আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হরমুজ প্রণালির দ্বীপ নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সঙ্গে বিরোধে চীনের অবস্থান নিয়ে আপত্তি তুলেছে প্রথাগত মিত্র ইরান। বার্তাটি পৌঁছে দিতে ইরানে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হয়েছিল।
তেহরান ও বেইজিং ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় রাষ্ট্রদূতকে তলবের বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
পারস্য সাগর এবং ওমান উপসাগরকে সংযোগকারী হরমুজ প্রণালিতে অবস্থিত গ্রেটার তুনব, লেসার তুনব ও আবু মুসা দ্বীপ।
ভূখণ্ডগুলো ১৯৭১ সাল থেকে শিয়া মুসলিম দেশ ইরানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দ্বীপগুলোর মালিকানা দাবি করে সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ ইউএই। ওই অঞ্চলের অন্য সুন্নি মতাবলম্বী আরব রাষ্ট্রগুলো এই ইস্যুতে ইউএইর সমর্থক।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং সৌদি আরব সফরে গিয়ে গত শুক্রবার আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর মধ্যে ছিলেন উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) সদস্যসহ আরব দেশগুলোর নেতারা। এরপর যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, তা-ই ইরানের আপত্তির মূল কারণ। চিনপিংয়ের সফরে উঠে এসেছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিও।
চীনা ও আরবের নেতাদের ওই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, চীন আঞ্চলিক ইস্যুতে ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং আন্তর্জাতিক বৈধতা অনুযায়ী সমাধানের জন্য’ সবার প্রতি আহ্বান জানায়।
ইরান মনে করছে, বিবৃতিতে তেহরানের অবস্থানকে খাটো করা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও অন্য কিছু ইস্যুতে চীনের অবস্থান নিয়ে নানা কথা সামনে এসেছে, যা হয়তো তেহরান সহজভাবে নেয়নি।
তবে ‘প্রতিবাদ’ কিংবা ‘নিন্দা’ জানানোর ক্ষেত্রে তেহরান যেভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের ‘তলব’ করে, চীনের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তেহরান বলেছে, চীনা রাষ্ট্রদূতকে শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘সাক্ষাতের জন্য ডাকা’ হয়। এ সময় চীনা দূতকে ‘দৃঢ় অসন্তোষের’ কথা জানানো হয়।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ানের এই বিষয়ক মন্তব্যে দেশটির অসন্তুষ্টি প্রকাশ পেয়েছে। টুইটারে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ‘দ্বীপগুলো ইরানের বিশুদ্ধ ভূমির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং তেহরান তার ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা করতে দ্বিধা করবে না। ’
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, শুধু ফারসি ভাষায় লেখা ওই টুইটে মন্ত্রী চীনের নাম উল্লেখ করেননি। অথচ চীনের অখণ্ডতার প্রশ্নে অতীতে টুইট করার সময় তিনি ফারসি ও চীনা উভয় ভাষায় টুইট করেছিলেন।
ইরানে চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বেইজিং ও তেহরান পরস্পরের ঘনিষ্ঠ মিত্র। গত বছরই তারা ২৫ বছর মেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। ইরান বলেছিল, ওই চুক্তি এই বছর বাস্তবায়নের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। সূত্র : আলজাজিরা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।