
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনবিরোধী রাজনৈতিক নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে কারাগারের একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানকার কর্তৃপক্ষ বলছে তার অবস্থা ‘সন্তোষজনক’। প্রায় ২০ দিন ধরে অনসনে থাকায় তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। খবর বিবিসির।
একদিন আগেই চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো তার মৃত্যু হতে পারে। তার চিকিৎসার বিষয়ে এখনই গুরুত্ব দেয়া না হলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
চিকিৎসকরা জানান, তার রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এটা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, তার কোনো সময় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা কিডনি অচল হয়ে যেতে পারে। এতে করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে এবং তার মৃত্যুও হতে পারে।
চিকিৎসকদের এমন আশঙ্কার পর সোমবার নাভালনিকে একটি কারা-হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি মস্কো থেকে ১শ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পোকরোভ পেনাল কলোনিতে আছেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাকে প্রতিদিনই একজন চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন এবং তিনি ভিটামিন গ্রহণে সম্মতি জানিয়েছেন। তীব্র পিঠে ব্যথা এবং পা অবশ হয়ে যাওয়ায় তার যতটুকু চিকিৎসা দরকার তিনি তা পাচ্ছিলেন না। উপযুক্ত চিকিৎসার দাবি জানিয়েই তিনি অনসন করছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অনসন করার কারণে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে।
পুরোনো একটি মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আনাসতাসিয়া ভেসিলিয়েভাসহ মোট চারজন চিকিৎসক তার সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে দেখা করার জন্য কারা কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
ওই চিঠিটি টুইটারে পোস্ট করেছেন ভেসিলিয়েভা। সেখানে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নাভালনির দেহে পটাশিয়ামের মাত্রা গুরুতর পর্যায়ে চলে গেছে। ফলে যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং তাকে হয়তো আর বাঁচানো যাবে না। এই ঘটনার পরেই নাভালনিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলো।
এর আগে ২০২০ সালের আগস্টে নাভালনিকে ক্যামিকেল নার্ভ এজেন্ট নোভিচক প্রয়োগ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে সময় তিনি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন। সে সময় নাভালনি অভিযোগ করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশেই তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।
গত ৩১ মার্চ থেকে তিনি অনসন শুরু করেন। এদিকে, নাভালনি কারাগারে মারা গেলে রাশিয়াকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনয়নও তার চিকিৎসার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, নাভালনি মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইছেন এবং তাকে কারাগারে মারা যেতে দেয়া হবে না। ভ্লাদিমির পুতিনের কড়া সমালোচক ৪৪ বছর বয়সী নাভালনির পেছনে উঠে পড়েছে লেগেছে মস্কো।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জেইক সালিভ্যান সিএনএনকে বলেছেন, ‘নাভালনি মারা গেলে পরিণতি আসবে এবং রাশিয়ার কাছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জবাবদিহি দাবি করবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।