আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হাসপাতাল থেকে বাড়ির দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এত দূরের হাসপাতালে পৌঁছাতে হলে নদী পাড়ি দিতে হবে। কিন্তু সেই নদীর ওপর নেই কোনো ব্রিজ। তাই বাধ্য হয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে রান্নার একটি বড় পাত্রের মধ্যে বসিয়ে নদী পার করে হাসপাতালে নিলেন স্বামী।
কিন্তু তাতেও লাভ হলো না। শেষ পর্যন্ত মারা গেল গর্ভের সন্তান। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সের গাফিলতিতেই গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ছত্তিশগড়ের মিনাকাপল্লিতে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, মিনাকাপল্লির বাসিন্দা হরিশ ইয়ালাম। তারই স্ত্রী লক্ষ্মী প্রথমবার সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে যত্নে কোনও কমতি রাখা হয়নি। যখন সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় এসেছে, পরিবারের সকলে ঠিক করেন বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে নেয়া হবে। কিন্তু ওই হাসপাতালে যেতে হল স্থানীয় চিন্তাওয়াগু নদী পার হতে হবে। কারণ, ওই নদীর ওপর এখনো কোনো ব্রিজ তৈরি হয়নি। আর এছাড়া বিকল্প রাস্তাও নেই।
এই পরিস্থিতিতে একটি বড় মাপের রান্নার বাসনের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বাকে বসিয়ে নেন পরিজনেরা। পানির ওপর ভাসিয়ে ভাসিয়ে দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় অন্তঃসত্ত্বাকে নিয়ে নদী পার হন তারা। এরপর লক্ষ্মীকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় ভোপালপাট্টানামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
অন্তঃসত্ত্বার বোন বলেন, হাসপাতালে পৌঁছানোর পরদিনই লক্ষ্মীর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। আমরা চিকিৎসক এবং নার্সদের জানাই। তারা বলেন, এখন শিফট শেষ হয়ে গেছে। পরের শিফটে আসা চিকিৎসক এবং নার্স সন্তান প্রসব করাবে লক্ষ্মীর। সেই অনুযায়ী বেশ কিছুক্ষণ পরে চিকিৎসা শুরু হয়। তারপর জানা যায় মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছেন দিদি। এত কষ্ট সহ্য করে হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক, নার্সের ব্যবহারে আমরা স্তম্ভিত। ঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে গর্ভস্থ সন্তানকে হয়তো বাঁচানো যেতো। অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।