জুমবাংলা ডেস্ক : দুই মাসের ব্যবধানে ফের ডিমের ডজন ১৫০ টাকায় উঠেছে। যা এক মাস আগেও ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ডজনপ্রতি ৩০ টাকা বৃদ্ধিতে ক্রেতার ভোগান্তি বেড়েছে।
এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা দুই সপ্তাহ আগেও ১৭০ টাকা ছিল। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশে ডিমের ঊর্ধ্বমুখী দামের মধ্যেই এবার এসেছে বিশ্ব ডিম দিবস। আজ শুক্রবার বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘উন্নত জীবনের জন্য ডিম।’
প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে বিশ্বের ৪০টি দেশ দিনটি পালন করে আসছে। অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার প্রথম বিশ্ব ডিম দিবসের আয়োজন করা হয়।
ধুঁকছেন খামারি :প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে রেজিস্টার্ড পোলট্রি খামারের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৫৪১। কর্মসংস্থান ৫৪ লাখ ২০ হাজার মানুষের। খামারিরা বলছেন, মুরগির খাবার ও ওষুধের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। লোকসানে পড়ে অনেকে ডিম উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছেন। খামারিরা জানান, প্রশাসনের নজরদারি ও চাহিদা কমে যাওয়ায় ডিমের দাম কিছুটা কমাতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র বলছে, জেলায় লেয়ার মুরগির ৪ হাজার ১৬০টি খামার এখনও টিকে আছে। বন্ধ হয়েছে অন্তত পাঁচ হাজার খামার। প্রান্তিক খামারিরা জানান, মুরগির প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৩৫ পয়সা। খামার থেকে এ ডিম বের হওয়ার পর হাতবদল হয়েই দাম বেড়ে সাধারণ ভোক্তার কাছে যাচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা বেশিতে। একদিকে যেমন খামারি তাঁর উৎপাদিত ডিমের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি প্রতিটি ডিম কিনে ২ থেকে ৩ টাকা করে ঠকছেন সাধারণ ক্রেতারা।
এদিকে দেশে গত আগস্টে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে ডিমের দাম। তখন প্রতি ডজন কিনতে ক্রেতার সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। এ সময় বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সে সময় ডিমের দাম বাড়ানোর পেছনে কারসাজি খুঁজে পায় অধিদপ্তর। অসাধুদের শাস্তির আওতায় আনা শুরু করলে কমতে থাকে দাম। ওই সময় বাণিজ্যমন্ত্রী ডিম আমদানির করা হবে বলে জানান। তখন আরেক দফা দাম কমে প্রতি ডজন ডিম ১২০ টাকায় নেমে আসে। কিন্তু ফের পণ্যটি নিয়ে অসাধুরা কারসাজি শুরু করেছে।
খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রতি হালি ফার্মের ডিম ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেক্ষেত্রে হালি হিসাবে প্রতি পিসের দাম হয় সাড়ে ১২ টাকা। তবে পাড়া বা মহল্লার দোকানে এক পিস ডিম কিনতে ১৩ টাকা খরচ হচ্ছে। আর প্রতি ডজন বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। যা এক মাস আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১৭০-১৭৫ টাকা।
সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটা ডিমের উৎপাদন খরচ ৫ থেকে ৬ টাকা। সেটা সর্বোচ্চ ৮ টাকা বিক্রি হতে পারে। কিন্তু ১২ থেকে ১৩ টাকা। এটা কেন? এটা কি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না? এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, মাসখানেক আগে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তখন অসাধুদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হয়। সে সময় ডিমের দাম কমে আসে। কিন্তু আবারও বাড়ছে। তাই অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোনো অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় আনা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।