জুমবাংলা ডেস্ক : ভোজ্য তেলের মধ্যে পাম তেল তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় এশিয়ার দেশগুলোতে এ তেলের চাহিদা বেশি। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে এবার সেই চিত্র পাল্টে গেছে। সয়াবিনসহ চার প্রধান ভোজ্য তেলের মধ্যে সম্প্রতি সর্বোচ্চ দাম উঠেছে পাম তেলের। বাড়ছে সয়াবিনের দামও।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে সূর্যমুখী তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় এশিয়ার পাশাপাশি ইউরোপের ক্রেতারাও বিকল্প হিসেবে পাম তেল আমদানি বাড়িয়েছেন। আর সে কারণেই বিশ্ববাজারে সর্বোচ্চ দাম উঠেছে পাম তেলের।
ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানান, মার্চে চালান হবে এমন অপরিশোধিত পাম তেলের দাম উঠেছে প্রতি টন প্রায় এক হাজার ৯২৫ ডলার। এর মধ্যে বীমা ও পরিবহন ব্যয়ও রয়েছে। এর বিপরীতে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম পড়ছে এক হাজার ৮৬৫ ডলার। এর পাশাপাশি রেপসিড তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি টন প্রায় ১৯০০ ডলার। কিন্তু ইউক্রেন সংকটে সেখানে বন্দর বন্ধ থাকায় সরবরাহকারীরা সূর্যমুখী তেল দিতে পারছেন না। কৃষ্ণ সাগর দিয়ে বিশ্বের ৭৬ শতাংশ সূর্যমুখী তেল রপ্তানি হয়। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এসব বন্দর সচল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না ব্যবসায়ীরা।
বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকসের হিসাবে দেখা যায়, গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৩.২১ শতাংশ, আর পাম তেলের দাম বেড়েছে ৭.২৪ শতাংশ। গত এক মাসের হিসাবে সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৯.২১ শতাংশ, আর পাম তেলের দাম বেড়েছে ২২.৫৩ শতাংশ।
বৈশ্বিক বাজার থেকে তেল ক্রয়ে যুক্ত মুম্বাইভিত্তিক একজন ব্যবসায়ী জানান, সূর্যমুখী তেল সরবরাহ কমে যাওয়ায় এশিয়া ও ইউরোপের পরিশোধনকারীরা পাম তেল ক্রয় বাড়িয়ে দিয়েছেন। সে কারণেই পাম তেলের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। কিন্তু তাঁরা সয়াবিন তেল কিনছেন না, কারণ এর সরবরাহও সীমিত। খরা মৌসুমের কারণে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ের সয়াবিন উৎপাদন কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুয়ালালামপুরভিত্তিক এক ব্যবসায়ী জানান, এশিয়ার ক্রেতারা সাধারণত পাম তেলই বেশি কেনেন সস্তা ও সরবরাহ সহজ হওয়ায়। কিন্তু এখন সয়াবিন ও সূর্যমুখীর চেয়ে পাম তেলে তাঁদের ৫০ ডলারেরও বেশি গুনতে হচ্ছে। তবে তিনি আশা করেন, ক্রেতারা এপ্রিলে সয়াবিন বেশি কেনবেন তখন পাম তেলের দাম আবার কমে আসবে।
ভারতীয় পরিশোধনকারীরা জানান, বাজারে পাম তেলের বাড়তি যে চাহিদা তৈরি হয়েছে তা মেটাচ্ছে এখন মালয়েশিয়া। ইন্দোনেশিয়া রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা দিয়ে রেখেছে। এ অবস্থায় মালয়েশিয়ার মজুদও কমে যাচ্ছে। তবে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় এ দেশটি বেশি লাভবান হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, ট্রেডিং ইকোনমিকস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।