জুমবাংলা ডেস্ক : হ্যাঁ, আমিও লিখেছিলাম- ‘এই নিরীহ পোস্টের জন্য প্রাণ দিতে হলো ছেলেটাকে?’ কথাটা বলার সময় আমার একবারও মনে হয়নি পোস্ট নিরীহ না হলে কি মেরে ফেলা অন্যায় হতো না?
রঞ্জন নন্দী দাদার একটা লেখা পড়ে নিজের মধ্যে এই মেনে নেয়ার প্রবণতা লক্ষ করে অবাক হয়ে গেলাম। তাই তো! আমরা মেনে নিয়েছি নাস্তিকতা বিষয়ে পোস্ট দিলে মেরে ফেলা যেতে পারে, ধর্মবিরোধী পোস্ট দিলে মেরে ফেলা যেতে পারে, সমকা’মিতা বিষয়ে পোস্ট দিলে মেরে ফেলা যেতে পারে।
আমরা মেনে নিতে নিতে এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি যে ‘নিরীহ’ একটা পোস্টের জন্য ‘ধার্মিক’ একটা ছেলেকে মেরে ফেলা হলে আমরা অবাক হই এখনো। হয়তো কিছুদিন পর তাও হবো না।
আবরার হ’ত্যায় যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের সবাই হয়ত অভিজিত হ’ত্যায় কষ্ট পাননি।
এই দুই জন মানুষের মধ্যে কিছু পার্থক্য অবশ্যই আছে। অভিজিত নাস্তিক ছিলেন, আবরার ধার্মিক ছিল। অভিজিত বয়স্ক ছিলেন, আবরার বাচ্চা ছিল। অভিজিত বিখ্যাত ছিলেন, আবরার সাধারণ একজন ছাত্র ছিল। অভিজিত মোটা মোটা বইতে সৃষ্টি সম্পর্কে নিজের মত এবং বৈজ্ঞানিক ভাবনা প্রকাশ করেছিলেন, আবরার শুধু ‘নিরীহ’ কিছু স্ট্যাটাস লিখেছিল। অভিজিত খু’ন হয়েছিলেন অপরিচিত খু’নীদের হাতে, আবরার খু’ন হয়েছে সহপাঠীদের হাতে। অভিজিতের খু’নীরা মেধাবী ছিল কী না আমাদের জানা নেই, আবরারের হ’ত্যাকারীরা বুয়েটের মেধাবী ছাত্র। অভিজিতের খুনীরা মৌলবাদী, আবরারের খুনীরা ছাত্রলীগের। কিন্তু এদের হ’ত্যার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। খুনী যে-ই হোক, খু’ন যাকেই করা হোক, যে অজুহাতেই করা হোক (‘কারণ’ শব্দটা ব্যবহার করলাম না, খু’নের কোনো কারণ থাকতে পারে না) তা সমানভাবে ঘৃণ্য হওয়া উচিৎ। খু’নী এবং খু’নের শিকারের পরিচিতি আমাদের মধ্যে অনুভূতির তারতম্য সৃষ্টি করবে কেন?
যে কোনো মানুষের যে কোনো বিষয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করার অধিকার থাকা উচিৎ। যদি তা কারো প্রতি হুমকি না হয় তাহলে রাষ্ট্রও তার এই অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। লেখার জবাব লেখা ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, বিষয়বস্তু যা-ই হোক।
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।