আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এসব ছবিতে একই সময়ে ইরান ও তুরস্কের সীমান্তবর্তী এলাকার বৈসাদৃশ্যপূর্ণ আবহাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। ছবিতে দেখা যায়, তুরস্কের আকাশে মেঘ এবং পাহাড়ের চূড়ায় বরফ থাকলেও সীমান্তের অপর প্রান্তে ইরানে আকাশ শুষ্ক এবং পাহাড়ের চূড়ায় বরফ বলতে কিছু নেই। এরপরই আলোচনায় আসতে থাকে তুরস্কের মেঘ চুরির ঘটনা।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দুই প্রতিবেশী দেশের আকাশে আবহাওয়ার এমন বড় তারতম্য চোখে পড়ার পর বিভিন্ন প্রশ্ন জাগে ইরানিদের মনে। কেউ কেউ বলছেন, কোনো একটি উপায়ে ইরানের আকাশসীমা থেকে মেঘের সারি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। যুক্তি দাঁড় করিয়ে অনেকে বলছেন, কোনো একটি প্রযুক্তির সাহায্যে আবহাওয়াকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে ইরানের আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘমালাকে নিজেদের আকাশে সরিয়ে নিচ্ছে তুরস্ক। মার্কিন ম্যাগাজিন ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে এমনটা উঠে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের মেইনের কলবি কলেজের বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানী জেমস ফ্লেমিং জানান, এ ধরনের ধারণার সবচেয়ে খারাপ প্রভাব হলো মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করবে যে প্রতিবেশী দেশ তাদের আকাশ থেকে বৃষ্টি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে অথবা তাদের বিরুদ্ধে কোনো পরিবেশগত যুদ্ধ পরিচালনা করছে। আসল কথা হলো মেঘ কখনোই একই স্থানে স্থির হয়ে থাকে না। তারা একটি ক্ষণস্থায়ী সত্তা যা গতিশীল পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে তীব্র খরা চলছে। বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে। ফলে বিভিন্ন দেশ আকাশে ভেসে থাকা মেঘ থেকে যতটা সম্ভব পানি সংরক্ষণ করার বিকল্প পদ্ধতি অনুসন্ধান করছে। ইরান, তুরস্ক, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইতোমধ্যেই আবহাওয়া পরিবর্তনের বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। শঙ্কা রয়েছে, এসব প্রকল্প মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজিত করে তুলতে পারে।
মেঘ চুরির এমন ঘটনা ইরানের জন্য এবারই প্রথম নয়। এর আগেও তেহরানের বিরুদ্ধে আবহাওয়া নিয়ে চক্রান্ত করছে বেশ কয়েকটি দেশ। ২০১৮ সালে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর এক সিনিয়র সদস্য ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরতের বিরুদ্ধে দেশটির জলবায়ুতে হস্তক্ষেপ এবং মেঘ ও তুষার চুরির অভিযোগ তুলেছিল। একই ধরনের অভিযোগ তুলেছিলেন ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ। যদিও খোদ ইরানের আবহাওয়া দপ্তর এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছিল।
সম্প্রতি আবারও তুরস্ককে অভিযুক্ত করে সামনে আসতে শুরু করেছে মেঘ চুরির এসব জল্পনা-কল্পনা। গত মাসে ইরানের এক শীর্ষ পরিবেশ কর্মকর্তা জানান, দেশটির উত্তরাঞ্চলের আবহাওয়া কেন এতটা বিরূপ আচরণ করছে তা জানতে একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।