Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home আফ্রিকার ২৯টি দেশে মানবসেবার কাজ করে যিনি অমর
    আন্তর্জাতিক মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার

    আফ্রিকার ২৯টি দেশে মানবসেবার কাজ করে যিনি অমর

    জুমবাংলা নিউজ ডেস্কAugust 11, 20229 Mins Read
    Advertisement

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা প্রচারবিমুখ। কথার চেয়ে কাজে বিশ্বাসী। অন্তরালে থেকে মানবিক সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট। তাদের মধ্যে শায়খ ডা: আবদুর রহমান আল-সুমাইত (১৯৪৭-২০১৩) অন্যতম। তার মানবসেবা কার্যক্রম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এসব মানুষ প্রাতঃস্মরণীয়। মিডিয়া এই মহান ব্যক্তিকে উপেক্ষা করেছে এবং আফ্রিকায় তার মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য খুব বেশি পাবলিসিটি দেয়নি। তিনি মহৎ ও হৃদয়বান মুসলমানের মডেল। যিনি বিশ্বে কল্যাণ, প্রেম এবং সম্প্রীতি ছড়িয়ে দিয়েছেন। ত্রাণসাহায্য নিয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গেছেন। এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, আল-সুমাইতের মতো মানুষ সমাজে সুপরিচিত নন। তিনি ছিলেন একজন মহান কর্মবীর।

    আফ্রিকার ২৯টি দেশে মানবসেবার কাজ করে যিনি অমর
    ছবি সংগৃহীত

    তিনি আফ্রিকাতে ১৫ হাজার এতিমের স্পন্সর করেন, ৯ হাজার ৫০০টি আর্টিজান কূপ নির্মাণ করেন, পাঁচ হাজার ৭০০ মসজিদ তৈরি করেন এবং চারটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। এ ছাড়া ৯৫ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেন, নারীদের প্রশিক্ষণের জন্য ২০০ সেন্টার, ৮৬০টি স্কুল ও ১০২টি ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি রমজান মাসে প্রতি বছর আফ্রিকার ৪০টি দেশে ২০ লাখ অভাবগ্রস্ত ও দুস্থদের জন্য ইফতারির আয়োজন করতেন। ৮৪০টি কুরআনি মাদরাসা চালু করেন এবং তিন হাজার ২৮৮ জন শিক্ষক ও দাঈকে নিয়মিত মাসিক ভাতা দিতেন। তার দাওয়াতি কার্যক্রমের ফলে পাদ্রী ও বিশপসহ এক কোটি ১০ লাখ আফ্রিকান ইসলাম কবুল করে। আফ্রিকার প্রতি তার আগ্রহ জেগেছিল যখন তিনি অনুভব করেছিলেন যে, মহাদেশটি অবহেলিত রয়ে গেছে। আল-সুমাইতের অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইথিওপিয়া, ইরিত্রিয়া, জিবুতি, কেনিয়া, মোজাম্বিক, মালাউই, জাম্বিয়া ও অ্যাঙ্গোলা; এ অঞ্চলের আরো অনেক দেশ যারা দুর্ভিক্ষ, ক্ষুধা ও রোগে জর্জরিত। আফ্রিকা মুসলিম এজেন্সিতে তিনি ১৯৮১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। এ সংস্থাটি ৪০টিরও বেশি দেশে বিভিন্ন সামাজিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবিক পরিষেবা প্রদান করে (মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ, দোস্ত জানেমান, ঢাকা, মে ২০২২, পৃষ্ঠা : ১১-১২; কুরআনের আলো, ২২ এপ্রিল, ২০১৫)।

    ওয়ার্ল্ড অ্যাসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথের সহকারী মহাসচিব মোহাম্মদ বাদাহদাহ বলেন, বিশ্বব্যাপী ২০০ কোটি মুসলমানের মধ্যে আমরা আল-সুমাইতের মতো কিছু ব্যক্তিকে খুঁজে পেতে পারি। মুসলমানদের তাদের বেশি সময়, অর্থ ও শক্তি মানবিক কার্যক্রমে ব্যয় করা দরকার। অতীতে মুসলমানরা অনেক অসুবিধা অতিক্রম করে পূর্ব ও পশ্চিমের মানুষের মধ্যে দ্বীনের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমাদের পূর্বপুরুষদের আদর্শ অনুসরণ করে এই মহান ধর্মের বাণী বিস্তৃত করার জন্য সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা চালানো উচিত। বাদাহদাহ আল-সুমাইতকে আফ্রিকার একটি বিশ্বকোষ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এই স্কলার আফ্রিকা মহাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে বিশদ গবেষণা পরিচালনা করেন এবং বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ করেন (দ্য আরব নিউজ, জেদ্দা, আগস্ট, ২০১৩)।

    ইসলাম ও মানবিক সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৬ সালে কিং ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৪৭ সালে কুয়েতে জন্মগ্রহণকারী আল-সুমাইত ১৯৭২ সালে বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন ও সার্জারি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন। ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্রপিক্যাল ডিজিজের ওপর ডিপ্লোমা অর্জন করেন এবং ১৯৭৪-৭৮ সালে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারনাল মেডিসিন ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৮-৭৯ সালে তিনি লন্ডনের কিংস কলেজে হেপাটিক ম্যালিগন্যান্সি নিয়ে গবেষণা করেন। মানবিক কার্যক্রমে তার পূর্ণ সময় উৎসর্গ করার আগে তিনি কুয়েতের সাবাহ হাসপাতালে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। তিনি কুয়েত রিলিফ এজেন্সিরও প্রতিষ্ঠাতা ও ১৯৮৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এর সিইও এবং কেনিয়াতে কুয়েত দূতাবাসের হেলথ অ্যাটাসের সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেন। একজন অল্পবয়স্ক ছাত্র হিসেবে, আল-সুমাইত তার স্কুলের বাইরে এমন একটি দৃশ্য দেখেছিলেন যা সুবিধাবঞ্চিতদের সাহায্য করার জন্য তার আগ্রহের জন্ম দেয় এবং এটি তার জীবনকে বদলে দেয়। তিনি দরিদ্র শ্রমিকদের প্রতিদিন প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখেছেন। তিনি কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় একটি পুরনো গাড়ি কিনে এই শ্রমিকদের বিনাভাড়ায় কর্মস্থলে পৌঁছে দিতেন। আজকের উন্নত বিশ্বেও এটি অনেকের জন্য প্রেরণার উৎস।

    ডা: আল-সুমাইতের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের মূল ক্রিয়াকলাপগুলো তার জনহিতৈষী প্রকৃতিকে তুলে ধরে; সেই সাথে বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, তিনি তার মুসলিম পরিচয় নিয়ে গর্বিত ছিলেন। মাসিক উপবৃত্তির টাকা দিয়ে ইসলামিক বই কিনে তিনি মসজিদে বিতরণ করতেন। তিনি সহপাঠী মুসলিম ছাত্রদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহে এবং ইসলামী পুস্তিকা ছাপানো ও বিতরণের জন্য অর্থ দিতেন। যদিও আল-সুমাইত তার স্বদেশে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন ভোগ করতে পারতেন কিন্তু তার স্ত্রী উম্মে সুহাইব তাকে দুনিয়ার বিলাসিতা ছেড়ে দাওয়াতের পথে আখিরাতের দিকে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দেন। তার প্রথম পরামর্শ ছিল পূর্ব এশিয়ার দিকে। আল্লাহ তাদের পশ্চিম ও আফ্রিকার দিকে পরিচালিত করেন। দাওয়াহ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেলে, উম্মে সুহাইব তাদের প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সব কিছু বিক্রি করে দেন।

    আফ্রিকান দেশের বহু সংখ্যক মানুষ শতাব্দী আগে ইসলাম গ্রহণ করেছিল, কিন্তু তারা সবাই একই দুর্দশায় পতিত ছিল। দুর্ভিক্ষ, খরা ও ঔপনিবেশিক শোষণে জমিগুলো ধ্বংস হয়ে যায় এবং রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে। ওষুধ, স্বাস্থ্যসেবা, এমনকি পানীয়জল খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। বেশির ভাগ উন্নত দেশ এসবের প্রতি চোখ বন্ধ রেখেছিল। এর চেয়েও বিপর্যয়ের ব্যাপার ছিল যে, এ দেশগুলোর মুসলমানদের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান ছিল অতি সামান্য। কেউ কেউ অজু করতেও জানত না। অতীতে কবরপূজা ও ভিক্ষাবৃত্তিসহ প্রচুর পরিমাণে বিদয়াত ও শিরক সংঘটিত হয়েছিল এ অঞ্চলে। আল-সুমাইত দীর্ঘ ও কঠিন পথে যাত্রার উদ্যোগ নেন, যে পথে বহু নবী-রাসূল পাড়ি দিয়েছেন। তিনি নবীদের পথ বেছে নেন। তিনি তার মর্যাদাপূর্ণ চিকিৎসা পেশা জীবন ত্যাগ করেন এবং আফ্রিকার মানুষদের সেবা দেয়ার জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেন- শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে।

    ১৯৮০ সালে, আল-সুমাইত তার সংস্থা ডাইরেক্ট এইডের মাধ্যমে স্কুল, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ক‚প ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি যে বীজ রোপণ করেন তার মধ্যে একটি ছিল অনাথদের কল্যাণ। এই এতিমদের অল্প বয়স থেকেই তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও সহায়তা দিয়ে লালনপালন করেন, যতক্ষণ না তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়, কেউ কেউ এমনকি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে। আল-সুমাইত একটি ব্যাপার লক্ষ করেন। তা হলো যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মধ্যে ইসলাম প্রধান ধর্ম হিসেবে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত মুসলিম জনসংখ্যা থাকা সত্তে¡ও, ওই দেশগুলোর সরকার ও মন্ত্রীরা মূলত খ্রিষ্টান ছিলেন। এর কারণ ছিল, গড় মুসলিম শিশু সবেমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছিল, যখন খ্রিষ্টান শিশু উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে অগ্রসর হয়ে আফ্রিকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ডাক্তার বা রাজনীতিবিদ হিসেবে ফিরে এসে রাষ্ট্রের কর্ণধার বনে যায়। এর সমাধান কী ছিল আল-সুমাইতের? তিনি তাঞ্জানিয়া, জাঞ্জিবার ও কেনিয়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

    এই বীজ বপনের ফল অল্প সময়ের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আল-সুমাইতের মৃত্যুর পর, কুয়েতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি সমাবেশ হয়েছিল, যেখানে মালাউইয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি আল-সুমাইতের সমাধি জিয়ারত করে বলেন, আল-সুমাইতের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত অনাথাশ্রমের তিনি একজন এতিম। প্রায় ৪০ বছর পর, এখন ডাইরেক্ট এইডের ৪০টি আফ্রিকান দেশে ৩৪টি অফিস রয়েছে।

    ডা: আল-সুমাইত তার একজন বিশ্বস্ত বন্ধুর কাছে উল্লেখ করেছেন, ১৯৭২ সালে যখন তিনি ব্রিটেনে অধ্যয়নরত ছিলেন, তখন তিনি কলোরাডোতে একটি কনভেনশনের কথা শুনেছিলেন যেটিতে পোপসহ বেশির ভাগ দেশের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের অ্যাজেন্ডা ছিল আফ্রিকা এবং কিভাবে ২০০০ সাল নাগাদ পুরো মহাদেশে খ্রিষ্টান ধর্মকে অনুসরণ করা যায়। তারা এই কাজটি নিজেদের ওপর নিয়েছিলেন এবং ভ্যাটিকানের পূর্ণ সমর্থনসহ এই মিশনটি পূরণ করার জন্য প্রচুর অর্থ ও সম্পদ সংগ্রহ করেন। তার বন্ধু বর্ণনা করেছেন, আল-সুমাইত এ বিষয়ে আর কোনো বিস্তারিত বলেননি বা তিনি কী করতে চান তা প্রকাশ করেননি- তিনি কেবল কুয়েতে ফিরে যান।

    পরবর্তী তিন দশকে আল-সুমাইত ভ্যাটিকানের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। খ্রিষ্টান মিশনারিরা সংখ্যায় ছিল অনেক এবং ধর্মান্তরিত করার জন্য রুটি ব্যবসার মাধ্যমে এই অঞ্চলের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছিল। সেখানে মুসলমানদের পুরো গ্রাম, যারা খাদ্য ও পানির বিনিময়ে তাদের ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিল। অন্যদিকে, আল-সুমাইত জোর দিয়েছিলেন, লোকেরা তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা করুক। তিনি বর্ণ, ধর্ম বা জাতি নির্বিশেষে যাদের প্রয়োজন ছিল তাদের জন্য খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ করেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চাননি এবং অবিচল ছিলেন যে, ত্রাণসাহায্য ও জনগণের মধ্যে কোনো মাধ্যম থাকবে না। তিনি নবী মুহাম্মদ সা:-এর শিক্ষাকে সঠিকভাবে প্রকাশ করেন এবং বিশ্বকে দেখিয়ে দেন, ইসলামই যেকোনো ধরনের বর্ণবাদ বা পক্ষপাতের একমাত্র সমাধান। স্বাভাবিকভাবেই এটি আল-সুমাইতের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছিল এবং তার জীবনের বিরুদ্ধে অন্তত দু’টি হত্যার চেষ্টা হয়। আল্লাহ তার বান্দাকে রক্ষা করেছেন যাতে তিনি এই বরকতময় কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। ডা: আল-সুমাইত আফ্রিকার ৩৪টি দেশে ভ্রমণ করে মানুষকে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সংগ্রাম থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি আল্লাহর বাণী প্রচার করেন। তিনি পর্যাপ্ত খাবার বা পানি ছাড়াই এবং স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটিয়ে বহু দিন ধরে পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করেন। তিনি জঙ্গলের বিপদ জানতেন, কিন্তু এটি তাকে সামান্যতম দুর্বল করেনি। কেনিয়া ও মোজাম্বিকে মারাত্মক কোবরা এবং অন্যান্য বিষাক্ত সাপের বিচরণ ছিল। তিনি বহুবার বিষধর সাপের মুখোমুখি হন, কিন্তু আল্লাহ তাকে রক্ষা করেন।

    আফ্রিকায় ৩০ বছর এমন একটি দুঃসাহসিক কাজ ছিল যা অর্জনের জন্য খুব কম মানুষই বেঁচে থাকতে পারে। আল-সুমাইত বার কয়েক বিপদের সম্মুখীন হওয়া সত্তে¡ও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান। ইরাকি সামরিক বাহিনী তাকে মৃত্যুর হুমকি দেয় ও হত্যাচেষ্টা চালায়। ১৯৭০ ও ১৯৯০ সালে তাকে দু’বার কারারুদ্ধ করা হয়। কারাবাসের সময় নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত মুহূর্ত ব্যতীত আমি যে মরব না তাতে আমার কোনো সন্দেহ ছিল না।’ আল্লাহর রহমতে তিনি অনেক রোগ-ব্যাধি, ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও নিদ্রাহীন রাত থেকে বেঁচে ওঠেন। পৃথিবীর সবচেয়ে বঞ্চিত গ্রাম ও স¤প্রদায়ের বেদনা ও দারিদ্র্য দূর করার উদ্দেশ্যে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার জন্য তার মিশন ছিল দীর্ঘ ও একাকী। মর্যাদাপূর্ণ কিং ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কারের অর্থ আফ্রিকার শিশুদের দান করে দেন।

    রাত-দিন পরিশ্রমের ফলে হৃদরোগসহ নানা ব্যাধিতে তিনি আক্রান্ত হন। ফলে আফ্রিকা ছেড়ে ডায়ালাইসিস ও অন্যান্য অস্ত্রোপচারের জন্য কুয়েতে ফিরে যেতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসা সহায়তার জন্য জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু তার অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। তিনি কোমায় চলে যান। মাঝে মাঝে তিনি কোমা থেকে জেগে উঠতেন এবং জিজ্ঞাসা করতেন : ‘আফ্রিকাতে দাওয়াহ কেমন ও এতিমদের অবস্থা কী?’ একবার, তিনি কোমা থেকে জেগে ওঠেন এবং তাকে জানানো হয়, তার সংস্থাকে কেনিয়ার বৃহত্তম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। সেই অত্যন্ত বেদনাদায়ক মুহূর্তের মধ্যে তার মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনি নীরবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন (Abu Idris, Islam 21st century)। ২০১৩ সালের ১৫ আগস্ট মানবদরদি এই কর্মবীর ৬৬ বছর বয়সে ইহজগত ত্যাগ করে আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত হন। তিনি নেই কিন্তু তার মানবিক কার্যক্রম এখনো আফ্রিকায় সক্রিয়। কুয়েতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। নিঃসন্দেহে তিনি ২১ শতকের সবচেয়ে স্বল্প পরিচিত এবং মানবতাবাদী চ্যাম্পিয়নদের একজন। তার কাজ স¤প্রচার বা প্রচার করার কোনো ক্ষুধা তার ছিল না এবং বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ তাকে চিনতেও ব্যর্থ হয়।

    সেবাদানকারী ও দাঈদের প্রতি ডা: আল-সুমাইতের উপদেশ, ‘কারো দৃঢ়তা আর ইচ্ছা থাকলে তার পক্ষে লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব, ইনশাআল্লাহ, শর্ত একটিই- আশা ছাড়া যাবে না। ব্যর্থতা এলে আশা ছাড়া যাবে না, কারণ এই ব্যর্থতা বোঝায় যে, আপনি সাফল্যের পথে রয়েছেন। ডোনেশন বা ফান্ড জোগাড়, প্রাসাদ নির্মাণ, পোশাক পরিচ্ছদ আর গাড়ি কেনার মধ্যে সত্যিকারের সুখ নিহিত নেই, বরং অন্যদের হৃদয়ের মাঝে আনন্দ এনে দিতে পারার মধ্যেই সুখ রয়েছে।’ এই অবিশ্বাস্য মানুষটির জীবন থেকে অনেক শিক্ষা পাওয়া যায় যা আল্লাহর পথে দাওয়াতি কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারীদের প্রেরণা জোগাবে। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, শায়খ আল-সুমাইতকে যেন নবী ও সালেহীনদের সাথে জান্নাতের সর্বোচ্চ আবাস নসিব করেন, আমিন।

    লেখক : ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও গবেষক
    [email protected]

    টানা এক বছর ঘরকে মশামুক্ত রাখতে খরচ করুন মাত্র ৫ টাকা

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ২৯টি অমর আন্তর্জাতিক আফ্রিকার করে কাজ দেশে মানবসেবার মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার যিনি শায়খ ডা: আবদুর রহমান আল-সুমাইত
    Related Posts
    Gaza Aid

    আকাশ থেকে গাজায় ত্রাণ ফেলছে জর্ডান ও আমিরাত

    July 28, 2025
    shop

    শিশুটির জন্মের সময় একটি সাবানের সমান ওজন ছিল

    July 27, 2025
    ভিসা ছাড়া প্রবেশের

    ভিসা ছাড়া প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছে যে দেশ

    July 27, 2025
    সর্বশেষ খবর
    us golden visa step by step

    US Golden Visa: Step-by-Step Guide to the EB-5 Immigrant Investor Program

    Uranus hotter

    Uranus Shatters Temperature Myths: Internal Heat Discovery Rewrites Solar Science

    Supermassive Games layoffs

    Supermassive Games Confirms 36 Layoffs, Delays Directive 8020 to 2026

    US-EU trade deal

    U.S., EU Avoid Tariffs with $600B Investment, $750B Energy, 15% Import Tax

    Vivo V60

    Vivo V60 Launch Imminent as Certification Listings Surface: August Debut Expected

    TikTok art project scam

    TikTok Art Project Scam: Fake E-Checks Target Unsuspecting Users, FTC Warns

    Jenna Marbles now

    Where Is Jenna Marbles Now? Inside Her Life After YouTube

    moon base

    South Korea Targets Permanent Moon Base by 2045 with KASA Space Agency

    Clive Barker's Hellraiser: Revival

    Clive Barker’s Hellraiser: Revival Officially Announced as Survival Horror Game

    HBO Max rock documentaries

    HBO Max Rock Documentaries Spotlight: Billy Joel and Big Star Stories Unfold

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.