আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার পর দেশটির সরকার পরিবর্তনের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার (২২ জুন) ট্রাম্প এক পোস্টে লিখেছেন, “সরকার পরিবর্তন টার্মটার ব্যবহার রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়। কিন্তু যদি ইরানের বর্তমান সরকার ইরানকে আবার মহান করতে অক্ষম হয়, তাহলে কেন সেখানে সরকার পরিবর্তন হবে না?” খবর বিবিসি বাংলা
তবে এর আগে, একই দিন সকালে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটে হেগসেথ স্পষ্ট করে বলেন, “”যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানটি সরকার পরিবর্তনের বিষয়ে ছিল না। আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির শেষ দেখতে চেয়েছি।”
এই বক্তব্যগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইরান ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানে একধরনের দ্বিধা রয়েছে। সরকার পরিবর্তনের বিষয়টি রিপাবলিকান দলীয় রাজনীতিতেও এক বিতর্কিত প্রসঙ্গ।
২০০৩ সালে সর্বশেষ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ‘সরকার পরিবর্তন’ নীতিকে সামনে রেখে ইরাকে হামলা চালান, যেখানে মানব বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগ শেষ পর্যন্ত মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ওই যুদ্ধ ও তার পরিণতি নিয়ে এখনো মার্কিন রাজনীতিতে বিতর্ক রয়েছে।
সরকার পরিবর্তন ও মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকানদের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া নিয়ে রিপাবলিকানদের বড় অংশের মধ্যেই আপত্তি আছে। ট্রাম্প নিজেও বুশ যুগের যুদ্ধবিরোধী মনোভাবকে কাজে লাগিয়েছিলেন।
সব মিলিয়ে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা শুধুমাত্র দেশটির পররাষ্ট্রনীতির ইস্যু নয় বরং এর মাধ্যমে ট্রাম্পকে তার অভ্যন্তরীণ হিসেব নিকেশের ভারসাম্য করতে হয়েছে।
এদিকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়া নিয়ে জাতিসংঘ কূটনীতিকদের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে গত কয়েক ঘণ্টা। চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তান অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইয়েদ ইরাভানি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভুয়া অজুহাতে হামলা চালিয়েছে।
চীন ও রাশিয়াও আমেরিকার সমালোচনা করেছে। চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেছেন, বেইজিং ইরানে আমেরিকার হামলার তীব্র নিন্দা করছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দিয়েছে এবং ‘ওয়াশিংটন মোটেই কূটনীতিতে আগ্রহী নয়’। এছাড়াও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আরেকটি ধ্বংস চক্রের অবসানের আহবান জানিয়েছে।
এদিকে ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইরান সেন্ট্রাল ইসরায়েলসহ কয়েকটি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, আর ইসরায়েল হামলা করেছে তেহরানসহ ইরানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়।
পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৯ ডলার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের জন্য বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।