জুমবাংলা ডেস্ক: রাজধানীর দক্ষিণখানে মো. আজাহারকে হত্যার আগে স্থানীয় মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান তাকে ডাবের পানির সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়েছিল। চোখে ঘুম আসার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনার আগেও একবার তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। তখন তরকারির সঙ্গে ‘টিকটিকি ও জামাল গোটা’ খাইয়ে তাকে মারার চেষ্টা করা হয়। তবে সে পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। রহমান কবিরাজের কাছ থেকে জামাল গোটা নামে বিশেষ ধরনের ওই ঔষধি গাছের বীজ এনে আজাহারের স্ত্রী আসমা আক্তারকে দিয়েছিল। রহমান-আসমার অনৈতিক সম্পর্কে বাধা হওয়াতেই আজাহারকে খুন করে লাশটি ছয় টুকরা করা হয়।
রবিবার (৩০ মে) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা এসব তথ্য জানিয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালত ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও জবানবন্দিতে আসমা ও আব্দুর রহমান বলেছে, তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ছিল। তা আজাহার দেখে ফেলে। এরপর তাদের সম্পর্কে সমস্যা হচ্ছিল। এজন্যই দু’জনে মিলে তাকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। গত ১৩ রোজাতেও তাকে মেরে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেদিন ইফতারের পর রাতের খাবারের তরকারির সঙ্গে টিকটিকি ও জামাল গোটা মিশিয়ে আজাহারকে খেতে দেওয়া হয়। এতে তার পাতলা পায়খানা শুরু হলেও সে মারা যায়নি।
এর পরও তাকে হত্যার পরিকল্পনা চলতেই থাকে। শেষ পর্যন্ত ঈদের পর আব্দুর রহমান মসজিদে তার কক্ষে ডেকে নেয় আজাহারকে। তখন আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা ডাবের পানির সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট দেওয়া হয়। এতে আজাহারের ঘুম ঘুম অবস্থা হলে তাকে পশু জবাইয়ের বড় ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। পুরো হত্যাকাণ্ডে রহমান একা থাকলেও সবকিছুই জানত আসমা।
আজাহার দক্ষিণখান এলাকায় তৈরি পোশাকের একটি কারখানার কর্মী ছিলেন। তিনি স্ত্রী আসমা ও চার বছরের শিশু ছেলে নিয়ে ওই এলাকাতেই থাকতেন। তারা ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গেলেও আজাহার ২০ মে একাই ঢাকায় ফেরার পর নিখোঁজ হন।
ওই ঘটনায় র্যাব ছায়া তদন্ত করে স্থানীয় সরদার বাড়ি মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমানকে (৫৩) গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২৫ মে সকালে ওই মসজিদের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে আজাহারের লাশের ছয়টি টুকরা উদ্ধার করা হয়। ওই রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় আসমাকে (২৩)। এর পরই বেরিয়ে আসে তাদের অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি।
পুলিশের উত্তরা বিভাগে উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, অনৈতিক সম্পর্কের জেরে আজাহার নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এর পরিকল্পনায় ছিল আসমা। প্রেমিক রহমানের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়ন করা হয়। পরিকল্পনা থেকে খুনের বাস্তবায়ন- সবকিছুই জবানবন্দিতে বলেছে ওই দু’জন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আজাহারকে খুনের পর তার ফোনটি আংশিক পুড়িয়ে দেয় রহমান। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এর অংশ বিশেষ আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া যার কাছ থেকে জামাল গোটা কেনা হয়েছিল, সেই ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।