স্টকারওয়্যার হলো একধরনের স্পাইওয়্যার। এটি মূল ব্যবহারকারীর চোখের আড়ালে থেকে তথ্য চুরি থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের অপরাধ করতে সক্ষম। এছাড়া এটি গোপনে তথ্য সংগ্রহের পর অন্য সার্ভারে স্থানান্তরও করে থাকে।
বর্তমানে ভোক্তা গ্রেডের স্পাইওয়্যার অ্যাপ বা সফটওয়্যারগুলো গোপনে ক্রমাগত ব্যবহারকারীর ডিভাইস থেকে ব্যক্তিগত মেসেজ, ফটো, ফোন কল রেকর্ড ও রিয়েল টাইম লোকেশন তথ্য সংগ্রহ করে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের নির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ অনুসরণ করলে যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী দ্য ট্রুথস্পাই ও কিডসগার্ডের মতো সাধারণ স্টকারওয়্যার বা স্পাইওয়্যার অ্যাপ থেকে নিজের ডিভাইসে সুরক্ষিত রাখতে পারবে।
১. প্লে স্টোর ছাড়া অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ডাউনলোড না করা: প্রথমেই জানা উচিত স্পাইওয়্যার অ্যাপগুলো প্রায় সময় চাইল্ড মনিটরিং বা ফ্যামিলি ট্র্যাকিং সফটওয়্যার কিং বা অ্যাপ হিসেবে নিজেদের বাজারজাত করে। এগুলোকেই সাইবার নিরাপত্তার ভাষায় স্টকারওয়্যার বা স্পাউসওয়্যার বলা হয়। কারণ এ ধরনের অ্যাপ বা সফটওয়্যার অনুমতি ছাড়াই অন্য পক্ষকে ট্র্যাক করতে পারে। এ ধরনের স্পাইওয়্যার ব্যবহারকারীর ডিভাইসে বাইরে থেকে আসে এবং ডাউনলোড হয়ে গোপনে ইনস্টল হয়। এ কারণে প্লে স্টোর ছাড়া অন্য কোনো বিশ্বস্ত নয়— এমন ওয়েবসাইটে বা লিংক থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করা উচিত নয়।
২. ডিভাইসে স্টকারওয়্যার থাকার লক্ষণ: স্টকারওয়্যার ডিভাইসে নজরদারির জন্য অ্যান্ড্রয়েড রিমোট ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট বা অ্যাকসেসিবিলিটি মোডের ফিচারগুলো ব্যবহার করে। কোনো ব্যবহারকারীর ডিভাইস যদি অতিরিক্ত গরম হয় বা কোনো কমান্ড গ্রহণে সময় বেশি লাগে কিংবা মোবাইল ডাটা বেশি ব্যবহার হয় তাহলে স্টকারওয়্যার থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
৩. গুগল প্লে প্রটেক্টের মাধ্যমে স্ক্যান করা: অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস সুরক্ষিত রাখতে প্লে স্টোরে গুগল প্লে প্রটেক্ট রয়েছে। এর মাধ্যমে স্ক্যান করে ব্যবহারকারীরা ডিভাইসে ক্ষতিকর কোনো অ্যাপ আছে কিনা তা শনাক্ত ও অপসারণ করা যায়। এজন্য প্লে স্টোর সেটিংসে গিয়ে গুগল প্লে প্রটেক্ট চালু আছে তা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর স্ক্যান করার মাধ্যমে ডিভাইসে থাকা স্টকারওয়্যার শনাক্ত করা যাবে।
৪. ডিভাইসের অ্যাকসেসিবিলিটি মোড চেক করা: স্টকারওয়্যার অ্যাপ বা সফটওয়্যার সম্পূর্ণভাবে সিস্টেম অ্যাকসেসের নেয়ার জন্য অ্যান্ড্রয়েডের অ্যাকসেসিবিলিটি মোডের অপব্যবহার করে। এজন্য অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের অ্যাকসেসিবিলিটি সেটিংসে অপরিচিত কোনো সার্ভিস চালু রয়েছে কিনা তা যাচাই করতে হবে। যদি এমন কোনো অপরিচিত অ্যাপ চালু করা থাকে তা বন্ধ করতে হবে।
৫. নোটিফিকেশন অ্যাকসেস চেক করা: অনেক সময় স্টকারওয়্যার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের নজরদারির জন্য নোটিফিকেশন দেখার অনুমতি চেয়ে থাকে। এজন্য ডিভাইসের সেটিং অপশন থেকে নোটিফিকেশন অ্যাকসেস অপশনে প্রবেশ করে কোনো অ্যাপকে বিশেষ কোনো অনুমতি দেয়া আছে কিনা তা পরীক্ষা এবং চালু থাকলে বন্ধ করে দিতে হবে।
৬. অ্যাডমিন অ্যাপগুলো চেক করা: নজরদারির জন্য স্টকারওয়্যার রিমোট পদ্ধতি ব্যবহার করে নজরদারির জন্য অ্যান্ড্রয়েডের ডিভাইস অ্যাডমিন কাজে লাগায়। এজন্য সেটিংসের ভেতরে অ্যাডমিন অপশনে কোনো অপরিচিত অ্যাপ দেখা গেলে তা বন্ধ করে দিতে হবে।
৭. আনইনস্টল অ্যাপ অপশন পরীক্ষা করে দেখা: স্টকারওয়্যারের অ্যাপ বা সফটওয়্যারের হোম স্ক্রিন আইকন না থাকলেও সেটিংসে ইনস্টল করা অ্যাপ তালিকা দেখা যায়। তাই ইনস্টল করা অ্যাপ তালিকা থেকে কোনো অপরিচিত অ্যাপ যা ক্যালেন্ডার, কল, ক্যামেরা, ফোন নম্বর, লোকেশনের মতো অনুমতি নিয়েছে তা বন্ধ করতে হবে।
৮. ডিভাইস সুরক্ষিত করা: স্টকারওয়্যারের ডিভাইস অ্যাকসেসের প্রয়োজন হওয়ায় অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ডিভাইসের অ্যাকাউন্টগুলোর জন্য একটি শক্তিশালী স্ক্রিন লক পাসওয়ার্ড এবং টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেটর নিরাপত্তা পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। এতে ব্যবহারকারীর ডিভাইস আরো সুরক্ষিত থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।