মঙ্গলবার (১৫ জুন) রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্যাইবুনাল আদালতে নবম শ্রেণীর ছাত্রীর বাবা এবং দশম শ্রেণীর ছাত্রীর বোন বাদী হয়ে নারী শিশু ও নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (১) ধারায় পৃথকভাবে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত রাজবাড়ীর পাংশা মডেল থানার ওসিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত সাধু বাবা পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের প্রাণপুর গ্রামের ভোলা প্রামাণিকের ছেলে সবুর প্রামাণিক।
ভুক্তভোগী দশম শ্রেণির ছাত্রী জানান, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে নিজের বোনের বাড়িতে রয়েছেন। একদিন ওই বাড়িতে সবুর এসে তার বোন ও দুলাভাইকে বড়লোক করে দেয়ার প্রলোভন দেখান। একই সঙ্গে ছাত্রীকে সবুরের বাড়িতে কথিত জিনের আসন বসানোর কথা বলেন। আর এ আসর না বসালে বড় ক্ষতি হবে বলে ভয় দেখান।
তিনি আরও জানান, গত মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে সবুরের বাড়িতে জিনের আসর বসান তিনি। এ সময় সবুর প্রথমে তাকে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে বলেন। পরে নামাজ শেষ করতেই ঘরের আলো নিভিয়ে দেন তিনি। এ সময় সাধু বাবা সবুর একটি কালো রঙের জুব্বা পরে তার সামনে আসেন। একই সঙ্গে শরীরে হাত দেন। তখন বাধা দেয়ায় সবুর তাকে বলেন, ‘আমি এখন জিন সবুর রূপে তোমার কাছে এসেছি, আমাকে খুশি করে দাও, আমার খায়েশ মিটিয়ে দাও, তোমার মনের সকল আশা পূরণ হবে’।
ভুক্তভোগী নবম শ্রেণির ছাত্রী জানান, কথিত সাধু সবুর আমাকেসহ আমাদের পরিবারের সদস্যদের জিন ও পরীর ভয় দেখায়। এর অংশ হিসেবে গত মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে সবুর তার বাবাকে বলেন, এক গ্লাস পানি নিয়ে আমাকে বাড়ির পাশে থাকা একটি তাল গাছের নিচে যেতে। আমি সেখানে গেলে নানা ধরনের কথা বলে এবং সে জোর করে আমার হাত বেঁধে ফেলে ও ধর্ষণ করে। এ সময় আমি চিৎকার দিতে গেলে সে আমাকে ভয় দেখায়। জিন না কি আমার বাবাকে মেরে ফেলবে এবং এ কথা কাউকে বললে আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে। তাকে টানা ৪১ দিন জিনের খায়েশ মেটাতে হবে। আর এ খায়েশ মেটালেই আমাদের ভাগ্যর পরিবর্তন হয়ে যাবে। এ সব কথা বলে তাকে দুই বার ধর্ষণ করে।
পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন জানান, ওই সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকেই ভণ্ড সাধু সবুর পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।