আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিচ্ছেদের জন্য অ্যাপল কোম্পানির আইফোনকে দায়ী করে মামলাটি করেছেন এক ব্রিটিশ। বিচ্ছেদের ফলে আইন অনুযায়ী, সদ্য সাবেক হওয়া স্ত্রীকে পাঁচ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ দিতে হয়েছে তাঁর। এবার খরচসহ পুরো টাকাটাই অ্যাপলের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করেছেন ওই ব্যক্তি।
মামলা করা ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে শুধু রিচার্ড নাম উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিচার্ড একজন মধ্যবয়সী ব্যবসায়ী। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন—মেসেজ ডিলিটের বিষয়ে আইফোন তাঁকে স্পষ্ট তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে পুরোনো কিছু মেসেজ তাঁর ২০ বছরের সুখী দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ডেকে এনেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিয়ের আগের বছরগুলোতে ‘আই-মেসেজ অ্যাপ’ ব্যবহার করে বেশ কয়েকজন যৌনকর্মীর সঙ্গে মেসেজ আদান-প্রদানের মাধ্যমে দেখা করেছিলেন রিচার্ড। যৌনকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি প্রতিবারই তাঁদের সঙ্গে হওয়া কথোপকথনগুলো ডিলিট করে দিতেন। তিনি ভাবতেন—মেসেজগুলো ডিলিট করে দেওয়ায় গোপন অভিসারের সব প্রমাণ পুরোপুরিভাবে মুছে গেছে। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী আইফোনের ফ্যামিলি আইম্যাকে প্রবেশ করে হিস্ট্রিতে ডিলিট করে দেওয়া মেসেজগুলোর অস্তিত্ব দেখতে পান এবং কৌতূহলবশত এগুলো উদ্ধার করে পড়ে ফেলেন।
এরপরই রিচার্ডের দাম্পত্য জীবনে নরক নেমে আসে। এক মাসের মধ্যেই বিচ্ছেদের আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী।
যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে বসবাস করা রিচার্ড অ্যাপলের কাছ থেকে শুধু বিচ্ছেদের অর্থই নয়, এর সঙ্গে মামলাসংক্রান্ত কাজে যাবতীয় আইনি খরচও দাবি করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, আই-মেসেজ অ্যাপ দিয়ে অন্য কোনো আইফোনে মেসেজ পাঠালে পরিবারের অন্যান্য অ্যাপল ডিভাইস দিয়ে যে এটি দেখা সম্ভব হয়, সেই বিষয়টি ব্যবহারকারীদের কাছে পরিষ্কার করেনি কোম্পানি। আর এর জন্যই তাঁকে অর্থ এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে।
দ্য টাইমসকে রিচার্ড বলেন, ‘যদি আপনাকে বলা হয় যে, মেসেজটি ডিলিট হয়েছে, আপনি তো পুরোপুরিভাবে এটাই বিশ্বাস করবেন যে—মেসেজটি ডিলিট হয়ে গেছে।’
রিচার্ড জানান, ঘটনাটি তাঁর জীবনে মারাত্মক পরিণতি নিয়ে এসেছে। ঘটনার পর তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছে। বেশ কয়েকবারই তাঁর হার্ট অ্যাটাকের পরিস্থিতি হয়েছিল। আর এসব মেসেজ আবিষ্কার করার মধ্য দিয়ে তাঁর স্ত্রীও বড় আঘাত পেয়েছিলেন। পুরো বিষয়টি একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
রিচার্ড আরও জানান, আইফোনের এই বিষয়টি যে শুধু তাঁকেই ভুগিয়েছে এমন নয়। এই ঘটনার শিকার হয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ। তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি, এক কিশোর নিজের আইম্যাক দিয়ে তার বাবার মেসেজ দেখে ফেলেছে। এসব মেসেজের মধ্যে এমন অনেক মেসেজ ছিল, যেগুলো তার দেখার উপযোগী নয়।’
বর্তমানে লন্ডনে অবস্থিত রোজেনব্লাট নামে একটি ল ফার্মের মাধ্যমে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন রিচার্ড। এ বিষয়টি নিয়ে দ্য টাইমসের পক্ষ থেকে অ্যাপল কোম্পানির যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য করেনি কোম্পানিটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।