বিনোদন ডেস্ক : ‘জাস্টিস ফর সুশান্ত’ হলে ‘জাস্টিস ফর রিয়া’ নয় কেন? অপরাধ প্রমাণের আগেই অভিযুক্তকে দোষী ঠাউরে নরকযন্ত্রণা দেওয়ার অর্থ কী? সামনে বসা খবরের চ্যানেলের সাংবাদিককেই যেন প্রশ্নগুলো ছুড়ে দিলেন তিনি। তিনি মানে সুশান্ত সিং রাজপুত রহস্যমৃত্যু মামলায় মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তী।
সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া থেকে শুরু করে তার আর্থিক সম্পত্তির হেরাফেরি এমনকী তাকে মাদকের নেশা ধরানোরও অভিযোগ রয়েছে যার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) প্রয়াত অভিনেতার বাবা কে কে সিং বলেন, রিয়াই আমার ছেলেকে বিষ দিয়ে খুন করেছে। ওকে গ্রেপ্তার করা হোক।
বিষয়টির তদন্তে এবার আসরে নেমেছে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো-ও। শোনা যাচ্ছে, রিয়া মাদক সেবন করতেন কি না তা জানতে দ্রুত রক্তের নমুনা সংগ্রহ করবেন তারা। এদিন প্রবাসী বাঙালি অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করেছে এনসিবি।
অভিযোগ, তিনি ও তার সহযোগীরা মাদকের জন্য সুশান্তের অর্থ নয়ছয় করতেন। এদিন অবশ্য সর্বভারতীয় চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিয়া ব্যঙ্গের সুরে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্ত অভিযোগ আনাটাই শুধু বাকি ছিল।
তার সঙ্গে আলাপ হওয়ার আগে থেকেই সুশান্ত মারিজুয়ানার নেশা করতেন বলে জানান রিয়া।
প্রয়াতের পরিবারের অবশ্য অভিযোগ, তার অর্থ জলের মতো খরচ করতেন রিয়া। শোনা যাচ্ছে, যুগলের ইউরোপ-সফরের খরচেরও গোটাটা দিয়েছিলেন সুশান্ত। সেখানে সঙ্গী ছিলেন রিয়ার ভাই শৌভিক-ও। দিদি ও তার প্রেমিকের সঙ্গে কেন বিদেশসফরে গিয়েছিলেন শৌভিক?
অভিনেত্রীর জবাব, আমার ভাইয়ের সঙ্গেও রীতিমতো সখ্য ছিল সুশান্তের। তা এমনই যে শৌভিককে আমার সতীন বলে হাসিঠাট্টা করতাম মাঝেমধ্যে। ও যাওয়া নিয়ে দোটানায় ছিল। সুশান্ত বার বার বলাতেই পরে আসে শৌভিক।
আর সফরের খরচ? ২৮ বছরের তরুণীর বক্তব্য, প্যারিসে তাকে এক ফ্যাশান শোয়ে যোগদানের জন্য নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল একটি পোশাক সংস্থা। তারাই তার বিমানের টিকিট ও হোটেলে থাকার বন্দোবস্ত করে। কিন্তু সুশান্ত চেয়েছিলেন, সে সুযোগে ইউরোপ-সফর সেরে ফেলবেন। তাই তিনিই সে টিকিট বাতিল করে নতুন টিকিট কাটেন।
রিয়ার দাবি, কয়েক বছর আগে প্রাইভেট জেটে ছ’জন পুরুষ বন্ধুকে নিয়ে থাইল্যান্ডে গিয়েছিল ও। ৭০ লক্ষ টাকা খরচ হয় সেখানে। কেউ কি সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল? ও নিজের জীবন রাজার মতো কাটাতো।
তাহলে পরিবারের নিশানায় রিয়া কেন? সুশান্তের পরিবার যে তাকে প্রথম থেকে পছন্দ করে না, সে কথা এদিনও জানান রিয়া। সঙ্গে দাবি, সুশান্তের বাবা তার মাকে অনেক অল্প ছেড়ে চলে যাওয়ায় তার সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো ছিল না অভিনেতার। তবে সে সব সমীকরণ ভুলে রিয়া চাইতেন, প্রিয়জনদের সঙ্গে যেন সুসম্পর্ক তৈরি হয় সুশান্তের। যে প্রেমিকের জন্য এত চিন্তা, সেই তাকে কেন ৮ জুন ছেড়ে গেলেন রিয়া?
তার দাবি, সুশান্তই চলে যেতে বলেছিলেন তাকে। সে সময় তিনিও থেরাপি করাচ্ছিলেন বলে জানান রিয়া। ৮ জুন সুশান্ত তাকে জানান, দিদি অর্থাৎ মিতু সিং আসছেন। রিয়া যেন বাড়ি ছেড়ে চলে যান। এরপরের ছ’দিন কী ঘটে, দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর সঙ্গে অভিনেতার মৃত্যুর কী যোগ, এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ আঁধারে তিনি। একটি ব্যাপার অবশ্য নিশ্চিত করছেন তিনি। ২০১৩ সালে প্রথম অবসাদে আক্রান্ত হন সুশান্ত। তারপর ঠিক থাকলেও শেষের ক’মাস ফের ওষুধ খাচ্ছিলেন অভিনেতা।
অর্থাৎ অভিযোগগুলো সারবত্তাহীন। অথচ সে সবের ভিত্তি করে গত কয়েক মাস যা চলছে, তাতে তিনিও আত্মঘাতী হওয়ার কথা ভেবেছেন একাধিকবার, সংবাদমাধ্যমে স্বীকারোক্তি বিহ্বল রিয়ার।
তার কথায়, আমার বাবা প্রাক্তন সেনা অফিসার, মা গৃহবধূ যিনি হয়তো এবার হাসপাতালে ভর্তি হবেন। ভাই হয়তো আর কলেজে সুযোগ পাবে না।
কারণ? প্রমাণহীন অভিযোগ। সত্যিই কি বলিউড মাফিয়াদের ষড়যন্ত্রের অংশ নন তিনি? বিহ্বল রিয়া এ প্রশ্নের উত্তরে যেন খানিক কৌশলী হয়েই অভিনেত্রী সঞ্জনা সাংঘির নাম তুললেন। জানালেন, #মিটুর সময়ে সঞ্জনাকে জড়িয়েই সুশান্তের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা হয় যা অভিনেতাকে সাংঘাতিক বিচলিত করেছিল।
কঙ্গনা রানাওয়তের অবশ্য দাবি, সুশান্ত বলিউডের নোংরা গোপন কথাগুলো জেনে গিয়েছিলেন। তার জেরেই এই পরিণতি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।