নাজিম হোসেন, ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে বিবস্ত্র করে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও প্রশাসনের দুটি তদন্ত কমিটি।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট রুমে ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন তদন্ত কমিটির নির্দেশে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়।
প্রথমে আবাসিক হলের তদন্ত কমিটি বেলা সাড়ে ১২ টায় প্রভোস্ট অফিসে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে এবং বিকাল ২ টায় শেষ হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটিও ভুক্তভোগী সেই ছাত্রীর সাথে একই রুমে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুইটি তদন্ত কমিটি পৃথকভাবে প্রায় ৫ ঘন্টা কথা বলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল বলেন, আমরা প্রথম দিনের তদন্ত সম্পন্ন করেছি। একদিনে আমরা প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেছি। তদন্ত স্বার্থে বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি চিঠি প্রেরণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে কারো বিরুদ্ধে যে কোন উন্মুক্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য আহ্বান করেছি। আমরা আশা করি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, আমরা সরেজমিনে ফুলপরীর নির্যাতনের ঘটনা শুনেছি। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরি অন্তরা ও অন্যদের সরেজমিনে জিজ্ঞাসাবাদ করে বক্তব্য সংগ্রহ করবো। এছাড়া যথাসময়ে তদন্ত শেষ করে অপরাধীদেরকে সনাক্ত করতে পারব বলে আশা করছি।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের পর থেকে আমি সম্পূর্ণ নিরাপদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের তদন্ত কমিটি আমার ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত বর্ণনা প্রায় চার পাতা লিখিত আকারে নিয়েছে।তারা হলের গণরুম যেখানে আমাকে নির্যাতন হয়েছে তা তাঁরা ঘুরে দেখেছে। আমি প্রত্যাশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সঠিকভাবে তদন্ত সম্পন্ন করবে এবং অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসেন আজাদ জানান, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি তদন্ত কমিটির সাথে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কথা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তাঁদের কাজ করছে। আমি তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আমি তাঁর পরিবারকে আশ্বস্ত করেছি।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা রাতে টানা চার ঘন্টা নির্যাতন চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফুলপরী নামে এক নবীন শিক্ষার্থীকে। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এই ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।