অনলাইন শপিংয়ে সবার যা জানা উচিত

Advertisement

মহামারির মধ্যে কেনাকাটার জন্য বাইরে যাওয়ার উপায় ছিল না, অনেকেই অনলাইনে বাজার করায় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে, বিশেষ করে যাদের  যাদের হাতে ইন্টারনেট কানেকশন রয়েছে। কারণ অনলাইনে কেনাকাটায় ঘরের বাইরে বেরনোর প্রয়োজন নেই, অপরিচিত মানুষের সাথে মেলামেশা বা ছোঁয়াছুঁয়ির আশঙ্কাও এড়ানো যায়।

আবার অনেকে অনলাইন বাজারে অনেকদিন থেকেই অভ্যস্ত। তাদের কাছে আমাজন, ইবেসহ দেশই এবং বিদেশী ই-কমার্স সাইটগুলো পরিচিত নাম।

দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে শুরু করে জামাকাপড়, আসবাবপত্র কিনতে অনলাইনেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন দেশের একটা বড় অংশের মানুষ।

তবে বর্তমানে করোনার চোখরাঙানি কমলেও সেই অভ্যাস রয়ে গেছে এখনও। মার্কেটে ঘুরে জিনিসপত্র কেনার জন্য সময় নষ্ট করতে চান না কেউই। যে কোন জায়গায় বসে পণ্য অর্ডার করলেই পছন্দের সামগ্রী পৌঁছে যায় নিমিষে। আবার বিভিন্ন দিবস বা স্টক লটের নামে নানান অফার তো রয়েছেই। এতো সহজ লভ্যতার কারণে দিন দিন সবাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে শপিংয়ের জন্য নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন ।

অনলাইন শপিংয়ে অনেক সুবিদার পাশাপাশি অনেকেই প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন। হাজার হাজার টাকা হারাচ্ছেন মানুষ। আগের তুলনায় অনলাইন লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় বড়সড় এক প্রতারণার ফাঁদ পেতে রেখেছে প্রতারকরা। অ্যাকাউন্ট থেকে সাফ হয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইন শপিংয়ে আসক্ত হলে সতর্ক থাকুন। প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে অনলাইন শপিংয়ে সবার যা জানা উচিত-

1. 1. অচেনা কোনও ই-কমার্স সাইটে নিজের ব্যাংক অথবা ডেবিট কার্ডের তথ্য দেবেন না। শুধুমাত্র জনপ্রিয়, পরিচিত অনলাইন শপিং সাইট থেকেই শপিং করুন। ই-মেলে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে অনেক সময় নানা লিংক আসে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও অনেক অচেনা লিংক পেতে পারেন। সেখানে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য না দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
   2. অনলাইন লেনদেনের সময় দেখে নিন সিকিউরিটি সকেট লেয়ার এনক্রিপটেড রয়েছে কি না। কীভাবে বুঝবেন? যে URL-টি ওপেন করেছেন, দেখে নিন লিংকটির বাঁ-দিকে HTTPS-এর ‘S’ আছে কি না। অনেক সময় HTTP থাকে। S না থাকলে এড়িয়ে যান।
   3. অনেকদিন ধরে দেশে মার্কেটে টিকে আছে এবং আপনার পরিচিতরা কেনাকাটা করেছেন এমন অনলাইন শপ থেকে পণ্য ক্রয় করুন।
   4. পরিচিত ওয়েবসাইটের নাম ও লুক ভাঙিয়ে ফাঁদ পাতে প্রতারকরা। তাই ডোমেন যাচাই করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। দেখে নিন যে সাইটটি থেকে শপিং করবেন ভাবছেন, সেটির বানান ঠিক আছে কি না। অদ্ভুত কিছু অ্যাড্রেস থেকে লিংক মেল করা হয়। সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
   5. স্ট্যান্ডার্ড দামের কম দামে পণ্য কিনা থেকে বিরত থাকুন। দুনিয়ায় কেউই লস দিয়ে ব্যবসা করেন না। সুতরাং বড় ছাড়ে কিনতে গিয়ে খারাপ পণ্য বা চিটারদের ফাঁদে পা দিবেন না।
   6. অনেক সময় কোনো কোনো অচেনা ই-কমার্স সাইট অবিশ্বাস্য কিছু অফার দিয়ে থাকে। লোভে পড়ে সেই ফাঁদে পা দেবেন না। তাহলেই বিপদ। আইফোন কিংবা ব্র্যান্ডের টিভি কখনওই ৮০ শতাংশ ছাড়ে পাওয়া যায় না। তাই বুদ্ধি খাটিয়ে শপিং করুন।
   7. মাঝে মধ্যে নিজের ইমেলের পাসওয়ার্ড বদলে ফেলুন। বদলে ফেলতে পারেন ডেবিট কার্ডের মোবাইল পিন কোডও। পাশাপাশি লেনদেনের সময় OTP ভেরিফিকেশন করে নিলেও অনেকটাই নিরাপদে থাকবেন।
   8. যেসব পণ্য আপনি হাতের কাছেই পেয়ে থাকেন, দেখে কিনতে পারেন সেসব পণ্য কম দাম হলেই অনলাইনে কিনা থেকে বিরত থাকুন।
   9. ক্রেডিট কার্ড ইউজ না করে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে রিনিউন অনলাইন শপ থেকে পণ্য কিনুন।
   10. অযথা অনলাইন শপে ভিসিট করবেন না, এতে করে আপনার অনেক অপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনা হবে যা সাইট ভিজিট না করলে কিনা হতো না।
   11. বাংলাদেশের অনলাইন শপের বর্তমান ট্রেন্ড অপরিপক্ষ, যে কোন পণ্য কিনার আগে সেলার এবং অনলাইন শপের রিভিউ ভালো করে দেখে নিন।
   12. অনলাইন শপে বা থার্ড পার্টি সাইটে নিজের ফেসবুক, ইমেইল বা ব্যক্তিগত কোন তথ্য ইনপুট করা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে পাসওয়ার্ড।

অনলাইনে ব্যবসা যারা করেন, তারা ক্রেতাদের মনমানসিকতার ওপরও নজর রাখেন। কাজেই মহামারির পরবর্তী দুনিয়ায় মানুষ কীভাবে দোকানবাজার করা পছন্দ করছেন তা খতিয়ে দেখেই তারা সম্ভবত তাদের ব্যবসাকে সময়োপযোগী করে তুলবেন। অন্যদিকে, কাস্টমাররাও ধীরে ধীরে সচেতন হয়ে উঠবেন এবং কোন পণ্য অনলাইন থেকে কিনার আগে যাচাই বাছাই করে কিনবেন।

মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়