স্পোর্টস ডেস্ক: তার মতো মাস্টারক্লাস কোচও ভুলটা করে বসলেন। এরই নাম বিশ্বকাপ। সাপ-লুডুর খেলা। কখন যে কে সাফল্যের মই বেয়ে ওপরে উঠে যাবে, আবার কখন ওপর থেকে নিচে নামবে বলা মুশকিল। কিন্তু যে ছকে লিওনেল স্কালোনি বেশি সফল ছিলেন, গতকাল ছক ঠিক থাকলেও যোদ্ধা নামানো যে ঠিক হয়নি। যে কারণে সৌদি-শামুকে পা কাটতে হলো মেসিদের।
অফসাইডে ছন্দছাড়া
পেনাল্টি থেকে মেসি গোল করার পরও দলটা উজ্জীবিত ছিল। কিন্তু একের পর এক যখন অফসাইডে পড়ে গোল বাতিল হতে থাকে, তখন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের মুখে আঁধার। হতাশার ভয়ংকর চাপ তাদের আঁকড়ে ধরে। মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ শানালেও বল ডি বপ খুব একটা পেরোয়নি। ভয় একটাই, আবার যদি অফসাইড হয়। নিখুঁত সেমি অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি যে নাছোড়বান্দা। এতদিন হয়তো সহকারী রেফারিরা ৭০-৮০ ভাগ অফসাইড ধরতে পেরেছিলেন। কিন্তু এখন শরীরের কোনো অংশও যদি আগে চলে যায়, তাহলেই অফসাইডের নোটিশ। এই ফাঁদ থেকে বাঁচতে শেষ পর্যন্ত আক্রমণের রশিটা দুর্বল হয়ে যায়।
রক্ষণভাগের অঙ্কে ভুল
স্কালোনি বোধ হয় ধরে নেন প্রতিপক্ষ সৌদি আরব। কোনোমতে খেললেই হবে। কিন্তু কাতারের কন্ডিশন যাদের পরিচিত, যাদের গ্যালারির সিংহভাগ দর্শক, তারা যে সহজে ছাড়বে না পরে টের পান স্কালোনি। ততক্ষণে ভুলটাও করে ফেলেন সেন্টারব্যাক ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। টটেনহামের এই খেলোয়াড়ের মধুচন্দ্রিমা আগেই শেষ হয়েছিল। চোটে পড়ার পর ছিলেন না তেমন ফর্মে। এরপর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ দলে ঢোকা নিয়েও শঙ্কা ছিল। টেনেটুনে ফিটনেস টেস্টে পাস করা সেই রোমেরোর ভুলেই দুটি গোল হজম। একটি তাঁর চোখের সামনে দিয়ে জালে যায়, আরেকটি তাঁর পজিশনের পথ দিয়ে। যদিও আরেক সেন্টারব্যাক ওতামেন্ডিও পারেননি অবিশ্বাস্য কিছু করতে। যদিও কাজটা তাঁর করারও না। মূল দায়িত্ব ছিল রোমেরোর। যাক তাঁর ভুল দেখে পরে তাঁকে উঠিয়ে দারুণ ফর্মে থাকা লিসান্দ্রোকে নামান স্কালোনি। ততক্ষণে ম্যাচের চিত্রনাট্যের লেখাটা শেষ পৃষ্ঠায়।
মাঝমাঠে ফর্মহীনে আস্থা
মাঝমাঠ নিয়ে আগে থেকেই চিন্তায় ছিলেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। সেট খেলোয়াড় লো সেলসো ছিটকে যাওয়ার পর এই লাইনটা সোজা রাখতে তিনি পারদেসকেই সেন্ট্রালে রাখেন। কিন্তু পারদেস থেকে এনজো ছিলেন এই পজিশনের যোগ্য। পরে যেটা টের পান তিনি। কিন্তু ওই একই অবস্থা। কথায় আছে, সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ে দশ ফোঁড়ের চেয়ে কার্যকর।
পাসিংয়ে গোলমাল
পাসিংয়ে এত ভুল আর্জেন্টিনা করবে অনেকের হয়তো চিন্তাও ছিল না। বারবার বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে তারা। বিশেষ করে মাঝমাঠে। গত কোপা আমেরিকায়ও যে ডি পল ছিলেন তাদের ভরসার নাম। তাঁকে গতকাল দেখা গেল ভিন্ন অভিনেতা হিসেবে। বল পাওয়ার পর আর রাখতে পারছেন না, কখনও প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড় বল নিয়ে উল্টো আক্রমণে উঠেছে।
ক্রস কাজে লাগাতে না পারা
দুই উইং থেকে বক্সে আসা ক্রসগুলো সেভাবে কাজে লাগাতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ম্যাচে ৯টি কর্নার পেলেও সেগুলো থেকে একটিও পরিষ্কার গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। অন্যদিকে গোলে মাত্র দুটি শট নিয়েই দুবার লক্ষ্য ভেদ করেছে সৌদি আরব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।