লাইফস্টাইল ডেস্ক: নানা কারণে চুল পরা বেড়ে যেতে পারে। যেমন ধরুন- পরিবেশ দূষণ, বয়স, স্ট্রেস, স্মোকিং, পুষ্টির অভাব, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, জেনেটিক কারণ, স্কাল্প ইনফেকশন, হেয়ার প্রডাক্টের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, বেশ কিছু ওষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে, থাইরয়েড, অটোইমিউন ডিজজ,পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম, অ্যানিমিয়া প্রভৃতি।
প্রতিদিন ৫০-১০০টা চুল পরে যাওয়া একেবারে স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এর থেকে বেশি মাত্রায় পরতে শুরু করলেই চিন্তার বিষয়।
এক্ষেত্রে যত শিগগির সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে কিন্তু মাথা ফাঁকা হয়ে যেতে সময়ও লাগবে না।
এক্ষেত্রে যে সব উপায়ে চুল পরা আটকানো যেতে পারে।
দই : ২ চামচ দইয়ের সঙ্গে ১ চামচ মধু এবং ১ চামচ লেবুর রস নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। যখন দেখবেন প্রতিটি উপাদান ঠিক মতো মিশে গেছে, তখন মিশ্রনটা ভাল করে চুলে লাগিয়ে কম করে ৩০ মিনিট রেখে দিন। সময় হয়ে গেলে চুলটা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এমনটা সপ্তাহে একবার করলেই দেখবেন চুল পড়ার হার কমতে শুরু করেছে।
পেঁয়াজে রস : এতে উপস্থিত সালফার হেয়ার ফলিকেলসে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দিয়ে নিমেষে চুল পরা কমিয়ে দেয়। এখানেই শেষ নয়, পেঁয়াজের রসে রয়েছে বিপুল পরিমাণে অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল প্রপাটিজ, যা স্কাল্পে ঘর বেঁধে থাকা জীবাণুদের মেরে ফেলে। ফলে স্কাল্প ইনফেকশনের সঙ্গে সঙ্গে চুল পরার অশঙ্কাও হ্রাস পায়। ১টা পেয়াজ থেকে রস সংগ্রহ করে নিন। তারপর সেই রস সরাসরি মাথায় লাগিয়ে মাসাজ করুন। ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই পদ্ধতিতে চুলের পরিচর্যা করলে ফল পাবেন একেবারে হাতে-নাতে।
মেথি : চুল পরা আটকাতে মেথি দারুন কাজে আসে। আসলে এতে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো যখনই দেখবেন চুল পরার হার খুব বেড়ে গেছে, তখনই অল্প করে মেথি বীজ নিয়ে এক গ্লাস পানিতে এক রাত ভিজিয়ে রাখবেন। পরদিন বীজগুলি বেটে নিয়ে একটা পেস্ট বানাবেন। সেই পেস্টটা ভাল করে মাথায় লাগিয়ে ৪০ মিনিট রেখে দিয়ে ধুয়ে নেবেন। টানা একমাস, প্রতিদিন এই মিশ্রনটি মাথায় লাগালে চুল পরা তো কমবেই, সেই সঙ্গে মাথা ভর্তি চুলের স্বপ্নও পূরণ হবে।
নিম পাতা : এই প্রকৃতিক উপাদনটিতে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ চুলের গোড়ায় কোনও ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমায়, তেমনি খুশকির প্রকোপও হ্রাস করে। আর এমন ধরনের রোগের হাত থেকে যখন মুক্তি মেলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই চুল পড়াও কমে যায়। তাই যখনই দেখবেন বেশি মাত্রায় হেয়ার ফল হচ্ছে, তখনই ১০-১২ টা নিম পাতা নিয়ে জলে ফুটিয়ে নেবেন। তারপর সেই জল দিয়ে ভাল করে চুলটা ধুয়ে নিতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে।
অ্যালোভেরা : এতে রয়েছে এমন কিছু এনজাইম, যা চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাকে। ফলে চুল পরলেও মাথা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। অ্যালোভেরার উপকারিতা কিন্তু এখানেই শেষ হয়ে যায় না। এতে উপস্থিত অ্যালকেলাইন প্রপাটিজ স্কাল্পের পি এইচ লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে চুল পরার হার কমে। পরিমাণ মতো অ্যালো ভেরা জেল নিয়ে স্কাস্পে লাগিয়ে ফেলুন। কিছু ঘন্টা অপেক্ষা করে হালকা গরম জলে ভাল করে মাথাটা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ৩-৪ বার এই ভাবে অ্যালো বেরা জেল মাথায় লাগলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।
আমলকি : চুল পরা আটকানোর পাশপাশি চুলের বৃদ্ধিতে আমলকির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এতে উপস্থিত ভিটামিন সি চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করে, সেই সঙ্গে স্কাল্পের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়। ফলে চুল পরার প্রবণতা কমে। প্রসঙ্গত, দেহে ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি দেখা দিলে চুল পরা বেড়ে যায়। তাই এই ভিটামনিটির ঘাটতি যেন কখনও না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রথমে ১ চামচ আমলার রসের সঙ্গে ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রনটি ভাল করে চুলে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিয়ে পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।