বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করল এক ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনার মাধ্যমে। আ আ-আম জনতা পার্টি নামক একটি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ডেসটিনি গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন। ঢাকার বনানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির যাত্রা শুরু হয়।
আ আ-আম জনতা পার্টি: রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে এক নতুন রাজনৈতিক দিগন্ত
আ-আম জনতা পার্টি নামটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেরই মনে হতে পারে এটি হয়তো শুধুই আরেকটি দল। কিন্তু এর পেছনের ভাবনা, উদ্দেশ্য ও ঘোষিত কর্মসূচি যেন একটি গভীর দর্শনের প্রতিচ্ছবি। দলটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন বলেন, “বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও জনগণকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।”
Table of Contents
দলের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, তারা মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে দেশ পরিচালনার মূল ভিত্তি তৈরি করবে। রফিকুল আমীন বলেন, “আজ দেশের মানুষ ৫৪ বছর পরেও বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার। আমরা চাই সুশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও খাদ্যের নিশ্চয়তা।”
দলের মূলমন্ত্র – “শিক্ষা-সমতা সু-বিচার যেখানে, আ-আম জনতা হাঁটবে সেখানে” – যেন গোটা দর্শনকে এক বাক্যে প্রকাশ করে।
দলটির ৯ দফা কর্মসূচি ও সমাজ সংস্কারের অঙ্গীকার
দলের পক্ষ থেকে একটি সুসংগঠিত ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
- আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক কাঠামো গঠন
- সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ
- জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন
- ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা
- শিক্ষা, খাদ্য, স্বাস্থ্য, বাসস্থান নিশ্চিতকরণ
- গ্রামীণ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া
- স্বাধীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বিচার বিভাগ গঠন
- রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা
- প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা
এগুলো কেবল রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়, বরং একটি সমন্বিত সমাজ ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।
রাজনৈতিক পটভূমি ও সদস্যদের পরিচিতি
বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি ইতোমধ্যেই ২৯৭ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেছে। দলটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গণ অধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা ফাতিমা তাসনিম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ সড়ক চাই-এর প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল দিদারুল আলম এবং বাংলাদেশ জনতার দলের সদস্য সচিব আজম খান।
দলের এই কাঠামো থেকে বোঝা যায়, এটি শুধুমাত্র নতুন মুখ নয়, বরং অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ও জনগণের নানা স্তরের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংগঠন।
দলের আদর্শ ও দর্শনের প্রয়োগে বাস্তব চ্যালেঞ্জ
যদিও আ-আম জনতা পার্টি বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে, বাস্তবিক রাজনীতির মাঠে তাদের চ্যালেঞ্জ অনেক। দেশে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এখন রাজনৈতিক বিরক্তিতে ভুগছে, তাদের আস্থা ফেরানো সহজ কাজ নয়।
তবে মোহাম্মদ রফিকুল আমীন এ বিষয়ে বলেন, “আমরা মানুষকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তুলতে চাই, যাতে তারা বুঝতে পারে ভোটের শক্তিই তাদের ভবিষ্যৎ গঠনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।”
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভূচিত্রে নতুন সমীকরণ
বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে নতুন জোট ও দল গঠনের হিড়িক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এরই মাঝে আ-আম জনতা পার্টি এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এ দলের মতাদর্শিক ভিত্তি যেমন শক্তিশালী, তেমনি সামাজিক সাম্য ও ন্যায়ের দাবিও সুদৃঢ়।
দলের ঘোষণাপত্রে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, “স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি এবং সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করাই আমাদের অঙ্গীকার।”
FAQs
আ-আম জনতা পার্টি কী ধরনের রাজনৈতিক দল?
আ-আম জনতা পার্টি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, যা সামাজিক ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীন সমাজ এবং রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করবে।
দলটির প্রতিষ্ঠাতা কে?
ডেসটিনি গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন এই দলের প্রতিষ্ঠাতা ও আহ্বায়ক।
দলটির মূলমন্ত্র কী?
“শিক্ষা-সমতা সু-বিচার যেখানে, আ-আম জনতা হাঁটবে সেখানে” – এই মূলমন্ত্রের মাধ্যমে দলের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও আদর্শ প্রকাশ পায়।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কতজন সদস্য রয়েছে?
দলটির কেন্দ্রীয় কমিটিতে মোট ২৯৭ জন সদস্য রয়েছে, যারা বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণি থেকে আসা অভিজ্ঞ নেতৃত্ব।
দলের কর্মসূচির প্রধান দিকগুলো কী?
আইনের শাসন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং রাজনৈতিক সচেতনতা – এগুলো দলের কর্মসূচির মূল দিক।
Post Status: Draft
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।