জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসার মান উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ৬ দফা দাবিতে অনশন করছেন একই মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুক) অনশনের ঘোষণা দেন থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মহিউদ্দীন রণি। দাবি মেনে নেয়া না হলে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা না পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি, অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা নিয়ে ২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন তিনি। ভিডিও বার্তা দেখে তার হলের প্রভোস্ট, পরিবারের সদস্যরা এবং হলের বড় ভাইয়েরা তাকে স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিতে চাইলে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে মেডিকেল সেন্টারেই অনশনের সিদ্ধান্ত নেন বলে লেখেন তিনি।
তার ৬ দফা দাবিগুলো হলো:
১. মেডিকেল সেন্টারের এন্ট্রি পয়েন্টে ইনফরমেশন ডেস্ক স্থাপন করতে হবে।
২. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক লিফ্ট, র্যাম্প, হুইল চেয়ার ও অন্যান্য এক্সেসোরিজ প্রদান করতে হবে।
৩. মেয়ে শিক্ষার্থীদের অন্তর্বর্তীকালীন শারীরিক সমস্যার সকল চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় টিকা প্রদান করতে হবে।
৪. অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট বা মেশিন স্থাপন করতে হবে।
৫.অতিদ্রুত মেডিকেল সেন্টার কর্তৃক নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার প্রদান ও ক্যান্টিন স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে।
৬. অতিদ্রুত হাইকমোড, তথা হাইলি ডেকোরেটেড স্যানিটেশন সিস্টেমে টয়লেট, বাথরুম তৈরি করতে হবে।
তিনি তার পোস্টে লেখেন, গতকাল আমার পোস্টকৃত ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখে আমার হল প্রোভোস্ট স্যার, বড় ভাইয়েরা এবং পরিবারের সবাই আমাকে স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিতে চাচ্ছেন। তাদের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। কিন্ত আজ যদি আমি এখান থেকে চলে যাই তাহলে এই মেডিকেল সেন্টারের পরিবর্তন আর কখনোই আসবে না। আধুনিকায়ন আর কখনোই হবে না। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি প্রয়োজনে একটি পা বিসর্জন করার জন্য প্রস্তত। তবুও আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন না দেখে যাবো না।
তিনি আরও লেখেন, গতকাল এই মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক মহোদয় এসেছিলেন এবং তার কাছে সব চাওয়া পাওয়া উপস্থাপন করলে তিনি তার সীমাবদ্ধতা এবং অপ্রতুলতার কথাও স্বীকার করেন। কিন্ত আমি তাদের কথায় কনভিন্স হতে পারছি না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ১০০ বছর। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল ফি জমা না দিয়ে পরীক্ষার হলে বসতে পারে না। পরীক্ষা দিতে পারে না। ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কমিউনিটি মেডিকেল সেন্টার এটা। ১০০ বছর পরেও কিছুই নেই, আমাদের কিছু করার নেই, এই কথাগুলো কেনো শুনবো আমরা?
অনশনকারী শিক্ষার্থী মহিউদ্দীন বলেন, গত ৫ এপ্রিল থেকে আমি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসার জন্য পড়ে আছি। কিন্তু এখানে কোনো সুব্যবস্থা নেই। আগামী ১২ ঘণ্টার ভেতর যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার দাবি পূরণের নিশ্চয়তা না দেন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ শুরু না করেন তা হলে আমি এখানেই থাকবো। আমি আমরণ অনশন চালিয়ে যাবো। সেটা যে পর্যায়েই যাক না কেনো! আমি ইতোমধ্যে আমার ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। যদি এখান থেকে আমাকে বের করতে হয় তবে আমার লাশ বের করতে হবে। আমি কোনোভাবেই এখান থেকে সরবো না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।