আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার সরকার ই-স্কুটারের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এই বাহনের ব্যাটারির মূল উপাদান নিকেল। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের অন্যতম বড় নিকেল উৎপাদক। কিন্তু এত বিপুল নিকেল তুলতে গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।
জলবায়ুজনিত সংকট মোকাবিলায় ই-স্কুটার ব্যবহার ভালো হলেও এর কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, ব্যাটারি বর্জ্য বাড়ছে।
ডাব্লিউআইএমএর অপারেশনাল ডিরেক্টর মুহাম্মদ সামিয়ার্তো বলছেন, ইলেক্ট্রিক স্কুটার তৈরির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অবশ্যই ব্যাটারি। আমরা ব্যাটারি দ্রুত চার্জ ও পথের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
বর্তমানে একবার চার্জ দিয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারছে ই-স্কুটার। আর দুই-ব্যাটারি ব্যবস্থায় ১০০ কিলোমিটার যাওয়া যাচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন স্থানে ব্যাটারি চার্জ বা বদলানোর সুযোগ তৈরি করেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তবে ই-স্কুটারের ব্যবহার বাড়লে সমস্যাও আছে।
পিটি নলেন্দ্রো হালিলিন্তার সামুদেরার কর্মকর্তা উইশনু সোহার্দিয়ো জানান, ব্যাটারিতে লিথিয়াম, নিকেল, ম্যাঙ্গানিজ ও কোবাল্ট-অক্সাইড ব্যবহৃত হয়। এগুলোই লিথিয়াম ব্যাটারির মূল উপাদান।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো নিকেল। এটি রিসাইকেল করা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ও সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, সেটি করা না গেলে ব্যাটারি থেকে বিষাক্ত এই রাসায়নিক বের হওয়ার বিপদ রয়েছে।
প্রযুক্তি উদ্ভান বিশেষজ্ঞ আগুস বুদিয়ান্তো বলছেন, এসব ধাতু নদীর পানিতে মিশলে সেখানকার প্রাণী ও উদ্ভিদের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, এটি পিএইচ মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ও নদীর ইকোসিস্টেমের ক্ষতিগ্রস্ত করে। পানিতে থাকা জীবের শরীরে বিষাক্ত পদার্থ ঢুকে যায়। ঐসব জীব খেলে মানুষের শরীরেও তা ঢুকতে পারে।
আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের অন্যতম বড় নিকেল উৎপাদক। দেশটিতে প্রায় ২১ মিলিয়ন টন নিকেল মজুদ আছে। এত বিপুল নিকেল তুলতে গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।
পরিবেশকর্মী ফ্যানি ট্রি জাম্বোরে বলছেন, ইন্দোনেশিয়ায় ইলেক্ট্রিক গাড়ির জন্য জ্বালানি উৎপাদন বাড়ায় বেশি বেশি নিকেল তোলা হচ্ছে। ইলেক্ট্রিক গাড়ির ব্যাটারির মূল উপাদান হলো নিকেল। এখন পর্যন্ত ৯ লাখ হেক্টর জমি থেকে নিকেল তোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই ৯ লাখের মধ্যে ছয় লাখ হেক্টরই বন এলাকায় পড়েছে।
ই-স্কুটার একদিকে পরিবেশবান্ধব, অন্যদিকে এগুলোতে নিকেল ব্যবহৃত হয়, যা তুলতে গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এরপরও ইন্দোনেশিয়ার সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ লাখ ইলেক্ট্রিক গাড়ি নামানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে- যা দেশটির মোট স্কুটারের প্রায় দেড় শতাংশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।