জুমবাংলা ডেস্ক : বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ডের সিস্টেম আপডেটের কথা বলে ও ওটিপি (One Time Password) নম্বর নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। বেশ কয়েক মাস ধরে একাধিক ব্যাংকের একাধিক গ্রাহক এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী থানায় মামলাও করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার আ্যন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ২ লাখ ১০ হাজার খুইয়েছেন রাজধানীর মনিপুরীপাড়ার বাসিন্দা মোঃ জাহিদুর রহমান আকন্দ (৫০)। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় একটি মামলাও করেছেন।
মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী জাহিদুর রহমান আকন্দ উল্লেখ করেন, তিনি লংকা ব্যাংকের গ্রাহক। সেই সুবাদে প্রায় ক্রেডিট কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন করতেন। সম্প্রতি তার ফোনে একটি কল আসে। অজ্ঞাত কলার নিজেকে লংকা ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জানায়, আমার কাছে থাকা ব্যাংকটির ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড আপডেট করতে হবে। এসময় সে আমার কাছ থেকে কার্ডের বিভিন্ন তথ্য ও কার্ডের পেছনের সিভিভি কোড নম্বর চায়। আমি সরল বিশ্বাসে সেই কোড নম্বর দেই। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যে আমার একাউন্ট থেকে ৭ বার ৩০ হাজার টাকা করে ট্রানজেকশন হয়। এতে মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা মুহূর্তে আমার একাউন্ট থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যায়। পরক্ষণে আমি বুঝতে পারি, অজ্ঞাত কলার ব্যাংকের কেউ নন, প্রতারক চক্র।
শুধু জাহিদুর রহমান-ই নন, তার মতো ক্রেডিট কার্ড প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছেন রাজধানীর ইস্কাটনের বাসিন্দা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গ্রাহক তিনি। প্রতারক চক্র তাকেও কল করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গুলশান শাখার অফিসার হিসেবে পরিচয় দেয় এবং সিস্টেম আপডেটের কথা বলে তার কাছ থেকে ক্রেডিট কার্ডের বিভিন্ন তথ্য ও ওটিপি নম্বর নেয়। এরপর তার একাউন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা বিকাশে নিয়ে যায় প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় তিনি রমনা মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন।
জাহিদুর ও হাসানুজ্জামানের মতো ক্রেডিট কার্ড চক্রের খপ্পরে পড়ে টাকা খুইয়েছেন আবু বক্কর সিদ্দিক, সুমাইয়া বিনতে আব্দুর রবসহ বেশ কয়েকজন। তারাও রাজধানীর ডেমরা ও কদমতলী থানায় মামলা করেছেন।
তাদের মতো এই রকম অসংখ্য ভুক্তভোগী কর্তৃক জিডি কিংবা মামলা করা সত্ত্বেও এই ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি চক্র ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর ভাঙ্গার কালামৃধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল মাতুব্বরের প্রত্যক্ষ মদদে তার বন্ধু দিদার মুন্সি এই ক্রেডিট কার্ড প্রতারণা চক্রের মূলহোতা হিসেবে কাজ করছে। দিদার মুন্সি নিজেকে প্রতারণায় প্রতিষ্ঠিত করে পুরো ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার নেতৃত্ব দিচ্ছে। চেয়ারম্যান রেজাউল মাতুব্বরের বিরুদ্ধে ১টি মাদক মামলা এবং ৪টি প্রতারণা মামলার তথ্যও পেয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) উপ-কমিশনার (ডিসি) তারেক বিন রশিদ বলেন, ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার বিষয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এসব প্রতারণায় কে বা কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।