেয়ে বেশি শিম এখানে চাষাবাদ হয়। রাজধানীর বাজারে আগাম যে শিম পাওয়া যায় সেটি উৎপাদন হয় ঈশ্বরদীতে। এখানে ১ দশমিক ১৩০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়। এর মধ্যে শুধুমাত্র মুলাডুলি ইউনিয়নেই ৮৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়। ২০২১ সালে এখানে ৮১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শিম বিক্রি হয়েছে।
তবে আগাম শিম চাষে কৃষকরা অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে যা স্বাস্থ্যর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সার ও কীটনাশক কম ব্যবহার করে কীভাবে আগাম শিম উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পথে নেই পচার ভয়: পদ্মা সেতু দিয়ে স্বরূপকাঠির পেয়ারা যাচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।