জুমবাংলা ডেস্ক: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা কথা বলতে সক্ষম একটি রোবট তৈরি করেছেন। রোবটির নাম তারা রেখেছেন নিকো। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের অর্থায়নে রোবটটি তৈরি করেন শিক্ষার্থীরা।
‘কোয়ান্টা রোবোটিক্স’ কুবি শিক্ষার্থীদের একটি রোবোটিকস দল। তারাই এই রোবটটি তৈরি করেছে। এই টিমের লিটার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ম ব্যাচের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্জিত মণ্ডল।
কোয়ান্টা রোবোটিক্স টিমের সদস্যরা জানান, এক বছর পরিশ্রম করে ‘নিকো’ নামের এই রোবট তৈরি করা হয়েছে। নিকোলাস টেসলার নাম থেকে ‘নিকো’ শব্দটি নিয়ে রোবটের নাম করণ করা হয়েছে। এটি তাদের তৃতীয় রোবট। রোবটটি থ্রিডি প্রিন্টেড রাসবেরি পাই বেইজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বাংলাদেশের সর্বাধুনিক মানব রোবট বলে মনে করেন তারা।
রোবটটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে নিকো ভার্শন ১.০, স্পিড ১.৫ গিগাহার্জ, সিক্সটি ফোর বিট কোয়ার্ড কোর এআরএম প্রসেসর, ৮ গিগাবাইট র্যাম, ১২০ গিগাবাইট রম।
২৯ টি শক্তিশালী সার্ভো মোটর ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকার বডি পার্টস মুভমেন্ট এর জন্য, চলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে হাই টর্কের ডিসি মোটর। এছাড়া এটি পরিচালনা করার জন্য রয়েছে সেভেন ইঞ্চি রাসবেরি পাই টার্চ ডিসপ্লে। এটি কোনো প্রকার তার সংযোগ ছাড়াই সরাসরি রোবটটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
কোয়ান্টা রোবোটিক্স টিমের লিডার সঞ্জিত মন্ডল বলেন, রোবটটিকে কর্মক্ষেত্রে যে কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে। মানুষের মতোই যেকোনো কাজ করতে সক্ষম আমাদের এই রোবটটি। রোবটটিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহারের কারণে মানুষের মতই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করতে পারবে এবং এক চার্জেই প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে সক্ষম।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে এমন ধরনের রোবট সর্বপ্রথম উদ্ভাবন করা হয়েছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্মিত ফ্যাভ ল্যাবে।আমাদের টিম কোয়ার্টার রোবোটিক্স পূর্বে আরো দুইটি রোবট তৈরি করেছিল। রোবট নিকো আমাদের নির্মিত তৃতীয় রোবট যেটি বাংলাদেশের সবচাইতে এডভান্স রোবট। এর পূর্বে বাংলাদেশ আগে কখনই ফুল থ্রিডি প্রিন্টেড রাসবেরি পাই বেইস কোন রোবট তৈরি হয়নি।
হেড প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করেছেন আইসিটি বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুয়েল নাথ। এছাড়াও রোবটটি তৈরিতে কাজ করেছেন আইসিটি বিভাগের অনিক চক্রবর্তী, তাওসীফ বিন পারভেজ, মহিউদ্দিন খান মাহিন।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, আজকে আমরা রোবট নিকো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছি। রোবটটি তৈরীতে কাজ করেছে এক ঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী। আমরা জেলা প্রশাসন রোবটটি তৈরীতে আর্থিক সহযোগিতা করেছি কেবল। এটি একটি টকিং রোবট। সে নিজেই নিজের পরিচয় দিতে পারে। ১৮০ ডিগ্রিতে রোবটটি মুভমেন্টও করতে পারে। সে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে রোবটটি অগ্রগণী ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখি।
শিক্ষার্থীদের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.এ এফ এম আবদুল মঈন। তিনি বলেন, এটা দারুণ একটা মাইলফলক বলে আমি মনে করি। এর মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে গর্বিত করেছে। এসব সাফল্য নিঃসন্দেহে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণোদনা হিসাবে কাজ করবে। তারা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নতুন নতুন লার্নিং প্রজেক্টের অংশ হতে উৎসাহ পাবে। এমন একটি ইউনিক প্রকল্পে আমার শিক্ষার্থীদের সমর্থন জোগানোর পাশাপাশি মেন্টরিংয়ের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আমি চাই টিম কোয়ান্টা সংশ্লিষ্ট সবাই এবং আমার অন্যান্য শিক্ষার্থীরা যেন এ ধরণের কাজ অব্যাহত রাখে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের অনুশীলন ভিত্তিক অথেনটিক লার্নিংয়ে যুক্ত করার যেকোনো সুযোগকে স্বাগত জানাতে চাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।