আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তালেবান কাবুল দখল করার সময়ই দেশ থেকে পালান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। আর তাকে আশ্রয় দিয়েছে আরব আমিরাত। খবর ডয়চে ভেলের।
তিনদিন পর অবশেষে খোঁজ পাওয়া গেল তার। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে আশ্রয় দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বুধবার তারা লিখিতভাবে জানিয়েছে, মানবিকতার খাতিরেই তারা গনিকে আশ্রয় দিয়েছে।
প্রথমে তিনি তাজাকিস্তান যেতে চেয়েছিলেন। তারা আশ্রয় দেয়নি। পরে শোনা গেছিল, তিনি ওমানে আশ্রয় নিতে চান। তবে এখন আমিরাত জানিয়েছে, গনি তাদের আশ্রয়ে আছেন।
যদিও এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্বের তালেবান শাসনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল আমিরাত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতির অনেক অঙ্কই বদলে যায়। এবার তালেবানের বিরাগভাজন হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও আমিরাত গনিকে আশ্রয় দিয়েছে।
তালেবান যখন শাসনক্ষমতা দখল করছে, তখন দেশ ছেড়ে এভাবে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে আফগানিস্তানে গনির প্রবল সমালোচনা হচ্ছে। কারণ তিনি প্রচুর মানুষকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়ে পালিয়েছেন। আমিরাত থেকে অবশ্য সাফাই দিয়েছেন গনি।
ফেসবুকে একটি নয় মিনিটের ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। ওখানে থাকলে আমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হতো। আরও একজন প্রেসিডেন্টকে ল্যাম্পপোস্টে ঝুলতে দেখতেন আফগান জনতা।
এর আগে নাজিবুল্লাহকে পিটিয়ে মেরে ল্যাম্পপোস্টে ঝুলিয়ে দিয়েছিল তালেবান।
তার কট্টর বিরোধী আবদুল্লা আবদুল্লা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এখন সরকার গঠন নিয়ে তালেবানের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
গনি বলেছেন, সরকার গঠনের উদ্যোগে তার সমর্থন আছে। সরকার গঠন করতেই হবে।
তিনি জানিয়েছেন, আমি কাবুলে ফেরা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি। আমি চাই আফগানবাসী ন্যায় পান এবং প্রকৃত ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক।
গনি দাবি করেছেন, তালিবান যে কাবুলে ঢুকবে না, এমন চুক্তি ছিল। কিন্তু রবিবার বিকেলে তিনি খবর পান, তালেবান একেবারে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের প্রবেশদ্বার পর্যন্ত চলে এসেছে।
তার কথায়, এটা কোনোভাবেই আফগান সেনার জন্য হয়নি। এর জন্য দায়ী প্রভাবশালী রাজনীতিক ও কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী দেশগুলোর ব্যর্থতাও এর অন্যতম কারণ।
গনি পালিয়ে যাওয়ার পরেই রাশিয়া অভিযোগ করেছিল, গনি প্রচুর অর্থ নিয়ে পালিয়েছেন। প্লেন বোঝাই করে অর্থ নিয়েছেন তিনি। রানওয়ের পাশেও অর্থ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।
গনি বলেছেন, এটা একেবারে বাজে কথা। তিনি কিছু জামাকাপড় ছাড়া আর কিছুই নিতে পারেননি। একটা বইও নয়। অর্থ আনলে আমিরাতে চেকিংয়ে তা ধরা পড়ত।
আমিরাত এর আগেও দেশ ছেড়ে আসা সর্বোচ্চ রাজনীতিকদের আশ্রয় দিয়েছে। ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলুক শিনাওত্রা, গত বছর স্পেনের রাজা হুয়ান কার্লোসকে আশ্রয় দিয়েছে তারা। পাকিস্তানে ফেরার আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোও আট বছর আমিরাতে ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।