নিজস্ব প্র্রতিবেদক, গাজীপুর: এক অসহায় মা ও তার নবজাতকের পাশে দাঁড়ালেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন।
গাজীপুর জেলা শহরের কেয়ার হাসপাতালে গত ২৮ জুন একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন বিপুলা রাণী (৪০)। মাত্র ৮ মাসে জন্ম নেয়া শিশুটির ছিল শ্বাসকষ্ট সমস্যা এবং ওজনে কম। ফলে জরুরী ভিত্তিতে শিশুটির আইসিইউ সাপোর্টের দরকার হয়। কিন্তু বিপুলার সে সামর্থ্য ছিল না। কি করবেন, কার কাছে যাবেন- কোন কুলকিনারা পাচ্ছিলেন না। তার এই ঘোর বিপদের খবর পৌঁছে যায় জিএমপি কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেনের কাছে। তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। পাশে দাঁড়ান দরিদ্র বিপুলা রাণীর। উন্নত চিকিৎসার ব্যয়ভার তিনি নিজেই বহন করেন। তার এই মানবিক কর্মকাণ্ডে ভূয়সী প্রশংসা করছেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার এ কে এম আহসান হাবীব জানান, জিএমপি কমিশনার আনোয়ার হোসেন বিপুলা রাণীর ঘটনা জানতে পেরে তাকে দিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। ওইদিনই চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশু ও মাকে ঢাকা উত্তরায় শিন শিন জাপান হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে গত ২ জুলাই শিশুটি সুস্থ হয়ে মায়ের সাথে বাড়ি ফিরে যায়।
এ কে এম আহসান হাবীব জানান, বিপুলা রাণীর স্বামী নির্মল মিস্টির দোকানে কারিগরের কাজ করতেন। নির্মলের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকায় আর বিপুলার বাড়ি গাজীপুরের শিমুলতলীতে। নির্মল তার স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে নিশিতাকে নিয়ে ধীরাশ্রম বাজারের পাশে মাসিক ৬শ টাকায় একটি রুম ভাড়া থেকে থাকতেন। বিপুলার গর্ভে শিশুটির ৭ মাসের সময় হঠাৎ নির্মল মারা যান। দু’চোখে অন্ধকার দেখেন স্ত্রী বিপুলা রানীর। গর্ভে সন্তান, বাড়ি ভাড়া, ভরণপোষণ কিভাবে চলবে ? এ অবস্থায় ৮ মাসের মাথায় বিপুলার ঘর আলো করে জন্ম লাভ করে এই পুত্র সন্তান।
তিনি বলেন, ‘জিএমপি কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন স্যার ঘটনাটি জানতে পেরে তাকে (সদর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার) শিশুর ও তার (মায়ের) প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য পাঠান। শিশুটির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওইদিনই চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা উত্তরায় অবস্থিত শিন শিন জাপান হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে গত ২ জুলাই শিশুটি সুস্থ হয়ে তার মার সাথে বাড়ি ফিরে।’
সহকারী পুলিশ কমিশনার জানান, হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন জিএমপি কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন প্রতিদিন শিশু ও তার মায়ের খোঁজ খবর নিতেন। কখন কী লাগবে জানতে চাইতেন।
অসহায় শিশু ও তার মায়ের প্রতি জিএমপি কমিশনারের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মানবিক এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ তাঁর প্রশংসা করেন। অনেকে শ্রদ্ধা, ভালবাসা জানিয়ে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।