আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সোমবার থেকে ইংল্যান্ডে করোনা বিধি তুলে নেওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে দেশে-বিদেশে সংশয় বাড়ছে৷ জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশে করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ খবর ডয়চে ভেলে’র।
করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে চললেও সোমবার থেকে ইংল্যান্ডে মহামারি সংক্রান্ত প্রায় সব বিধিনিয়ম তুলে নিচ্ছে ব্রিটিশ সরকার৷ অর্থাৎ, মাস্ক, সামাজিক দূরত্বের মতো কোনো নিয়মই আর কার্যকর করা হবে না৷ নাইটক্লাব বা অন্য কোনো জমায়েতে সর্বোচ্চ সংখ্যাও বেঁধে দেওয়া হবে না৷ দৈনিক সংক্রমণের হার প্রায় ৫০,০০০ অতিক্রম করলেও ‘ফ্রিডম ডে’ পালিত হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, বর্তমানে একমাত্র ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলে সংক্রমণের হার আরও বেশি৷
এমন ‘বেপরোয়া’ সিদ্ধান্তের কারণে বিজ্ঞানী মহলের একাংশ ও বিরোধী দল সরকারের কড়া সমালোচনা করছে৷ লেবার পার্টির স্বাস্থ্য বিষয়ক মুখপাত্র জনাথন অ্যাশওয়ার্থ বিজ্ঞানীদের সংশয় উল্লেখ করে বলেন, এমন পদক্ষেপের কারণে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে৷ বিশেষ করে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ করোনা টিকার দুটি ডোজ পাওয়া সত্ত্বেও করোনায় আক্রান্ত হবার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও ২৬শে জুলাই পর্যন্ত নিজেকে অন্য মানুষদের থেকে দূরে রাখছেন৷ ফলে করোনা ভাইরাসের ছোঁয়াচে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিপদ আবার নতুন করে স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ ব্রিটেনে টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য সত্ত্বেও দৈনিক সংক্রমণের হার এক বা দুই লাখ পেরিয়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা আদৌ সম্ভব হবে কি না, সে বিষয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করছেন৷ ইসরায়েল ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশ বিধিনিয়ম শিথিল করার পরেও সংক্রমণের উচ্চ হারের কারণে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে বলে তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন৷
সরকার অবশ্য এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্তে অটল৷ প্রধানমন্ত্রী জনসন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, এখনই করোনা সংক্রান্ত বিধিনিয়ম তুলে নেবার সিদ্ধান্ত জরুরি৷ হেমন্ত বা শীতকালে শীতল আবহাওয়ার কারণে ভাইরাস বাড়তি সুবিধা পাবে৷ তখন এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর করলে আরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে৷ চলতি সপ্তাহে স্কুলের ছুটি শুরু হচ্ছে বলে ধাক্কা সামলে ওঠা সহজ হবে বলে তিনি মনে করেন৷
ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্তে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ বেড়ে চলায় কোনও দেশের পক্ষে বিচ্ছিন্ন থাকা অত্যন্ত কঠিন হবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন৷ জার্মানিতে ইনসিডেন্স মাত্রা গত দশ দিন ধরে একটানা বেড়ে চলেছে৷ বার্লিনের টেকনিকাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা হেমন্ত কালে করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউয়ের পূর্বাভাষ দিচ্ছেন৷ এমন অবস্থা দেখা দিলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান টিকাদান কর্মসূচির গতি আরও বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছেন৷ তাঁর মতে, ডেল্টার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক মানুষের টিকাপ্রাপ্তি করতে পারে৷ এখনো পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৬ শতাংশ করোনা টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ এবং প্রায় ৬০ শতাংশ প্রথম ডোজ পেয়ে গেছেন৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।