আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার আক্রমণের শিকার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা মিখাইলো পডোলিয়াক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভুল পারমাণবিক নীতি’র কারণেই ইউক্রেন যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছে। টুইটারে এক বার্তায় তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক এ খবর জানিয়েছে।
টুইট বার্তায় মিখাইলো পডোলিয়াক লিখেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইউক্রেনকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করতে উৎসাহিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো। বিনিময়ে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। এই সুযোগ নিয়েছে রাশিয়া, শুরু হয় রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হওয়ায় স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিপুল পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ ছিল ইউক্রেনে। ১৯৯৪ সালে এসব অস্ত্র রাশিয়ার হাতে তুলে দিতে সম্মত হয় ইউক্রেন। অবশ্য এসব পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণও ছিল না কিয়েভের।
১৯৯৪ সালে পারমাণবিক অস্ত্র অপসারণ করার বিনিময়ে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করে ওয়াশিংটন, মস্কো ও কিয়েভ। এটি বুদাপেস্ট স্মারক নামে পরিচিত।
এদিকে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের ঝুঁকির কথা উঠে আসছে রুশ কর্মকর্তাদের মন্তব্যে। ক্রেমলিন হুমকি দিয়ে আসছে, রাশিয়ার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে সম্ভাব্য উপায় ব্যবহার করবে মস্কো। পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাব্যতা বেড়ে চলেছে, এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইউক্রেনের যে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্ত ছিল তা পুনরুদ্ধারের কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে একটি সর্বদলীয় প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী রুশ দখলকৃত ইউক্রেনের ক্রিমিয়া, ডনবাস, দক্ষিণ খেরসন ও জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চল পুনরায় কিয়েভকে ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। এমন কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত ওকসানা মারকোভা।
বুধবার এক বিবৃতিতে পডোলিয়াক বলেন, ‘অতীতের ভুলের কথা স্বীকার করতে অনেক সাহস লাগে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের প্রস্তাব একেবারে স্পষ্ট। দুর্ভাগ্যবশত, ইউক্রেনকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করতে উৎসাহী করেছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশ। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভুল পারমাণবিক নীতি ছিল, যার দরুণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপকে আবারও একটি যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হলো।’
তিনি আরও বলেছেন, রাশিয়ার দখলকৃত ভূখণ্ড ফেরত, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি হলো বর্তমানে ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায়।
চলতি মাসের শুরুতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তিনি ব্যক্তিগত দায় অনুভব করেন। ইউক্রেনকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগে রাজি করানোর ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকার জন্য এই দায়বোধ করছেন বলে জানান তিনি।
সূত্র: নিউজউইক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।