বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : নতুন একটি ‘যুগান্তকারী’ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লেজার চালিত অস্ত্রের মহড়া চালিয়েছে যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে আকাশে অত্যন্ত নির্ভুলভাবে ড্রোনের বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব।
অস্ত্রটির নাম ‘ড্রাগনফায়ার’। শুক্রবার যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (এমওডি) এক বিবৃতিতে বলেছে, গত সপ্তাহে তারা এর প্রথম নমুনা পরীক্ষা চালিয়েছে, যেখানে আকাশে থাকা বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুকে ‘লেজারবিদ্ধ’ করেছে অস্ত্রটি।
ড্রাগনফায়ার হচ্ছে একটি লেজার চালিত অস্ত্র ব্যবস্থা, যা ‘এলডিইডব্লিউ’ নামেও পরিচিত। আর উচ্চ ক্ষমতার লেজারের মাধ্যমে দূরপাল্লার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ‘অত্যন্ত নির্ভুলভাবে’ আঘাত হানতে সক্ষম এটি। আর এর নির্ভুলতাকে ‘এক কিলোমিটার দূরে থাকা মুদ্রায় আঘাত হানার’ সঙ্গে তুলনা করেছে ‘এমওডি’।
“এমন যুগান্তকারী অস্ত্রের মাধ্যমে যুদ্ধক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটানোর সম্ভাবনা আছে, যেখানে দামি গোলাবারুদের ওপর নির্ভরযোগ্যতা এমনকি যুদ্ধপ্রবণ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাও কমে আসবে।” –বলেছেন যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস।
যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, লেজারটি দিয়ে টানা ১০ সেকেন্ড ‘লেজার গুলি’ করলেও এর বিদ্যুৎ খরচ এক ঘণ্টা হিটার চালানোর সমান অর্থাৎ ‘প্রতি গুলিতে সাড়ে ১২ ডলারের কিছু বেশি’।
অস্ত্রটির সর্বোচ্চ মাত্রা এখনও তালিকাভুক্ত করা না হলেও যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী বলেছে, এটি ‘দৃশ্যমান যে কোনো লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানতে পারে’।
“এ অস্ত্রের সম্ভাবনা বোঝার পাশাপাশি এর ক্ষমতার কারণে কী ধরনের হুমকি সৃষ্টি হতে পারে, সে বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে আমরা এ পরীক্ষাগুলোকে বড় এক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি।” –বলেছেন যুক্তরাজ্যের ‘ডিফেন্স সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ল্যাবরেটরি’র প্রধান পল হলিনশিড।
এ ধরনের লেজার চালিত অস্ত্র নিয়ে বেশ কিছু দেশ পরীক্ষা চালাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এমনকি ইসরায়েলও।দ
এমন অস্ত্রের বিকাশ এমন এক সময় এল, যখন বিভিন্ন যুদ্ধে ড্রোনের ব্যবহার বেড়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক আক্রমণের ক্ষেত্রে।
ইউক্রেইনের বিভিন্ন শহরকে লক্ষ্যবস্তু বানাতে ইরানে তৈরি ‘কামিকাজি’ সুইসাইড ড্রোনের ব্যবহার বাড়াতে দেখা গেছে পুতিনের বাহিনীকে। একইভাবে ইউক্রেইনও নিজস্ব প্রকৌশলীদের তৈরি ড্রোনের মাধ্যমে আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়ার ওপর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের লেজার চালিত অস্ত্র দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন এমন ক্ষেপণাস্ত্রের সাশ্রয়ী বিকল্প হতে পারে, যেগুলো যুদ্ধপ্রবণ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আকাশে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে থাকে।
এমওডি বলেছে, এমন অস্ত্র ব্যবস্থা আলোর সমতুল্য গতিতে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, যেখানে ব্যবহার করা হয় খুবই উজ্জ্বল আলোচ্ছটা, যা লক্ষ্যবস্তু ভেদ করে বেরিয়ে পড়ে। এর ফলে, লক্ষ্যবস্তুর কাঠামোগত ব্যর্থতার পাশাপাশি যুদ্ধের ফলাফলের ওপরও প্রভাব পড়তে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।