বিনোদন ডেস্ক: ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ থেকে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের সময় তাৎক্ষণিক তার পরিচয় শনাক্ত না হলেও রাতে অভিনেত্রীর পরিবার-স্বজনরা নিশ্চিত করেন এটি শিমুর দেহ। এদিকে এ ঘটনায় অনেকে আঙুল তুলেছেন শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের দিকে।
কেননা, এফডিসি শিল্পী সমিতি থেকে ভোটাধিকার হারানো শতাধিক শিল্পীদের মধ্যে রাইমা ইসলাম শিমুও ছিলেন। তিনি একাধিকবার তার ভোটের অধিকার আদায়ে বিবাদে জড়িয়েছিলেন জায়েদ খানের সঙ্গে।
সোমবার রাতে অভিনেত্রীর মরদেহ উদ্ধারের পর সমিতির হারানো অনেক শিল্পী হত্যাকাণ্ডের পেছনে জায়েদ খানের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে গণমাধ্যমে অভিযোগ করেছেন ভোটাধিকার হারানো একাধিক শিল্পী।
এদিকে বিষয়টি স্পষ্ট করতে সোমবার রাতেই গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন জায়েদ। এ সময় বিষয়টি ভক্ত-অনুরাগীদের কাছে আরও দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ফেসবুক ভেরিফাইড প্রোফাইল থেকে লাইভও করেন তিনি।
জায়েদ বলেন, শিমু হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাই আমি। র্যাবকে ধন্যবাদ জানাই যে, তারা আসামিকে ধরে ফেলেছে এবং স্বীকারোক্তি নিয়েছে। গতকাল বিকেলে আমি যখন শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত তখন শিমুর ভাই আমাকে পাশে ডেকে নিয়ে বললেন, জায়েদ ভাই, কাল থেকে শিমুকে খুঁজে পাচ্ছি না। কলাবাগান থানায় জিডি করেছি। আপনার সহযোগিতা চাই। আমি তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে সহযোগিতার হাত বাড়াই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আমার ভাই নাজমুলকে বিষয়টি জানাই। শিমুর ফোননম্বর দিয়ে তার সর্বশেষ লোকেশনটা কোথায় তা জানতে বলি। এরপরেই নাজমুল জানান, কেরানীগঞ্জে শিমুর ডেডবডি পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর পর আমাকে জড়ানোর ষড়যন্ত্র চলছে। বলা হচ্ছে, ১২ দিন আগে শিমুর সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়েছে। অথচ গত দুই বছর ধরে আমার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নাই।
কেন তাকে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে,গণমাধ্যমকর্মীদের এ প্রশ্নে জায়েদ বলেন, চলচ্চিত্র শিল্প সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব নোংরামি চলছে আর অপপ্রচার হচ্ছে। শিল্পী সমিতির নির্বাচনের সঙ্গে এই হত্যার কি সম্পর্ক? অনেকেই শিল্পীর ভাইয়ের বাসায় গিয়ে তাকে আমার বিরুদ্ধে বলার জন্য প্ররোচনা দিয়েছেন। নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বীরা ঘটনাটিকে পুঁজি করেছে।
এছাড়াও অভিনেতা জায়েদ তার বিরুদ্ধে সন্দেহের বিষয়ে বলেন, তিন-চারটা ছেলে-মেয়ে যাদের নাম বলতে হয়- ফিরোজ শাহী ও সাদিয়া মির্জাসহ আরও কয়েকজন। এর মধ্যে সাদিয়া মির্জা নোংরামি শুরু করেছে। ইউটিউবে গেলে দেখা যায় ‘আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে জায়েদ খান’ উল্লেখ করে সে ছড়িয়ে দিচ্ছে, আসলে এসব নোংরামির অবসান হওয়া উচিত বলে মনে করি আমি।
এদিকে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর (৩৫) বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের পর তার স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ও গাড়িচালক ফরহাদকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এর আগে র্যাব তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। আটককালে তাদের কাছ থেকে একটি রক্তমাখা প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের নিয়ে অভিযানে পরিচালনা করছে র্যাব ও পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক দুজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
র্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছে, গাড়ি চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে র্যাবের কাছে তিনি কিছু তথ্য দেন। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী এখন অভিযান চলছে। স্বামী নোবেলের প্রাইভেটকারের ব্যাকডালায় রক্ত দেখা গেছে। প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।
পর্দায় যেমন ভয় দেখাই বাস্তবেই ভয় দেখাতে জানি, জায়েদ খানের হুংকার
স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসায় থাকতেন শিমু। রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাতেই কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পর দিন সোমবার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে শিমুর বস্তাবন্দি খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।