আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিষিদ্ধ হবে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই)! দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার রাজধানী ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের বলেছেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিটিআইকে নিষিদ্ধ করতে একটি মামলা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এই মামলা করা হবে সুপ্রিম কোর্টে। খবর জিও নিউজের
এতে বলা হয়, পিটিআইয়ের ওপর চাপ বৃদ্ধি করতে দলটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহবাজ সরকার। একইসঙ্গে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬-এর অধীনে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, সাবেক স্পিকার কাসিম সুরি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্যোগের রেফারেন্স ফাইল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তথ্যমন্ত্রী তারার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পিটিআই এবং পাকিস্তান একসঙ্গে সহাবস্থান করতে পারে না। তাই এই দলটিকে নিষিদ্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টে যাবে কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে ক্ষমতাসীন পিটিআই দল ২০২৩ সালের ৯ মে’র সহিংসতায় জড়িত থাকা এবং আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল-আইএমএফের সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তির বিরুদ্ধে পিটিআই দলের সাবেক ও বর্তমান নেতারা জড়িত থাকার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার এই ঘোষণা দেওয়ার আগে ৯ মে সহিংসতায় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশিকে অভিযুক্ত করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী আইএমএফের অর্থায়ন ইস্যু সম্পর্কে বলেন, বিদেশি অর্থায়ন বিষয়ক মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করতে ব্যর্থ হয়েছে পিটিআই। তিনি আরও অভিযোগ করেন পিটিআই দলটি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের কাছ থেকে অর্থ পেয়েছে। কেনো ৬ বছরের জন্য স্টে অর্ডার চাওয়া হয়েছে প্রশ্ন রাখেন আতাউল্লাহ তারার। অর্থায়ন বিষয়ক ওই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করার কিছুই নেই ইমরান খানের দলের।
দলটির কড়া সমালোচনা করে আতাউল্লাহ তারার বলেন, এ দলটির নেতারা ৯ মে’র মামলা, ইদ্দত মামলা অথবা ১৯ কোটি পাউন্ডের মামলায় জড়িত।
তিনি ইমরান খানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি সবচেয়ে খারাপ ফ্যাসিস্ট নেতা। তিনিই মা এবং বোনদের কারাগারে রাখার রীতি অনুসরণ করেছেন। তিনি পিটিআইয়ের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বলেন, সরকারের ধৈর্য ও সহনশীলতাকে দলটি দুর্বলতা হিসেবে নিয়েছে। তবে আর নয়, যথেষ্ট হয়েছে। তারা এই দেশের ভাগ্য নিয়ে অনেক খেলেছেন। যদি এই দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে হয়, যদি জনগণ সামনে এগোতে চান, যদি যুবকরা কর্মসংস্থান চান, যদি উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে চায়, তা হলে পাকিস্তান এবং পিটিআই একসঙ্গে চলতে পারে না।
এর আগে পিটিআইয়ের পক্ষে যাওয়া সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন। তাতে পিটিআইকে পার্লামেন্টের সংরক্ষিত আসন দেওয়ার বৈধতা আছে বলে জানানো হয়। এ প্রসঙ্গে তারার বলেন, পিটিআই কোনো দল নয়। এর সদস্যরা বলতে পারেন না যে, তারা এর অংশ। সবাই সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের এফিডেভিট জমা দিয়েছেন। কিন্তু তাদের মেনিফেস্টোতে বলা হয়েছে, কোনো অমুসলিম সদস্য এই দলে যোগ দিতে পারবেন না। ফলে তারা কোনো আসন পাবেন না।’
প্রসঙ্গত, ইমরান খান ১৯৯৬ সালে গঠন করেন পিটিআই। এরপর ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে হেরে তিনি ক্ষমতা হারান। বর্তমানে তিনি দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগে কারাগারে আছেন। এরই মধ্যে তার স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গে বিয়ের ইদ্দত মামলায় ইমরান খান ও বুশরাকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। বিচারক এ কথাও বলে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকলে মুক্তিতে কোনো বাধা নেই। অবশ্য তখন ইমরানের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা ছিল না। কিন্তু তিনি জেল থেকে বের হওয়ার আগেই নতুন আরেকটি মামলা হয়। গ্রেফতার দেখানো হয় ইমরানকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।