জুমবাংলা ডেস্ক : শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদের ১২টি মাছের দোকান দখলে নিয়ে বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সভাপতি দাদন মুন্সী ও তার লোকেদের বিরুদ্ধে। পরবর্তী সময়ে তার সঙ্গে মীমাংসা করে সাতটি দোকান খুললেও এখনো পাঁচটি দোকান বিএনপি নেতার দখলে রয়েছে।
জানা গেছে, পদ্মা নদীর তীরবর্তী নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর বাজারে ৫০ জন আড়তদার মাছ বিক্রি করেন। বাজারে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয়ে থাকে। গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি দাদন মুন্সীর নেতৃত্বে বাজারের ১২টি দোকান দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
দখল হওয়া ১২টি দোকানঘরের মধ্যে সাতটি দোকানের মালিক বিএনপি নেতা দাদন মুন্সীর সঙ্গে টাকার বিনিময়ে সমঝোতা করলে খুলে দেওয়া হয়। তবে এখনো বন্ধ রয়েছে সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের মামা ও চরআত্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনায়েত উল্লাহ মুন্সী, মামাতো ভাই দিপু মুন্সী, কাচিকাটা ইউপি সদস্য আলম দেওয়ান, ঘরিষার ইউপি সদস্য নীরব গোলদার ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ পাইকের পাঁচটি দোকানঘর।
মাছ ব্যবসায়ী ও ঘড়িষার ইউপি সদস্য নীরব গোলদার অভিযোগ করে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে সুরেশ্বর মৎস্য আড়তে মাছের ব্যবসা করে আসছি। অনেক টাকা জেলেদের দাদন দিয়ে রেখেছি। আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি বলে সরকার পতনের পর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমার দোকানসহ ১২টি দোকান বন্ধ রেখেছেন। পরে যারা তার সঙ্গে টাকা দিয়ে মীমাংসা করেছেন তাদের ঘর খুলে দিয়েছেন। আমি মীমাংসা করতে পারিনি বলে, আমার ঘরটি খুলতে পারিনি।
আরেক ব্যবসায়ী আলম দেওয়ান বলেন, আমি এই ব্যবসা করেই সংসার চালাই। গত সোমবারের পর থেকে বিএনপি নেতা দাদন মুন্সী আমার মাছের দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি তাদের ভয়ে দোকানে যেতে পারছি না। আমি আমার দোকানটি খুলতে চাই।
ব্যবসায়ী দিপু মুন্সী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা দাদন মুন্সী সাবেক এমপি এনামুল হক শামীমের আত্মীয়। এজন্য আওয়ামী লীগের সরকারের সময় তার ওপর হামলা বা মামলা কোনোটিই হয়নি। এর পরও তিনি আজ আমাদের দোকান দখলে নিয়েছেন। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম দাদন মুন্সী বলেন, আট মাস আগে আমার দোকানগুলো বন্ধ করে রেখেছিলেন আওয়ামী লীগের লোকজন। তাই এখন আমার লোকজন তাদের দোকান ঘর বন্ধ রাখতে বলেছে। তবে যারা আমার কথা মেনে নিয়েছেন তাদের ঘর খুলে দেওয়া হয়েছে। আর যারা আমার কথা মানেননি তারা ঘর খুলতে পারবেন না।
জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, যদি পূর্বে আওয়ামী লীগের লোকজন জোরপূর্বক ও চাঁদাবাজি করে ওই আড়তগুলো দখল করে রাখেন, তাহলে এখন বিএনপির লোকজন সাময়িক সময়ের জন্য সেসব দোকান বন্ধ করে রাখতে পারেন। তবে কোনো নিরীহ ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ করলে তা খুলে দেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুবুল আলম কালবেলাকে বলেন, আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। এরই মধ্যে কিছু দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি দোকানগুলোও খুলে দেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ সহকারে দেখছি। একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।