ঢাকার আকাশ আজ যেন কান্না ভুলে গেছে। দুপুর থেকে শুরু হওয়া একটানা বৃষ্টিপাতে শহরের রাস্তায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা, আর মানুষের জীবনে এসেছে একরাশ ভেজা অস্বস্তি। আবহাওয়ার খবর অনুযায়ী, রাজধানীতে গত ৬ ঘণ্টায় ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা আবহাওয়া অধিদফতরের মতে ‘মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত’। আর এখানেই শেষ নয়—রাতেও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা প্রবল।
এই সময়ে, এমন আবহাওয়ার খবর মানুষ শুধু জানতে চায় না, বরং বুঝতেও চায় এর প্রভাব কতদূর বিস্তৃত হবে। আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। আর এ ধরনের বৃষ্টিপাতের প্রভাব শুধু ভৌগোলিক নয়, বরং অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনেও প্রতিফলিত হয়।
ঢাকায় বৃষ্টি: ৬ ঘণ্টায় ২৭ মিলিমিটার, আরও বৃষ্টির আভাস
রাজধানীতে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা আবহাওয়া অধিদফতরের বৃষ্টির শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ‘মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত’। সন্ধ্যা ৭টার সময় দেওয়া সংক্ষিপ্ত পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাতেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সময় ঢাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থেকে অধিকাংশ সময় মেঘে ঢাকা ছিল। হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ ভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০–১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
আরও জানা যায়, সন্ধ্যা ৬টার সময় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩০ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত
আগামীকাল (১৮ জুন) সূর্যোদয় হবে ভোর ৫:১১ মিনিটে এবং সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬:৪৮ মিনিটে।
সারাদেশে ভারী বর্ষণের সতর্কতা: ভূমিধস ও জলাবদ্ধতার শঙ্কা
আবহাওয়া অধিদফতর সম্প্রতি একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও, মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অনেক জেলে জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় পড়েছেন।
সতর্কতা অনুযায়ী আগামী ৩ দিন:
১৮ জুন: দেশের আটটি বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাবদ্ধতা এবং পাঁচটি জেলায় ভূমিধস হতে পারে।
১৯ জুন: বরিশাল, খুলনা, সিলেট বিভাগে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা এবং রংপুর, রাজশাহী বিভাগে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি।
২০ জুন ও ২১ জুন: একই ধারা অব্যাহত থাকবে, এবং তাপমাত্রা খুব বেশি পরিবর্তন হবে না।
এছাড়া, বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ধ্যার মধ্যে ঝড়ের সম্ভাবনা আছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
ঝুঁকিতে কোন অঞ্চল?
অতি ভারী বর্ষণের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা ও সমস্যা:
চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি: ভূমিধস
ঢাকা, খুলনা, বরিশাল: জলাবদ্ধতা
কক্সবাজার, মোংলা, পায়রা: সাগর উত্তাল, বন্দর সংকেত
আবহাওয়ার পরিবর্তনে করণীয়
অতিরিক্ত বৃষ্টির সময় বাসা থেকে বের না হওয়া ভালো
বিদ্যুৎ চমকালে বা বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গায় না থাকা
ট্রাফিক আপডেট নিয়মিত ফলো করা
জরুরি নম্বর সংরক্ষণ রাখা
সতর্কতামূলক নোট:
আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হতে পারে। তাই স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসরণ করা উচিত।
এই পরিস্থিতিতে, আবহাওয়ার খবর জানাটা শুধু তথ্য জানা নয়—এটা জীবন রক্ষার অন্যতম উপায়।
❓FAQs: আবহাওয়ার খবর
১. ঢাকায় কখন ভারী বৃষ্টি হতে পারে?
আজ রাতে ঢাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, দুপুরে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
২. কোন কোন অঞ্চলে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে?
চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য জেলাগুলো—রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান—সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
৩. সমুদ্রবন্দরে সতর্ক সংকেত কত নম্বর?
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
৪. আগামীকাল সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত কবে?
১৮ জুন সূর্যোদয় ভোর ৫:১১ মিনিটে এবং সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬:৪৮ মিনিটে।
৫. এই বৃষ্টিপাত কতটা প্রভাব ফেলতে পারে?
জলাবদ্ধতা, যানজট, ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্ভাবনা রয়েছে; কিছু এলাকায় ভূমিধসও হতে পারে।
৬. কোথা থেকে আবহাওয়ার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়?
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
