আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আরব আমিরাতে বৃষ্টি খুবই বিরল ঘটনা। মরুভূমির দেশটিতে মেঘের কমতি নেই। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে বৃষ্টি পড়ার আগেই তা বাষ্প হয়ে যায়। সমস্যা সমাধানে একটি প্রকল্প চালু করেছে তারা। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন বিপজ্জনক উড্ডয়ন।
৪৮টি কার্টিজ ভর্তি লবণ দিয়ে অ্যান্ডার্স মার্ড মেঘকে বৃষ্টিতে রূপান্তর করবেন। কাজটি করার জন্য আজকের দিনটি ভালো। অপারেশন শুরুর আগে শেষবার দেখে নিচ্ছেন সব। বর্ষণের জন্য এই ৫৭ বছর বয়সী সুইডিশের হাতে আছে মাত্র তিন ঘণ্টা। আর পদ্ধতিও জটিল।
তিনি বলেন, মেঘের ভেতর কোনো কিছু প্রবেশ করানো আসলে আমার মতো পাইলটের জন্য স্বাভাবিক না। কারণ সারাজীবন যাত্রীদের সুবিধার জন্য মেঘকে এড়িয়ে চলেছি। অথচ এখন মেঘের ভেতরে না ঢুকলেও এর কোল ঘেষে উড়ব, যা বেশ অনেকটা ঝাকি তৈরি করবে।
মরুভূমি থেকে মেঘের দৃশ্য অস্পষ্ট ও তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ এই মিশনের ওপর প্রত্যাশা অনেক। আমিরাতে পানির অভাব। অথচ দুবাইয়ের মতো চকচকে মহানগরীতে প্রচুর পানি খরচ হয়। বিকশিত হচ্ছে নির্মাণ শিল্প। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার পরও প্রতি বছর আট লাখ মানুষ তেল সমৃদ্ধ এই ভূমিতে আসেন।
মরুভুমিতে কৃষিকাজ আরো প্রহসন হয়ে উঠেছে। সালাহ আল হামাদি পাঁচ বছর আগে অবসর নেন। এরপর থেকে কৃষিতে মনোযোগী হবার চেষ্টা করেন। দুবাই উপকণ্ঠে ছোট জমিতে ডুমুর, ডালিম, ভুট্টা ও খেজুর চাষ করেন ৬৩ বছর বয়সী সালাহ। তিন শ’ মিটার গভীর কূপ থেকে পানি আনেন তিনি। প্রতি বছর পানির স্তর আরো নিচে নামছে। তিনি দিনে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা ফলের বাগানে পানি দিতে পারেন। প্রচণ্ড গরমে অনেক ফল শুকিয়ে যায় এবং বিক্রি করতে পারেন না। তাই আল্লাহর ওপরই ভরসা তার।
আবুধাবির ন্যাশনাল সেন্টার ফর মেটিওরোলজিতে বৃষ্টির জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আহমেদ আল কামালি তার দলের কাছে আবহাওয়ার তথ্য উপস্থাপন করছেন এবং কখন কোন মেঘ কোথায় উপস্থিত হবে সে সম্পর্কে পূর্বাভাস দিচ্ছেন। এমন নয় যে আমিরাতে বৃষ্টি হয় না। হয় কিন্তু খুবই কম। গবেষকরা চারটি প্রপেলার প্লেন দিয়ে মেঘের মধ্যে সোডিয়াম ও পটাসিয়াম ক্লোরাইড নিক্ষেপ করেন। যুক্তি হলো লবণের কণা পানিকে আবদ্ধ করে, ভারী হয় এবং বৃষ্টি হয়। তাই অন্য কোথাও তেমন বৃষ্টি হয় না। ১৫ বছরের অনুশীলনের ফল উৎসাহব্যঞ্জক।
আবহাওয়াবিদ কামালি বলেন, সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় আমরা দেখছি যে কিভাবে আরো বেশি বৃষ্টিপাত ঘটানো যায়। দেখা গেছে, মেঘে লবণ ছোড়ার ফলে গড়ে ২৩ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়। এমনকি তা ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি হতে পারে।
ঘন মেঘ জড়ো হচ্ছে আকাশে। আর সময় নেই হাতে। আহমেদ আল কামালি বার্তা পাঠান অ্যান্ডার্স মার্ডকে। তাকে একগুচ্ছ ঘনীভূত মেঘের সন্ধান দেন।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।