ইনজেনুইটি হেলিকপ্টার: মঙ্গলে বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ কী?

ইনজেনুইটি হেলিকপ্টার

গত ১৮ জানুয়ারি মঙ্গল গ্রহে বিধ্বস্ত হয়েছিল নাসার পাঠানো ইনজেনুইটি নামের একটি হেলিকপ্টার। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির তথ্যমতে, ২০২০ সাল থেকে মঙ্গল গ্রহের তথ্য সংগ্রহ করছিল হেলিকপ্টারটি। প্রাথমিকভাবে পাঁচবার উড্ডয়নের জন্য পাঠানো হলেও হেলিকপ্টারটি মোট ৭২ বার উড্ডয়ন করেছে। তবে জানুয়ারি মাসে সর্বশেষ উড্ডয়নের সময় ১২ মিটার ওপর থেকে ছবি তোলার পরপরই সেটির সঙ্গে পৃথিবীতে থাকা নিয়ন্ত্রণকক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর পর থেকেই দুর্ঘটনার কারণ জানতে কাজ চলছিল।

ইনজেনুইটি হেলিকপ্টার

দুর্ঘটনার প্রায় ১১ মাস পর অবশেষে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার সম্ভাব্য কারণ জানিয়েছে নাসা। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) ও অ্যারোভাইরনমেন্টের প্রকৌশলীরা হেলিকপ্টারের সর্বশেষ উড্ডয়নের তথ্য পর্যালোচনা করে জানিয়েছেন, নেভিগেশন সিস্টেমের ব্যর্থতার কারণেই ইনজেনুইটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। পৃথিবীতে থাকা নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরে দেখা গেছে, দুর্ঘটনার পর হেলিকপ্টারের রোটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে উড়তে পারছে না হেলিকপ্টারটি।

জেপিএলে ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারের প্রথম পাইলট হাভার্ড গ্রিপ জানিয়েছেন, ১০ কোটি মাইল দূর থেকে দুর্ঘটনার তদন্ত চালানো হচ্ছে। এ জন্য কোনো ব্ল্যাক বক্স বা প্রত্যক্ষদর্শী নেই। ধারণা করা হচ্ছে, হেলিকপ্টারের নেভিগেশন সিস্টেমে ত্রুটি দেখা দেওয়ার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। হেলিকপ্টারটির নেভিগেশন সিস্টেম মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠের ভিজ্যুয়াল বৈশিষ্ট্য শনাক্তের জন্য নকশা করা হয়েছিল।

ফলে হেলিকপ্টারটি সমতল পৃষ্ঠের ওপর অবতরণ করতে পারত। দুর্ভাগ্যজনক ওড়ার সময় হেলিকপ্টারটি জেজেরো ক্রেটার নামের একটি অঞ্চলে অবস্থান করছিল। এ অঞ্চল তুলনামূলকভাবে খাড়া এবং বালুর উপস্থিতি রয়েছে। পৃষ্ঠের উচ্চতা দ্রুত পরিবর্তনের কারণে হেলিকপ্টারের ঘূর্ণমান রোটার ব্লেডের একটি ছিঁড়ে যায়। অপর একটি ব্লেড অত্যধিক বিদ্যুৎ ব্যবহার করে যোগাযোগব্যবস্থার ক্ষতি করেছে। হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হলেও এখনো সক্রিয় রয়েছে। সপ্তাহে প্রায় একবার পার্সিভারেন্স রোভারের সঙ্গে আবহাওয়ার তথ্য আদান-প্রদান করছে হেলিকপ্টারটি।